প্রতীকী ছবি।
দু’দিন আগে দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন তিনি। ছোট আর একটি অস্ত্রোপচারের পরে সেই প্রসূতিই মারা গেলেন শনিবার সন্ধ্যায়। চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে দেবশ্রী দোলই (২৫) নামে ওই প্রসূতির মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তোলেন পরিজনেরা। শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত তাঁরা হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান, ভাঙচুরের চেষ্টাও চলে। পরে পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যথাযথ তদন্তের আশ্বাস দিলে রাত তিনটে নাগাদ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
মৃতার স্বামী রাধাকিশোর দোলইয়ের অভিযোগ, “চিকিৎসকের গাফিলতিতেই স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে।” অভিযোগে গুরুত্ব দিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরও। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা
বলেন, “চন্দ্রকোনা হাসপাতালে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে। চিকিৎসকের গাফিলতি ছিল কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
চন্দ্রকোনা থানার বান্দিপুর পঞ্চায়েতের পলাশা গ্রামের বাসিন্দা দেবশ্রী গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে আসার পথে গাড়িতেই তিনি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছিল। ওই প্রসূতিকে তাই চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসাও চলছিল। এর পর পরিজনেদের অনুমতি নিয়েই দেবশ্রীর আর একটি ছোট অস্ত্রোপচার করা হয় শনিবার। হাসপাতাল সুপার গোপাল দে নিজে সেই অস্ত্রোপচার করেন। অভিযোগ, অস্ত্রোপচারের ঘন্টাখানেক পরই মৃত্যু হয় দেবশ্রীর। মৃতার স্বামী রাধাকিশোরবাবুর বলেন, “অস্ত্রোপচারের পরে ডাক্তারবাবু আমাদের জানান। ভিতরে গিয়ে দেখি স্ত্রী ছটফট করছে। কারণ জানতে চাইলে, ‘অস্ত্রোপচারের পরে এমন হয়’ বলে জানান ডাক্তারবাবু। এর কিছুক্ষণ পরই মারা যায় দেবশ্রী।”
খবর ছড়াতেই মৃতার পরিজনেরা হাসপাতাল চত্বরে ভিড় জমান। অভিযুক্ত চিকিৎসককে গ্রেফতারের দাবিতে রাতেই শুরু হয় বিক্ষোভ। হাসপাতালের মূল ফটকে বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশকে দেহ তুলতেও বাধা দেওয়া হয়। তবে অভিযুক্ত চিকিৎসক গোপাল দে-র দাবি, “অস্ত্রোপচারে ত্রুটি ছিল না। হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েই ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে।” হাসপাতালের আর একটি সূত্রের খবর, দেবশ্রীর রক্তাল্পতা ছিল। জ্বর, সর্দি-কাশির উপসর্গও ছিল।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পাশাপাশি পুলিশও ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy