Advertisement
E-Paper

‘শান্তি’র ভোটে চোরা সন্ত্রাসের অভিযোগ

পুরভোটের ফল প্রকাশের আগেই জিতে রয়েছেন কাঁথির দুই তৃণমূল প্রার্থী দিব্যেন্দু অধিকারী ও সৌমেন্দু অধিকারী। ভোটের আগে শাসকদল জানিয়েছিল, নির্বিঘ্নে মিটবে ভোট-পর্ব। সেই ছক মেনেই শান্তিতেই মিটল কাঁথি ও এগরার পুরভোট। ভোটের পর তৃণমূলের দাবি, উ়ৎসবের আমেজে ভোট দিয়েছেন বাসিন্দারা। তবে বিরোধীদের অভিযোগ, শাসকদল আগে থেকে দুষ্কৃতীদের জড়ো করে চাপা সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করেছিল। তাই প্রকাশ্যে সন্ত্রাসের ছবি দেখা না গেলেও মানুষের মনে আতঙ্কের চোরাস্রোত ছিল।

সুব্রত গুহ ও কৌশিক মিশ্র

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৫ ০১:১৫

পুরভোটের ফল প্রকাশের আগেই জিতে রয়েছেন কাঁথির দুই তৃণমূল প্রার্থী দিব্যেন্দু অধিকারী ও সৌমেন্দু অধিকারী। ভোটের আগে শাসকদল জানিয়েছিল, নির্বিঘ্নে মিটবে ভোট-পর্ব। সেই ছক মেনেই শান্তিতেই মিটল কাঁথি ও এগরার পুরভোট। ভোটের পর তৃণমূলের দাবি, উ়ৎসবের আমেজে ভোট দিয়েছেন বাসিন্দারা। তবে বিরোধীদের অভিযোগ, শাসকদল আগে থেকে দুষ্কৃতীদের জড়ো করে চাপা সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করেছিল। তাই প্রকাশ্যে সন্ত্রাসের ছবি দেখা না গেলেও মানুষের মনে আতঙ্কের চোরাস্রোত ছিল।

কাঁথি পুরসভার ২১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৭ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের দুই প্রার্থী বিধায়ক দিব্যেন্দু অধিকারী ও পুরধান সৌমেন্দু অধিকারী বিনা প্রতিদ্বন্বিতায় জয়ী হয়ে গিয়েছেন আগেই। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাকি ১৯টি ওয়ার্ডের পুরভোটে প্রদত্ত ভোটের হার ৮৪.০৫ শতাংশ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে। এখানে ভোট পড়েছে ৯৩.৬৮ শতাংশ। সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে পুরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ডে। সেখানে প্রদত্ত ভোটের হার ৭৪.৩৫ শতাংশ।

কাঁথিতে পুরভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে মানছে বিজেপিও। দলের জেলা সম্পাদক ও কাঁথি পুরভোটের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সোমনাথ রায়ের অভিযোগ, “কাঁথিতে শান্তিতে ভোট শেষ হলেও এর পিছনে চাপা ভয়ভীতি কাজ করেছে।’’ সিপিএমের কাঁথি জোনাল সম্পাদক হরপ্রসাদ ত্রিপাঠীর অভিযোগ, “সাধারণ মানুষকে তৃণমূলের পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য প্রভাবিত করতে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে বুথ কেন্দ্রে দলের পক্ষ থেকে নির্ধারিত রিকশা, ছোট গাড়ি করে নিয়ে আসা হয়। অবশ্য এই সব যান বাহনগুলিতে কোনও দলীয় পতাকা ব্যবহৃত না হওয়ায় কোনও অভিযোগ জানানো যায় নি।’’

বিরোধী দলের দুই নেতার যাবতীয় অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন কাঁথির সাংসদ ও তৃণমূলের জেলা সভাপতি শিশির অধিকারী। রবিবার দুপুরে দিল্লি যাওয়ার আগে শিশিরবাবু বলেন, “কাঁথির ঐতিহ্য মেনে নির্বিঘ্নে ও শান্তিতেই ভোট দিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। ২৮ তারিখেই বিরোধীদের যাবতীয় অভিযোগের জবাব কাঁথির মানুষ ব্যালটের মাধ্যমে দেবেন।’’

রাজ্যে যেখানে অনেক এলাকাতেই ভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলছে বিরোধীরা, সেখানে এগরার বিরোধীদের এ বিষয়ে কোনও অভিযোগই শোনা গেল না। পুরবাসিন্দারা এলাকায় শান্তি বজায় রাখার জন্য কৃতিত্ব দিয়েছেন এগরা মহকুমা প্রশাসন ও এগরার পুলিশদের। এগরার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী অম্বিকেশ দাসও এক বাক্যে স্বীকার করেন, ‘‘মহকুমাশাসক প্রথম থেকে নিরপেক্ষ ও কড়া হাতে সবটাই পরিচালনা করায় এ ভাবে ভোট সম্ভব হয়েছে। এড়ানো গিয়েছে রক্তপাত।’’ তবে বিক্ষিপ্ত কয়েকটি অঘটন যে ঘটেনি, তা কিন্তু নয়। এগরা পুরভোটে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী ও গত পুরবোর্ডে একমাত্র কংগ্রেস প্রতিনিধি আল্পনা পট্টনায়কের অভিযোগ, ‘‘এই ওয়ার্ডে তৃণমূলের পক্ষে বুথ জ্যাম করে সমস্যা তৈরি করার চেষ্টা করেছিল ওরা। তবে পুলিশ ও প্রশাসন দ্রুত পরিস্থিতির মোকাবিলা করে।’’

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরভোটে এ বার ওয়ার্ডগুলিকে পাঁচটি সেক্টরে ও সেক্টরগুলিকে সিভিল ম্যাজিস্ট্রেটদের দিয়ে নজর রেখেছিল প্রশাসন। এঁদের নজরদারিতে ছিলেন চার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট।স বার ওপর রিটার্নিং অফিসার হয়ে সেনাপতির মতো পুরভোট পরিচালনা করেন মহকুমাশাসক অসীমকুমার বিশ্বাস নিজে। এগরা মহকুমায় ভোটের হার ৯০.১ শতাংশ। ভোট নির্বিঘ্নে মিটে যাওয়ায় খুশি মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সমীর বসাক। তাঁর কথায়, ‘‘পুলিশ আগের দিন সারা রাত কাজ করেছে। ভোটের দিনেও আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। এই সাফল্য সমস্ত পুলিশ বাহিনীর।’’ আর মহকুমাশাসক অসীমকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘‘এই সাফল্য শুধুমাত্র আমাদের নয়, এগরা পুরবাসীরও। এখানকার মানুষ আসলে শান্তিপ্রিয়। ওঁদের সহযোগিতা ছাড়া এটা সম্ভব ছিল না।’’

Municipal election Contai Egra Trinamool TMC Cpm Congress Bjp Mamata bandopadhyay Clash Vandalism Subrata guha Koushik Mishra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy