Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

নিভৃতবাস কেন্দ্রের পাশেই হাট! আতঙ্ক

স্বাস্থ্য দফতরের তালিকায় কোয়রান্টিন সেন্টার হিসেবে চিহ্নিত। সেই নিয়মকে অমান্য করে কোয়রান্টিন সেন্টার ঘেঁষে হাট বাসানোর অভিযোগ উঠল স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে।

 নিভৃতবাস কেন্দ্রের সামনেই জমজমাট হাট। নিজস্ব চিত্র

নিভৃতবাস কেন্দ্রের সামনেই জমজমাট হাট। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পটাশপুর শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২০ ০২:০৪
Share: Save:

স্বাস্থ্য দফতরের তালিকায় কোয়রান্টিন সেন্টার হিসেবে চিহ্নিত। সেই নিয়মকে অমান্য করে কোয়রান্টিন সেন্টার ঘেঁষে হাট বাসানোর অভিযোগ উঠল স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে। যার প্রেক্ষিতে করোনা নিয়ে জরুরি স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর অব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন সাধারণ মানুষ।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তালিকা অনুযায়ী পটাশপুর-২ ব্লকের মতিরামপুর কর্মতীর্থকে কোয়রান্টিন সেন্টার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জনবসতি থেকে অনেকটা দূরে সরকারি ভবনে এই কোয়রান্টিন সেন্টার। মূলত এই কোয়রান্টিন সেন্টারে পটাশপুর-২ ব্লকের আটটি গ্রাম পঞ্চায়েতে ভিন রাজ্য থেকে আসা কোনও ব্যাক্তি বা এলাকার কারও করোনা সংক্রমণ হয়েছে সন্দেহ হলে তাঁদের চোদ্দো দিনের জন্য এখানে আইসোলেশনে রাখার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। তবে কর্মতীর্থে কোয়রান্টিনে এখনও পর্যন্ত সেরকম কাউকে রাখার প্রয়োজন হয়নি বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সহ এগরাকে কেন্দ্রে ও রাজ্য সরকার স্পর্শকাতর বলে চিহ্নিত করেছে। এগরা থেকে মাত্র এগারো কিলোমিটার দূরে পটাশপুরে এই কোয়রান্টিন সেন্টার অতি গুরুত্বপূর্ণ। গত কয়েক দিন ধরে সেখানে কোনও সন্দেহজনক ব্যক্তি না আসায় কিছুটা গা ঝাড়া মনোভাব দেখাচ্ছে প্রশাসন, এমনটাই অভিযোগ এলাকাবাসীর। দেশ জুড়ে করোনা সংক্রমণের জরুরি অবস্থায় মধ্যে পটাশপুরে করোনা নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে সচেতনার অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। কারণ, প্রশাসনের নির্দেশে ওই কোয়রান্টিন সেন্টার ঘেঁষে বসানো হয়ে‌ছে হাট। সাধারণ মানুষ অনেকেই জানেন না যে সেখানে কোয়রান্টিন সেন্টার রয়েছে। না জেনেই শ’য়ে শ’য়ে মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন হাটে। যা নিয়ে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এই মুহূর্তে রোগের উপসর্গ নিয়ে কেউ হাটে গেলে তা থেকে সমূহ বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। সংক্রমণ রোখার পরিবর্তে প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে মহামারী ছড়িয়ে পড়বে বলে উদ্বেগ শোনা গিয়েছে বাসিন্দাদের গলায়।

প্রসঙ্গত পটাশপুর দাইতলা বাজারে ঘনবসতির মধ্যে এই হাট বসতো। করোনা সচেতনা থেকে ব্লক ও পুলিশ প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে মতিরামপুর কর্মতীর্থ কোয়রান্টিন সেন্টারের সামনে অস্থায়ী ভাবে হাট সরানো হয়েছে। সপ্তাহে সেখানে দু’দিন বুধবার ও শনিবার হাট বসে। স্পর্শকাতর স্বাস্থ্য পরিষেবা যুক্ত জায়গায় কী করে হাট বসানো হল তা নিয়ে পুলিশ-প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের অদূরদর্শিতাকে কাঠগড়ায় তুলেছেন এলাকাবাসী। শনিবার হাটে কেনাকাটা করতে এসেছিলেন নান্টু দাস। তাঁর কথায়, ‘‘পাশেই যে কোয়রান্টিন সেন্টার তা জানতাম না। শোনার পর থেকে আতঙ্কে রয়েছি। মহামারী পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে প্র‌শাসনের আরও সতর্ক হওয়া উচিত।’’

পটাশপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চন্দন সাউ জানান, এখনও পর্যন্ত কোন ব্যাক্তি এই কোয়রান্টিন সেন্টারে আসেননি। তবে প্রয়োজন হলে হাট বন্ধ করে সন্দেহে জনক ব্যক্তিদের রাখতে হবে। যেহেতু এটা অস্থায়ী হাট তাই ফাঁকা জায়গায় বসানো হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে বিডিও মধুমালা নন্দীকে ফোন ও মেসেজ করা হলেও তিনি কোনও উত্তর দেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE