প্রতীকী চিত্র।
পরিসংখ্যান বলছে, ঝাড়গ্রাম পুর এলাকায় ৮০ শতাংশ মানুষের প্রথম ডোজ়ের টিকা নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকে নিয়েছেন দ্বিতীয় ডোজ়ও। তবে তারপরেও সংক্রমণ কমছে না। আক্রান্তদের মধ্যে গৃহবধূ ও দশ বছরের বেশি বয়সী পড়ুয়াদের সংখ্যা বেশি। জেলা প্রশাসনের দাবি, একাংশ মানুষের এখনও হুঁশ নেই। সচেতন ভাবেই তাঁরা অসচেতন। তাই সংক্রমণ কমাতে নতুন করে বেশ কিছু এলাকা গণ্ডিবদ্ধ করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ঝাড়গ্রাম শহরের ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১১টি ওয়ার্ডের একাধিক জায়গায় নতুন করে গণ্ডিবদ্ধ এলাকা করা হচ্ছে। এর আগেই শহরের ৫টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকা ১৭ জুলাই থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত আগেই গন্ডিবদ্ধ রয়েছে। সেই তালিকাই এ বার বাড়ল। আগামী বৃহস্পতিবার পুরোপুরি ‘লকডাউন’ রয়েছে শহরে। সেটাও হবে। জেলাশাসক জয়সি দাশগুপ্ত বলছেন, ‘‘উপসর্গহীন আক্রান্তরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এ-ওর বাড়ি যাচ্ছেন। অনুষ্ঠান বাড়ি যাচ্ছেন। কিছু জনের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য অনেককেই ফল ভুগতে হচ্ছে।’’ তিনি জুড়েছেন, ‘‘পুরসভা এলাকায় ৮০ শতাংশ মানুষ প্রথম ডোজ় পাওয়ার পরেই মাস্ক পরছেন না, দূরত্ববিধি মানছেন না। তাই সংক্রমণও নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। যে সব এলাকায় সংক্রমিত বেশি সেই এলাকা গণ্ডিবদ্ধ করা হয়েছে।’’
জানা গিয়েছে, শহরের ১৮, ১৪, ২ নম্বর ওয়ার্ডে সংক্রমণ এখন বেশি। পাশাপাশি কিছু আবাসনেও সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। যেমন ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেঘদূত আবাসনটিকে পুরো গন্ডিবদ্ধ করা হয়েছে। ওই আবাসনের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত এক রেলকর্মীর গত দু’দিন ধরে জ্বর-সর্দির উপসর্গ ছিল। স্থানীয় দোকান থেকে ওষুধ কিনে খাচ্ছিলেন তিনি। তাঁর করোনা টিকার দু’টি ডোজ়ই নেওয়া ছিল। তবে করোনা পরীক্ষা করাননি। ওই ব্যক্তি মঙ্গলবার বিকেলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। মুখে গ্যাঁজলা ওঠে। স্থানীয়রা তাঁকে জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে পরীক্ষা করে জানা যায়, তিনি করোনায় আক্রান্ত। এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরে শোরগোল পড়ছে অরণ্য শহরে। ঝাড়গ্রাম জেলায় এখন সংক্রমণের হার দৈনিক দুই থেকে আড়াই শতাংশ। শহরের পাশাপাশি ব্লক সদর ও গ্রামীণ বাজার এলাকাতেও সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। সাঁকরাইল ব্লকের কুলটিকরি বাজার, গোপীবল্লভপুর, বেলিয়াবেড়া ব্লকে তপসিয়া বাজারে সংক্রমণের হার বেশি। সেজন্য কুলটিকরি বাজারটিকে ২২ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত গণ্ডিবদ্ধ আগেই করা হয়েছে।
তবে এরপরেও হুঁশ অবশ্য ফিরছে না। সম্প্রতি ঝাড়গ্রাম শহরে বেশ কিছু বিয়েবাড়িতে নিমন্ত্রিতের সংখ্যা চারশো ছাড়িয়ে গিয়েছিল। সেখানে অনেকের মুখেই মাস্ক ছিল না। কয়েকদিন আগে পাঁচমাথা মোড় এলাকায় বিয়ের শোভাযাত্রায় ব্যান্ড বাজিয়ে নাচানাচি হয়। সেখানেও অনেকের মুখে মাস্ক ছিল না। এছাড়া বিকেল হতেই তেলেভাজা দোকান, ফুচকা, বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে ঘেঁষাঘেষি করেই খাওয়া-দাওয়া চলছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের আক্ষেপ, ‘‘কোনও পরিবারে কেউ সংক্রমিত হওয়ার বাকি সদস্যরা আলাদা থাকছেন না। তাঁরা করোনা পরীক্ষাও করাচ্ছেন না। এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy