করোনা রোগীর বাড়িতে বার্তা। নিজস্ব চিত্র।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের হুঁশিয়ারি, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ-শৃঙ্খল ভাঙতে না পারলে সম্ভাব্য তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলা মুশকিল হতে পারে। পরিস্থিতি দেখে স্থানীয়স্তরে মাইক্রো কন্টেনমেন্ট জ়োন হচ্ছে। সচেতনতা বাড়াতে এ বার অভিনব পন্থাও নিল পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ-প্রশাসন। গৃহ নিভৃতবাসে (হোম আইসোলেশন) থাকা সংক্রমিতদের বাড়ির বাইরে স্টিকার সাঁটানো হচ্ছে। বাড়িতে থাকার পরামর্শ দিয়ে স্টিকারে লেখা থাকছে, কতদিন ‘গৃহবন্দি’ থাকতে হবে।
পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার মানছেন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসনের যৌথ পদক্ষেপ এটা। আমরা বলছি, করোনা সংক্রমিতরা বাড়িতেই থাকুন। স্টিকারে হেল্পলাইন নম্বর দেওয়া থাকছে। সেখানে ফোন করে খাবার পেতে পারেন। কোনও সমস্যা হলে বিডিও, আইসি, ওসি-কে জানাবেন।’’ স্টিকারে থাকছে সংক্রমিতের নাম, সংক্রমণ ধরার পড়ার দিন, সংক্রমিতের সরাসরি সংস্পর্শে বাড়ির কতজন এসেছেন, নিভৃতবাসে থাকার মেয়াদ কবে শেষ হতে পারে— সবই। জেলা পুলিশের কন্ট্রোল রুম, জেলার করোনা কন্ট্রোল রুমের নম্বরও দেওয়া থাকছে।
পুলিশ-প্রশাসন বলছে, সবাইকে সতর্ক করাও এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য। তবে করোনা রোগীদের প্রতি বিরূপ আচরণ, একঘরে করে রাখা, এমনকী করোনায় মৃতের দেহ সৎকারেও বাধার ছবি বারবার সামনে এসেছে। সে ক্ষেত্রে প্রশাসনই যদি এ ভাবে করোনা রোগীর বাড়ি চিহ্নিত করে সবাইকে সব তথ্য জানিয়ে দেয়, তাহলে সামাজিক সমস্যা হবে না? জেলাশাসক রশ্মি কমলের বক্তব্য, ‘‘এখন আর আগের মতো পরিস্থিতি নেই। ভয়-ভীতি অনেকটাই দূর হয়েছে। সংক্রমিতদের পাশে দাঁড়াতে প্রতিবেশীরাও এগিয়ে আসছেন।’’
জেলায় এই মুহূর্তে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ৯৮৪। তার মধ্যে ৮৭৭ জনই গৃহ নিভৃতবাসে আছেন। কিন্তু একাংশ সংক্রমিত বা তাঁদের পরিজনেরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ভিড়ে মিশছেন। এতে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকছে। তা ঠেকাতেই স্টিকারের ভাবনা। ১৪ দিন পেরিয়ে গেলে ওই স্টিকার খুলে নেওয়া হবে।
মেদিনীপুর শহরের চারটি ওয়ার্ড-সহ জেলায় আপাতত ৫৩টি এমাইক্রো কন্টেনমেন্ট জ়োন হয়েছে। সেখানে সকলে বিধিনিষেধ মানছেন কি না তা দেখতে বৃহস্পতিবার রাতে মেদিনীপুর শহরের সিপাইবাজার পরিদর্শন করেন জেলাশাসক, জেলা পুলিশ সুপার। জেলাশাসক বলেন, ‘‘সংক্রমিতের সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। মাইক্রো কন্টেনমেন্ট জ়োন করে দ্রুত আরও কমানোর চেষ্টা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy