E-Paper

সমর্থন সুফিয়ানের জামাইকে, চিঠি ফাঁস

হাবিবুল নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ানের জামাই। পঞ্চায়েত ভোটের আগে তাঁর সঙ্গে বিরোধী দলের বোঝাপড়া হয়েছিল বলে জল্পনা ছড়ায়। মেঘনাদের চিঠি সামনে আসার পরে কার্যত সেই তত্ত্বে সিলমোহর পড়ল বলে দাবি তৃণমূলের একাংশের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২৩ ০৯:৪৬
ফাঁস হওয়া চিঠি।

ফাঁস হওয়া চিঠি। — নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূল-বিজেপি সমঝোতা! পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনে জেলায় সবুজ এবং গেরুয়া শিবিরের হাত ধরাধরির ঘটনা অল্পবিস্তর সামনে এসেছে। কিন্তু ওই সমঝোতার জন্য নন্দীগ্রামের মতো এলাকায় জেলা নেতৃত্বের তরফে যে রীতিমতো হুইপ জারি করা হয়েছিল, সেই তথ্য প্রকাশ পেতেই বিতর্ক শুরু।

বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের মহম্মদপুর পঞ্চায়েত বিজেপির ছ’জন সদস্যের সমর্থন নিয়ে প্রধান নির্বাচিত হন তৃণমূল নেতা শেখ হাবিবুল রহমান। শুক্রবারই বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার প্যাডে সম্পাদক মেঘনাদ পালের একটি চিঠি (যার সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি) সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। চিঠিতে মেঘনাদ মহম্মদপুর পঞ্চায়েতে জয়ী ছ’জন বিজেপি প্রার্থীদের নির্দেশ দিয়েছেন যে তৃণমূলের প্রতীকে জয়ী হাবিবুলকেই যেন প্রধান পদে জিততে ভোট দেওয়া হয়।

হাবিবুল নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ানের জামাই। পঞ্চায়েত ভোটের আগে তাঁর সঙ্গে বিরোধী দলের বোঝাপড়া হয়েছিল বলে জল্পনা ছড়ায়। মেঘনাদের চিঠি সামনে আসার পরে কার্যত সেই তত্ত্বে সিলমোহর পড়ল বলে দাবি তৃণমূলের একাংশের। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মেঘনাদের দাবি ছিল, তৃণমূলের দলীয় প্রার্থীকে পরাজিত করতে তাঁদের কৌশলগত অবস্থান ছিল এটি। কিন্তু চিঠি সামনে আসার পরে তিনি বলছেন, ‘‘দল যে তাঁকে প্রধান পদ প্রার্থী করছে না, তা জানার পরই শেখ হাবিবুল রহমান আমাদের সঙ্গে দেখা করেন এবং সমর্থন চান। তাঁর সঙ্গে আমাদের স্থানীয় স্তরে বৈঠক হয়। এরপরই আমাদের স্থানীয় নেতৃত্ব তাঁকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নেয়।" তবে মেঘনাদের দাবি এই সমঝোতা রাজ্য স্তরের সিদ্ধান্ত নয়। এটা একেবারেই স্থানীয় স্তরের সিদ্ধান্ত। এ দিন কাঁথিতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে এ ব্যাপারে বলেন, ‘‘অফিসিয়াল প্যানেলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে যাঁরা লড়াই করেছেন, বিজেপি তাঁদের সমর্থন করেছে। আমাদের লক্ষ্য একটাই— নো ভোট টু মমতা।’’মহম্মদপুরে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয় তৃণমূল। অথচ বিক্ষুব্ধ সদস্য বিজেপির সমর্থনে বোর্ড গঠন করলেন। এর ফলে আগামীতে ওই পঞ্চায়েত বকলমে যে বিজেপি-ই চালাবে না, সেই শঙ্কা রয়েছে। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের দাবি, ‘‘ওটা যে তৃণমূলেরই বোর্ড, সেটা মানুষ বুঝবেন। আর মেঘনাদ পাল তৃণমূলে যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এই চিঠি ভাইরাল করে নিজের ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট দিচ্ছেন মেঘনাদ।’’ মহম্মদপুরের এই ঘটনার পরে নন্দীগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতি নিয়ে চিন্তা বাড়ছে। তৃণমূল এবং বিজেপি এখানে ১৫টি করে আসন পেয়েছে। ফলে একজনকে কেউ ভাঙিয়ে নিলেই বাজিমাত হবে। শুভেন্দু অধিকারীকেও এ ক্ষেত্রে ‘মালের দায়িত্ব আরোহীর’ মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে। শঙ্কিত তৃণমূল নেতৃত্ব ১৫ জন জয়ী সদস্যকে তড়িঘড়ি ব্লক অফিসে সরিয়ে এনেছেন। আগামী ১৪ অগস্ট বোর্ড গঠন পর্যন্ত তাঁরা সেখানেই থাকবেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Nandigram

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy