Advertisement
E-Paper

সরকারি বিধি না মেনেই যানশাসন, জরিমানা করছেন সিভিক ভলান্টিয়ার!

কিন্তু মঙ্গলবার দেখা গেল ভিন্ন ছবি। এ দিন জেলা জুড়ে ট্রাফিক পুলিশ বিশেষ অভিযানে নেমেছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:৫৭
নেই এস আই। যান শাসনে জরিমানা করছেন সিভিক ভলান্টিয়ার।

নেই এস আই। যান শাসনে জরিমানা করছেন সিভিক ভলান্টিয়ার।

রাস্তায় গাড়ি চেকিংয়ের নামে যথেচ্ছভাবে জরিমানা আদায় করা হচ্ছে। যানচালক থেকে যাত্রীদের সেই হয়রানি ও হেনস্থা নিয়ে পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

গত বছর অগস্ট মাসে দিঘায় প্রশাসনিক বৈঠকে যান শাসনে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন সবকিছু নিয়ম মেনে গাড়ি পরীক্ষা করতে হবে। যাত্রীদের অযথা হয়রানি করা যাবে না। এই কাজে সিভিক ভলান্টিয়ারদের ব্যবহার করা যাবে না। মুখ্যমন্ত্রীর এমন নির্দেশের পরে নড়েচড়ে বসে রাজ্য পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা-সহ রাজ্যের সমস্ত জেলাতেই গাড়ি পরীক্ষার জন্য একজন সাব-ইনস্পেক্টর পদ মর্যাদার অফিসারের উপস্থিতিতে অভিযান চালানোর নির্দেশিকা দেওয়া হয়। ওই নির্দেশিকা মেনে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন থানায় ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বে একজন সাব-ইনস্পেক্টরকে নিযুক্ত করা হয়। এ ছাড়াও অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর সহ পুলিশ কর্মীদের ওই কাজে যুক্ত করা হয়েছে।

কিন্তু মঙ্গলবার দেখা গেল ভিন্ন ছবি। এ দিন জেলা জুড়ে ট্রাফিক পুলিশ বিশেষ অভিযানে নেমেছিল। অথচ দেখা গেল কোনও সাব-ইনস্পেক্টর বা সেই পদমর্যাদার কোনও অফিসার নয়। খোদ জেলা সদর তমলুক শহরের হাসপাতাল মোড়ে গাড়ি ও মোটরসাইকেল পরীক্ষার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে সিভিক ভলান্টিয়ারদের। কেউ যানবিধি ভাঙলে জরিমানাও করছেন ওই সিভিক ভলান্টিয়াররা। যা মনে করিয়ে দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের আগের চেনা ছবিটাই।

এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শহরের অন্যতম জনবহুল এলাকা হাসপাতাল মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের অভিযানের সময় হেলমেটহীন মোটরসাইকেল চালক ও বিভিন্ন গাড়ি চালকদের আটকে ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা করা চলছিল। অভিযানের সময় হেলমেট এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স সঙ্গে না থাকা চালকদের জরিমানা করা হচ্ছিল। কিন্তু অভিযানের সময় নিয়ম ভাঙার অভিযোগে ধরা পড়া মোটর সাইকেল ও গাড়ি চালকদের বিরুদ্ধে জরিমানা সংক্রান্ত নথিপত্র লেখার কাজ করছিলেন সিভিক ভলান্টিয়াররাই। তবে ওই নথিতে একজন সাব-ইনস্পেক্টরের স্বাক্ষর দেওয়া ছিল। পাশে দাঁড়িয়ে পুরো বিষয়টি দেখভাল করতে দেখা গেল একজন ট্র্যাফিক পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টরকে।

যান শাসনের অভিযানে এভাবে নিয়ম ভেঙে পুলিশের অভিযান চলে প্রায় বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। রাজ্য পুলিশের নির্দেশিকা না মেনে এ ভাবে গাড়ি পরীক্ষার ঘটনা জেলা পুলিশের নজরে আনার পরেই নড়েচড়ে বসেন জেলার ট্রাফিক পুলিশের কর্তারা।

এদিন ট্রাফিক পুলিশের আচমকা অভিযানে ধরা পড়া মোটরসাইলে চালক নবকুমার বালা, সৌমিত্র বর্মনদের জরিমানা করা হয় হেলমেট না পরার অভিযোগে। নবকুমার ও সৌমিত্র বলেন, ‘‘হেলমেট না পরায় আমাদের জরিমানা করা হয়েছে। কিন্তু ট্রাফিক পুলিশের নামে সিভিক ভলান্টিয়াররা জরিমানার কাগজপত্র লিখে দিচ্ছেন। এটা তো বেআইনি।’’ সামনেই মাধ্যমিক পরীক্ষা। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই চাপ বাড়বে গাড়ির। গাড়ি পরীক্ষার বিশেষ অভিযানের দিনেই সরকারি বিধি ভঙ্গের এমন ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছে জেলা ট্রাফিক পুলিশ। জেলা ট্রাফিক পুলিশের আধিকারিক (ডিএসপি ট্রাফিক) প্রদীপ মণ্ডলের অবশ্য দাবি, ‘‘এদিন ওই অভিযানের সময় একজন সাব-ইনস্পেক্টর ছিলেন। তবে নথিপত্র লেখার কাজে সিভিক ভলান্টিয়ারদের ব্যবহার করা হয়েছে কিনা খোঁজ নিচ্ছি।’’

এই বিষয়ে জেলার পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

Civic Volunteer Traffic Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy