E-Paper

জলাতঙ্কের প্রতিষেধক পেতে হয়রানি সুপার স্পেশালিটিতে

সরকারি হাসপাতালে প্রতিষেধ বিনামূল্যে মিললেও অভিযোগ উঠছে, এক সঙ্গে অনেক রোগী না এলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের প্রতিষেধক দিচ্ছেন না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১০:১২
অভিযোগ উঠছে, এক সঙ্গে অনেক রোগী না এলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের প্রতিষেধক দিচ্ছেন না।

অভিযোগ উঠছে, এক সঙ্গে অনেক রোগী না এলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের প্রতিষেধক দিচ্ছেন না। —প্রতীকী চিত্র।

জলাতঙ্ক (র‌্যাবিস) রোগের প্রতিষেক নিতে নিত্যদিনই রোগী আসেন পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। সরকারি হাসপাতালে এই প্রতিষেধ বিনামূল্যে মিললেও অভিযোগ উঠছে, এক সঙ্গে অনেক রোগী না এলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের প্রতিষেধক দিচ্ছেন না। অনেক ক্ষেত্রে রোগীকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রেখেও ফিরিয়েও দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি।

কুকুর, বেড়াল ইত্যাদি প্রাণীর কামড়, আঁচড় খেলে র‌্যাবিসের প্রতিষেধক নিতে হয়। সরকারি হাসপাতালগুলিতে যে প্রতিষেধক দেওয়া হয়, সেগুলির একটি ‘ভায়েল’ থেকে ন্যূনতম পাঁচজনকে টিকা দেওয়া যায়। পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে জরুরি বিভাগের সামনে এই প্রতিষেধক দেওয়া হয়। হাসপাতালের ঘোষণা অনুযায়ী, প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হওয়ার কথা সকাল ৯টা থেকে। তবে রোগীদের অভিযোগ, নির্ধারিত সময়ের পরে প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হয়। কখনও কখনও বেশি সংখ্যক রোগী না আসা পর্যন্ত প্রতিষেধকই দেওয়া হয় না। ফলে বহু রোগী হাসপাতাল থেকে ফিরে যেতে হয়। কখনও আবার নার্স পর্যাপ্ত নেই দাবি করেও হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষ আক্রান্তদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাসপাতালে বসিয়ে রাখেন।

পরিসংখ্যান বলছে কম বয়সীদের মধ্যে কুকুর, বেড়াল ইত্যাদি প্রাণীর কামড়ের ঘটনা বেশি ঘটে। তাই হাসপাতালে স্কুল পড়ুয়াদের রোগীদের ভিড় বেশিই হয়। অভিযোগ, দেরি করানোর জন্য পড়ুয়াদেরও অনেক সময় স্কুল কামাই হয়।

পাঁশকুড়ার রাতুলিয়ার এক অভিভাবক বলেন, ‘‘গত মাসে আমার ছেলেকে কুকুর কামড়ে দেয়। পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে যাই। বেশি রোগী না আসায় ওই দিন আমাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরের দিন আবার যেত হয়।’’ মঙ্গলবারই হাসপাতালে র‌্যাবিসের চতুর্থ ডোজ় নিতে যান পাঁশকুড়ার এক স্কুলছাত্রী। ওই ছাত্রীর কথায়, ‘‘একজন নার্স বলেন বেশি জন না এলে প্রতিষেধক দেওয়া হবে না। স্কুল যেতে হবে বলার পরও প্রতিষেধক দেননি। একঘণ্টা পর আমার বাবা পাঁশকুড়ার বিএমওএইচকে ফোন করলে প্রতিষেধক পাই। নার্সরা প্রচণ্ড দুর্ব্যবহার করেন।’’

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর র‌্যাবিসপ্রতিষেধকের একটি ‘ভায়েল’ খোলার পরও আট থেকে ২০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় সেটিকে ছ’থেকে আট ঘণ্টা ব্যবহার করা যায়। তাহলে বেশি সংখ্যক রোগীর না আসার দোহাই দিয়ে কেন রোগীদের র‌্যাবিসের প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছে না? উঠছে প্রশ্ন। চিকিৎসকদের একটি সূত্রের খবর, ‘ওয়েস্টেজ ফ্যাক্টর’ অর্থাৎ কিছু পরিমাণ প্রতিষেধক অব্যবহৃত থেক যাবে, সেই হিসেব কষেই স্বাস্থ্য দফতর হাসপাতালগুলিতে র‌্যাবিসের প্রতিষেধক পাঠায়। এরপরও কেন রোগীদের প্রতিষেধক দিতে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের এত অনীহা?

এ ব্যাপারে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস রায় বলেন, ‘‘র‌্যাবিসের প্রতিষেধকের জোগান কম থাকে। তাই বলে হাসপাতাল কাউকে ফিরিয়ে দিতে পারে না। প্রয়োজনে একজনের জন্যও প্রতিষেধকের ভয়েল খুলতে হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করার জন্য বলব।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Vaccine Dog

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy