ভোটকেন্দ্রের সামনে লাইনে মহিলারা। —নিজস্ব চিত্র।
গণতন্ত্রের উৎসবে জেলায় জেলায় হিংসার ছবি। রাজনৈতিক সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে আহতের সংখ্যা। তবে জঙ্গলমহলে দেখা গেল অন্য ছবি। নতুন শাড়ি পরে ভোট দিতে গেলেন জঙ্গলমহলের মহিলারা। কেউ প্রথম বার ভোট দিলেন। কারও বিধানসভা ভোটের পর এটাই দ্বিতীয় ভোটদান। তাঁরা সবাই উৎসবের মেজাজেই ভোট দিলেন শনিবার।
জঙ্গলমহলে ভোট মানেই উৎসব। লালগড়ের একাধিক বুথে নতুন শাড়ি পরে মহিলাদের ভোটের লাইনে দাঁড়াতে দেখা গেল। বিরকার বুথের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ২১ বছরের মালতি হাঁসদা। পরনে নতুন শাড়ি। তিনি বলেন, ‘‘এই নিয়ে দ্বিতীয় বার ভোট দিচ্ছি। এর আগে বিধানসভা নির্বাচনে ভোট দিয়েছিলাম।’’ জানালেন সে বারও নতুন একটা শাড়ি পরেই ভোট দিয়েছিলেন। মা-কাকিমাদের দেখেছেন ভোটের আগে নতুন শাড়ি পরতে। তাই তিনিও সেই ‘রীতি’ মেনে আলমারি থেকে নতুন শাড়ি বার করেছেন। মালতি যে লাইনে দাঁড়িয়েছেন, সেই লাইনে আরও ১০-১২ জন মহিলা দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁদের প্রত্যেকের পরনে নতুন শাড়ি। খুড়কুর্মুরি গ্রামের বাসিন্দা সাবিত্রী মালের কথায়, ‘‘ভোটের দিনে নতুন শাড়ি পরব বলে কয়েক দিন আগেই কিনে রেখেছিলাম শাড়িটা।’’
নারচ্যা বুথে দেখা গেল তিন মাসের সন্তান কোলে নিয়ে দুই মহিলা ভোট দিতে আসছেন। তাঁরাও নতুন শাড়ি পরেছেন। লক্ষ্মী বেসরা নামে ওই মহিলা বলেন, ‘‘এটা নতুন শাড়ি। ভোট দিতে আসব বলেই শ্বশুরবাড়ি থেকে বাপের বাড়ি আসার সময় ৩০০ টাকা দিয়ে কিনেছি।’’ দলীলপুর এর বাসিন্দা সুকুমনি হাঁসদা বলেন, ‘‘ভোট দিতে আসব বলে নতুন শাড়ির পাড় ভাঙলাম।’’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, উৎসবে যেমন আনন্দ হয়, সে রকম ভাবেই ভোট দিতে যান পুরুষ-মহিলারা। ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরার সময় রাস্তার পাশের দোকান থেকে ঝালমুড়ি, কাঁচা ছোলা, চানাচুরের প্যাকেট কিনছেন। কয়েক বছর ধরে এটাই রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানান জঙ্গলমহলের রাজনৈতিক নেতারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy