Advertisement
E-Paper

মহরমের মিছিলে সৌহার্দ্য

বৃষ্টিভেজা সকাল। ভিজে ভিজেই এগোচ্ছে মহরমের মিছিল। সঙ্গে তাজিয়া।গোলকুয়াচকে মিছিল পৌঁছতেই এগিয়ে এলেন  স্থানীয় দুর্গাপুজো কমিটির কর্মকর্তারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:১৫
মেদিনীপুরে মিছিলে সম্প্রীতির বার্তা। নিজস্ব চিত্র

মেদিনীপুরে মিছিলে সম্প্রীতির বার্তা। নিজস্ব চিত্র

বৃষ্টিভেজা সকাল। ভিজে ভিজেই এগোচ্ছে মহরমের মিছিল। সঙ্গে তাজিয়া।গোলকুয়াচকে মিছিল পৌঁছতেই এগিয়ে এলেন স্থানীয় দুর্গাপুজো কমিটির কর্মকর্তারা। ফুলের তোড়া দিয়ে, উত্তরীয় পরিয়ে তাঁরা বরণ করে নিলেন মহরমের মহল্লা কমিটির প্রধানদের। হল মিষ্টিমুখও। বৃষ্টি মাথায় নিয়েই পুজো কমিটির তরফে দীপঙ্কর ষণ্ণিগ্রাহী, গৌতম দাসরা মহরমের মিছিলে শামিল সকলের হাতে তুলে দিলেন লস্যির গ্লাস। গৌতম, দীপঙ্করদের বুকে টেনে নিলেন আনোয়ার আলি খান, শেখ রাহুলরা।

শুক্রবার মহরমের সকালে এমনই সম্প্রীতির দৃশ্যের সাক্ষী রইল শহর মেদিনীপুরের গোলকুয়াচক। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মহরমের মিছিলের পুরোভাগে স্বামী বিবেকানন্দ, মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর সাজে হাঁটতে দেখা গিয়েছে খুদেদেরও। স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবসের শোভাযাত্রায় এমন দৃশ্য চেনা। তবে মহরমের মিছিলে খুদে বিবেকানন্দ, গাঁধীকে সাম্প্রতিক অতীতে দেখেনি মেদিনীপুর। মেদিনীপুর আলম কমিটির কার্যকরী সভাপতি রাজেশ হোসেন বলছিলেন, “সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিই যে এই শহরের মূলধন, সেটা এ দিন ফের সামনে এসেছে। ধর্মান্ধতা যখন নানা দিক গ্রাস করছে, তখন বিবেকানন্দ, গাঁধীর সহিষ্ণুতার শিক্ষাই তো আমাদের আশ্রয়।’’

মহরমের মহল্লা কমিটির প্রধানদের যে উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করা হয়েছে, তাতেও লেখা ছিল — ‘একতাই সম্প্রীতি’। গোলকুয়াচক সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির অন্যতম কর্তা দীপঙ্কর ষণ্ণিগ্রাহী বলছিলেন, “দুর্গাপুজো হোক বা মহরম, আমরা সকলে সকলের পাশে দাঁড়াই। ধর্মের কোনও ভেদাভেদ থাকে না। এটাই আমাদের শহর।”

গোলকুয়াচকে সব উৎসবেই সম্প্রীতির ছবি দেখা যায়। ইদের লাচ্চা, সেমাই যেমন হিন্দুর ঘরে পৌঁছয়, তেমনই দুর্গাপুজোর অন্নভোগ যায় মুসলিমের ঘরে। শেখ মোমিন, শেখ শামজানরা বলছিলেন, “দুর্গাপুজো হিন্দুদের উৎসব আর মহরম শুধু মুসলিমদের, আমরা তা মনে করি না। আমরা যেমন দুর্গাপুজোর হুল্লোড়ে মাতি, আমাদের হিন্দু বন্ধুরাও মহরমে শামিল হয়।”

তুমুল বৃষ্টির মধ্যেও মহরমের তাজিয়া দেখতে এ দিন গোলকুয়াচকে ভিড় জমেছিল। বসেছিল মেলা। তবে সে সব ছাপিয়ে নজরে পড়েছে দুর্গাপুজো কমিটি ও মহরম কমিটির সদস্যদের সম্প্রীতি আর সৌহার্দ্যের ছবি। মহরম কমিটি কর্তা আনোয়ার আলি খানের কথায়, “পুজো কমিটির আন্তরিকতায় আমরা মুগ্ধ। ফের উপলব্ধি করলাম মিলেমিশে থাকাটা খুব দরকার।”

Muharram Communal Harmony Midnapur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy