প্রতীকী ছবি।
দাঁতনের এক বৃদ্ধের ওড়িশায় করোনা ধরা পড়ার পরে নিভৃতবাস কেন্দ্রে (কোয়রান্টিন) পাঠানো হয়েছিল তাঁদের। কারণ, ওই বৃদ্ধ মেদিনীপুরে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন তাঁর সরাসরি সংস্পর্শে এসেছিলেন তাঁরা। ১৪ দিন কাটানোর পরে নিভৃতবাস কেন্দ্র থেকে ছেড়ে দেওয়া হল মেদিনীপুরের সেই চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের। মঙ্গলবারই সকলকে নিভৃতবাস কেন্দ্র থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। বুধবার থেকে তাঁরা যে যাঁর কাজে ফিরেছেন। এ দিন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা মেনেছেন, ‘‘ওই চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের কেউই আর এখন কোয়রান্টিনে নেই। সকলেই ১৪ দিন কোয়রান্টিনে ছিলেন। পরে ছাড়া পেয়েছেন।’’
গত ৮ এপ্রিল ওড়িশার এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন করোনা ধরা পড়েছিল ওই বৃদ্ধের। এই ঘটনায় মেদিনীপুরেও শোরগোল পড়েছিল। কারণ জানা গিয়েছিল, ওই বৃদ্ধ ৩০ মার্চ মেদিনীপুরে এসেছিলেন। তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল শহরতলির মোহনপুর এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। ১ এপ্রিল পর্যন্ত ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, বছর সত্তরের দাঁতনের এক এলাকার ওই বাসিন্দা। পরে তাঁকে ভর্তি করানো হয় শহরের রবীন্দ্রনগর এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। ওই হাসপাতালে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রে খবর, ওই বৃদ্ধের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে আসায় রবীন্দ্রনগরের হাসপাতালটির ২৪ জনকে এবং মোহনপুরের হাসপাতালের ১৪ জনকে কোয়রান্টিন করা হয়েছিল। কোয়রান্টিনে পাঠানো ৩৮ জনের মধ্যে ৩০ জন হোম কোয়রান্টিনে ছিলেন। বাকি ৮ জন শহরতলির এক নিভৃতবাস কেন্দ্রে ছিলেন। রবীন্দ্রনগরের ওই বেসরকারি হাসপাতালটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। নির্দেশ মেনে কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল বন্ধও রেখেছিলেন। শুধু জরুরি কিছু পরিষেবাই চালু ছিল।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, দাঁতনের ওই বৃদ্ধের সরাসরি সংস্পর্শে এসেছিলেন ৩৪ জন। দেখা যায়, এর মধ্যে পরিবারের ৭ জন, পরিবারের বাইরের পরিচিত ১ জন। বাকি ২১ জনই ছিলেন মেদিনীপুরের ওই দুই হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী। পরিস্থিতি দেখে ওই ৩৪ জনেরই করোনা পরীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত হয়। সেই মতো সকলের করোনা পরীক্ষা করানো হয়। সকলেরই রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।
নিয়ম অনুযায়ী, করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে ১৪ দিন কোয়রান্টিনে থাকতে হয়। সেই হিসেবে মঙ্গলবার ওই চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের কোয়রান্টিনের ওই সময়সীমা পেরিয়েছে। শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখে ওই দিনই সকলকে কোয়রান্টিন থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। শহরের রবীন্দ্রনগরের বেসরকারি হাসপাতালটি ফের চালুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই মতো হাসপাতালটি চালুও করেছেন কর্তৃপক্ষ। সূত্র্রের খবর, এই সময়ের মধ্যে হাসপাতালটি নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্রের দাবি, ‘‘প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ করা হয়েছে। মেদিনীপুরে এখন উদ্বেগের কিছুই নেই।’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy