Advertisement
০৮ মে ২০২৪
Mandarmani Hotel Construction

অনুমতি ছাড়াই সৈকতে বাড়ছে হোটেল সংখ্যা

নিয়ম অনুযায়ী, মন্দারমণি এবং সংলগ্ন কালিন্দী গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার পাঁচটি মৌজায় কোনওরকম নির্মাণ কাজ করার আগে কোস্টাল রেগুলেশন জোন অথরিটির ছাড়পত্র নিতে হয়।

এখনও গড়ে উঠছে হোটেল।

এখনও গড়ে উঠছে হোটেল। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মন্দারমণি শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৪ ০৯:০১
Share: Save:

জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র মন্দারমণির ভবিষ্যৎ ঘিরে কালো মেঘ জমছে। ২০১১ সালে রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পর হোটেল কিংবা লজ নির্মাণ করার জন্য কোনও অনুমতি দেয়নি রাজ্য সরকার। 'তথ্য জানার অধিকার’ আইনে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতর থেকে এই জবাব মিলেছে। তার পরেও মন্দারমণি এবং সংলগ্ন আরও চারটি মৌজায় উপকূলবর্তী এলাকায় অসংখ্য বহু তল হোটেল এবং লজ গজিয়ে উঠেছে এবং এখনও উঠছে বলে অভিযোগ।

গত ডিসেম্বর মাস থেকে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ, রামনগর-২ পঞ্চায়েত সমিতি, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ এবং রাজ্যের পৌর ও নগরোন্নয়ন দফতর তথ্য জানার অধিকার আইনে করা প্রশ্ন‌ের জবাবে জানিয়ে দেয়, ২০১১ সালের পর মন্দারমণি, দাদনপাত্রবাড়, সিলামপুর, সোনামুই এবং পুরুষোত্তমপুর মৌজায় কোনো স্থায়ী নির্মাণের অনুমতি সরকার দেয়নি। গত ডিসেম্বর মাসে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি বেআইনি নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নোটিস দিয়েছিল ভূমি দফতর। দু’- এক দিন নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিল। তারপর আবার রমরমরমিয়ে তা শুরু হয়েছে। কাঁথির মহকুমা শাসক শৌভিক ভট্টাচার্য বলেন,"পুলিশের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার কথা বলা হচ্ছে। যে সব হোটেল কিংবা লজের কোনওরকম কোন নথিপত্র নেই, তাদের ডেকে শুনানি করে হোটেল ভেঙে দেওয়া হবে। তবে যেহেতু লোকসভা নির্বাচন আসন্ন তাই নির্বাচন বিধি জারি হলে আপাতত ভাঙা যাবে না। পরে করতে হবে।"

নিয়ম অনুযায়ী, মন্দারমণি এবং সংলগ্ন কালিন্দী গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার পাঁচটি মৌজায় কোনওরকম নির্মাণ কাজ করার আগে কোস্টাল রেগুলেশন জোন অথরিটির ছাড়পত্র নিতে হয়। তার পর জমির কাগজপত্র-সহ প্রস্তাবিত বহুতল নির্মাণের নকশা এবং অনুমতি পাওয়ার জন্য আবেদন পত্র জমা দিতে হয়। একতলা বিশিষ্ট ১৫০ বর্গফুট আয়তন বিশিষ্ট বাড়ির অনুমতি দিতে পারেন স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। তার চেয়ে বড় কোনও নির্মাণ কাজ করতে গেলে জেলা পরিষদ, ডিএসডিএ এবং রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর থেকে অনুমতি নিতে হয়। সে সব কিছু না করেই বছরের পর বছর ধরে চলছে নির্মাণ কাজ। মন্দারমণি হোটেল মালিক সংগঠনের মুখ্য উপদেষ্টা সন্দীপন বিশ্বাস জানান," কী ভাবে এটা হচ্ছে সেটা প্রশাসন জানে। আমাদের কাছে যারা ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে সদস্য হতে আবেদন করেছেন তাঁদের সংস্থার সদস্য পদ দেওয়া হয়েছে।" পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক তনবীর আফজল বলেন,"বিষয়টি কাঁথির মহকুমাশাসককে দেখতে বলেছি।"

বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা বিধায়ক অরূপ দাস এ ব্যাপারে বলছেন,"তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের খুশি করতে পারলেই তাঁরা নিজেদের মতো নিয়ম তৈরি করে দেন। তাঁদের মদতেই মন্দারমণিতে বেআইনি নির্মাণ চলছে। যাঁরা তৃণমূলকে খুশি করতে পারেন না, প্রশাসন শুধু তাঁদেরই নির্মাণ ভেঙে দেয়।" অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরির মন্তব্য,"আদালত নির্দেশ দিয়েছে সমুদ্র থেকে ২০০ মিটার দূরের লজ নির্মাণ করা যেতে পারে।"

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mandarmani
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE