Advertisement
E-Paper

পড়ুয়ার খোঁজে শবর পাড়ায় যাচ্ছেন করোনা যোদ্ধারা

করোনা আপাতত বিদায় নিয়েছে। তাই এলাকার কোভিড-১৯ ম্যানেজমেন্ট টিমের সদস্যরা এ বার স্থানীয় শবর পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করতে উদ্যোগী হয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২২ ০৬:৪৭
চলছে নাম নথিভুক্ত করার কাজ।

চলছে নাম নথিভুক্ত করার কাজ। নিজস্ব চিত্র।

হাতে শক্ত করে ধরার রেজিস্টার। আর শবর পাড়ায় হন্যে হয়ে ঘুরছেন ওঁরা। বাড়ি বাড়ি ঘুরে সংগ্রহ করা হচ্ছে প্রাক্‌-প্রাথমিক ও প্রাথমিকস্তরের ভর্তি করানো যায় এমন শিশুদের নাম। আর এই কাজটি করছেন বিনপুরের দহিজুড়ি এলাকার কোভিড-১৯ ম্যানেজমেন্ট টিমের সদস্যরা।

করোনা আপাতত বিদায় নিয়েছে। তাই এলাকার কোভিড-১৯ ম্যানেজমেন্ট টিমের সদস্যরা এ বার স্থানীয় শবর পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করতে উদ্যোগী হয়েছেন। তবে সরাসরি সরকারি স্কুলে ভর্তি করানোর আগে শবর শিশুদের মধ্যে লেখাপড়ার আগ্রহ তৈরি করতে করোনা যোদ্ধাদের উদ্যোগে আগামী শুক্রবার, ৩ জুন দহিজুড়িতে চালু হচ্ছে একটি অবৈতনিক পাঠশালা। সপ্তাহে পাঁচদিন বিকেলে স্থানীয় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ভবনে পাঠশালাটি বসবে। পাঠশালার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বর্ণপরিচয়’। পড়াবেন কোভিড ম্যানেজমেন্ট টিমের সদস্যরাই। টিমের সম্পাদক শেখ নাসিরুদ্দিন জানাচ্ছেন, তাঁদের টিমের সদস্য ৩৮ জন। এর মধ্যে ছ’জন প্রাথমিক শিক্ষক ও হাইস্কুল শিক্ষক দু’জন। বাকিরা চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ী। নাসিরুদ্দিন বলছিলেন, ‘‘দহিজুড়ির শবরপল্লীর বাসিন্দাদের বেশিরভাগই জঙ্গল থেকে সংগৃহীত জ্বালানি কাঠ বিক্রি করে জীবিকা চালান। বিনা পয়সার রেশন পান শবররা। কিন্তু লেখাপড়া শেখার ব্যাপারে তাঁদের আগ্রহ খুবই কম। হাতেগোনা কয়েকজন ছেলেমেয়ে স্কুলে পড়ে। বাকিরা কার্যত নিরক্ষর। অভিভাবকদের সচেতন করেও কাজ হচ্ছিল না। তাই আমরা বাড়ি-বাড়ি ঘুরে পড়ুয়া সংগ্রহ করছি।’’

জানা গেল, এক বছর পাঠশালায় পড়িয়ে খুদেদের সড়গড় করে আগামী শিক্ষাবর্ষে সরকারি স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হবে। শিশুরা যাতে স্কুলছুট না হয়, সেই নজরদারিও করবেন করোনা যোদ্ধারা। করোনা যোদ্ধাদের ওই টিমের সভাপতি অমর পাল বলছেন, ‘‘করোনা আপাতত স্বস্তিজনক অবস্থায়। তাই শবর শিশুদের স্কুলমুখী করার জন্য কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।’’ করোনা যোদ্ধা দলের সদস্য পঞ্চায়েত কর্মী শেখ আনিসুর, প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক গোপাল রাউত ও ভ্রমর রাউত এবং হাইস্কুল শিক্ষক ক্ষিতীশ রাউত জানালেন, টিমের সদস্য স্কুলশিক্ষকরা পাঠশালায় পড়াবেন। এ ছাড়াও সদস্যদের মধ্যে শিক্ষিতও রয়েছেন অনেকে, তাঁরাও পালা করে খুদেদের পড়াশোনায় আগ্রহী করে তোলার জন্য পাঠদান করবেন। পাঠশালার ব্যয়ভার বহন করবেন টিমের সদস্যরাই। উদ্যোক্তারা জানান, হাতেগোনা যে ক’জন শবর ছেলেমেয়ে স্কুলে পড়ে, তাদেরও পাঠশালায় বিনামূল্যে কোচিং দেওয়া হবে।

জিৎ কোটাল, মৌসুমী মল্লিক, বিশ্বজিৎ ভুক্তা, তনু মল্লিক, দেবশ্রী ভুক্তার মতো জনা পঞ্চাশ শবর শিশুর নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, যারা এখনও স্কুলে ভর্তি হয়নি। আগামী শুক্রবার পাঠশালাটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলেও সপ্তাহে পাঁচদিন (শনিবার থেকে বুধবার) বিকেলে পাঠশালা বসবে। এই প্রসঙ্গে বন ও ক্রেতা সুরক্ষা প্রতিমন্ত্রী তথা ঝাড়গ্রামের বিধায়ক বিরবাহা হাঁসদা বলছেন, ‘‘খুবই ভাল উদ্যোগ। পাঠশালাটি চালু হলে পরিদর্শনে যাব।’’

Sabar Corona Warrior Student
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy