চাল-ডাল দিলেই মিলবে সই! কখনও আবার পকেটে গুঁজে দিতে হবে নগদ টাকাও!
চন্দ্রকোনার এক প়ঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে বিডিও’র কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। তাঁর অভিযোগ, চাল, ডাল বা টাকা না দিলে নথিতে সই না করার হুমকি দেন ওই পঞ্চায়েত সদস্য। ওই পঞ্চায়েত সদস্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। চন্দ্রকোনা-২ব্লকের বিডিও শাশ্বতপ্রকাশ লাহিড়ী বলেন, “আমি একটি অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার তদন্তও শুরু হয়েছে।”
চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের বসনছড়া পঞ্চায়েতের ছত্রগঞ্জে কয়েকবছর আগে থেকেই চলছে একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। এখানে প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা দেওয়া হয়। পাশাপাশি গর্ভবতী মায়েদের পুষ্টি ও নানা টিকাকরণের বিষয়টিও দেখভাল করা হয় ওই কেন্দ্র থেকে। নিয়ম অনুযায়ী, কেন্দ্রটি ঠিকঠাক চলছে কি না, তার জন্য একটি কমিটি থাকে। সেই কমিটির অন্যতম সদস্য হলেন স্থানীয় জন প্রতিনিধি। প্রতি মাসেই চাল, ডাল ছাড়াও আনাজ কিংবা ডিম-সহ অন্য প্রয়োজনীয় জিনিস গুলি সংশ্লিষ্ট অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মীরাই বাজার থেকে কিনে আনেন। প্রতি মাসেই খরচের সমস্ত প্রামাণ্য নথি জমা দিতে হয় স্থানীয় সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিকের দফতরে। সেই নথিতে সই করেন এলাকার জন প্রতিনিধি। সরকারি নির্দেশ না থাকলেও স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এবং স্থানীয় সমস্যা এড়াতেই এই প্রথাই চালু রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী স্নিগ্ধা ঘোষের (পান) অভিযোগ, বসনছড়া পঞ্চায়েতের তৃণমূল সমর্থিত নির্দল সদস্য শেখ সিরাজুল হোসেন মাঝে মধ্যেই নানা আবদার করেন। অভিযোগ, কখনও তিনি চান চাল, কখনওবা চাল। এমনকী, বহু ক্ষেত্রে সিরাজুল টাকাও চান বলে অভিযোগ। স্নিগ্ধাদেবীর বক্তব্য, “চাল, ডাল না-দিলে সই না করার হুমকি দেন সিরাজুল। আমি দিতে অস্বীকার করলেই জোটে গালিগালাজ।” তিনি আরও বলেন, “ক’দিন আগেই আমি ওঁর (সিরাজুল) কাছে সই করাতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি সই করেননি। নগদ দু’হাজার না দিলে সই করবেন না বলে জানিয়ে দেন। বারবার গিয়েও সই না মেলায় আমি বিষয়টি বিডিও কে জানিয়েছে।” যদিও অভিযোগ মানতে চাননি সিরাজুলবাবু। তিনি বলেন, “বিডিও তদন্ত করলেই পরিষ্কার হবে। কেন্দ্রটি যাতে ঠিকঠাক চলে, আমি কড়া নজর রাখি। তাই আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে বদনাম করা হচ্ছে।’’ বসনছড়া পঞ্চায়েতের প্রধান পরিতোষ কোলে জানান, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। এমনকী, এ সম্পর্কে খতিয়ে দেখার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। গত মঙ্গলবার লিখিত ভাবে বিডিওর কাছে নালিশ জানিয়েছেন স্নিগ্ধাদেবী। বুধবার বিষয়টি জানাজানি হতেই স্থানীয়েরা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে আসেন। স্নিগ্ধাদেবীর পাশে থাকার আশ্বাস দেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy