রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে খাস সরকারি কলেজের জমি বাজার মূল্যের থেকে কম দামে এক তৃণমূল নেতার শাশুড়িকে বিক্রির অভিযোগে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
এগরা সারদা শশীভূষণ কলেজের পরিচালন কমিটির সভাপতি তথা তৃণমূলের বিধায়ক তরুণ কুমার মাইতি এবং কলেজের অধ্যক্ষের সামনে বিষয়টি নিয়ে শুক্তবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ছাত্র ছাত্রীরা। তাঁদের একাংশ লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন মহকুমা শাসকের কাছেও।
এগরা সারদা শশীভূষণ কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মাথা তথা কলেজের চুক্তিভিত্তিক অশিক্ষিত কর্মচারী উদয়শঙ্কর পালের বিরুদ্ধেই উঠেছে অভিযোগ। গ্রন্থাগারের কর্মী হয়েও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি কলেজের মধ্যে শীততাপনিয়ন্ত্রিত ব্যক্তিগত অফিস তৈরি করেছেন বলেও এর আগে অভিযোগ উঠেছিল। বর্তমানে উদয় এগরা শহরতৃণমূলের সভাপতি।
পটাশপুর-এগরা রাজ্য সড়কের পাশে আকলাবাদ মৌজায় ৫০১ ও ৫৭৪ দাগে ওই কলেজের কিছু জমি রয়েছে। সেই জমি কয়েক বছর আগে বেদখল হয়ে গিয়েছিল। কলেজ কর্তৃপক্ষ তা পুনরুদ্ধার করেন। কলেজের উন্নয়নের জন্য অর্থ সংগ্রহে ওই জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গত ১৭ ডিসেম্বর এগরা কলেজে পরিচালন কমিটির বৈঠকে কমিটির সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক তরুণ কুমার মাইতি ও তৎকালীন অধ্যক্ষ দীপক কুমার তামিলীর উপস্থিতিতে বৈঠকে জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়। পরবর্তীতে ২ ডেসিমেল জমির সরকারি মূল্য প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা ধার্য করে ব্লক ভূমি ও রাজস্ব দফতর। অভিযোগ, নির্ধারিত মূল্যের থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা কম দামে উদয়শঙ্কর পালের শাশুড়ি পম্পা নন্দকে জমি বিক্রি করে দেনকলেজ কর্তৃপক্ষ।
এর সঙ্গে তৃণমূলের বিধায়ক তরুণ মাইতি ও প্রাক্তন অধ্যক্ষ জড়িত বলে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। কোনও বিজ্ঞাপন না দিয়ে এই ভাবে সরকারি জমি বিক্রি হয়েছে বলে অভিযোগ। কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ দীপক কুমার তামিলী তাঁর অবসর গ্রহণের চার দিন আগে ২৮ জানুয়ারি জমিরেজিস্ট্রি করেছেন।
অভিযুক্ত উদয়শঙ্কর পালের বক্তব্য, ‘‘এই বিষয়ে মন্তব্য করব না। যা বলার কর্তৃপক্ষ বলবেন।’’ কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ দীপক কুমার তামিল বলেন, ‘‘পরিচালন কমিটির সিদ্ধান্তে সরকারি মূল্য নির্ধারণ করে জমি বিক্রি করা হয়েছে। জমির ক্রেতা পম্পা নন্দ যে তৃণমূল নেতার শাশুড়ি, ,সেটা জানতাম না।’’ আর স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তথা কলেজের পরিচালন কমিটির সভাপতি তরুণ কুমার মাইতিকে এ ব্যাপারে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)