Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
novel coronavirus

করোনা সন্দেহ, মৃতদেহ সৎকারে বাধা

এলাকায় রটে যায়, ওই যুবক মহারাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন।

নভেল করোনাভাইরাস। প্রতীকী চিত্র।

নভেল করোনাভাইরাস। প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২০ ০১:১৮
Share: Save:

করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন— এই সন্দেহে পরপর দুবার এক ব্যক্তির মৃতদেহ সৎকার করতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠল। শেষ পর্যন্ত পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে মৃত ব্যক্তির সৎকার সম্ভব হয়। ঘটনাটি কাঁথি-১ ব্লকের ঘাটুয়া এলাকার।

পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকার বাসিন্দা অক্ষয় রাউল (২৩) মহারাষ্ট্রের পুনেতে থাকতেন। স্ত্রীও তাঁর সঙ্গে থাকতেন। পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার পুনেতে অক্ষয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। সেখানে তিনি যে বাড়িতে থাকতেন সেই ওই বাড়ির ছাদ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁর দেহ উদ্ধার করে পুনে থানার পুলিশ। স্ত্রীর সঙ্গে মাঝেমধ্যে ঝগড়াঝাটি হত তাঁর। তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে বাড়ির লোকেরা গিয়ে দেহ নিয়ে ফেরেন বৃহস্পতিবার ভোরে।

এলাকায় রটে যায়, ওই যুবক মহারাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। এর পর স্থানীয় শ্মশানে এদিন ভোর ৫টা নাগাদ ওই যুবকের সৎকার করতে গেলে গ্রামবাসীরা বাধা দেয় বলে অভিযোগ। নিরুপায় পরিবারের লোকরা বেলা আটটা নাগাদ মৃতদেহ সৎকারের জন্যে কাঁথি শহরের একটি শ্মশানে নিয়ে আসেন। সেখানেও মৃতদেহ আটকে বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। শেষ পর্যন্ত বাসিন্দাদের প্রবল আপত্তিতে মৃতদেহ নিয়ে ফের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন পরিবারের লোকেরা। ততক্ষণে সেখানে স্থানীয় মহিষাগোট গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধিদল ওই যুবকের বাড়িতে পৌঁছয়। তারা যুবকের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং দাহ করার অনুমতিপত্র দেখার পর এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে আলোচনায় বসে। আলোচনার পর সৎকারের সম্মতি দেয় বাসিন্দারা।

করোনা নিয়ে সচেতনতায় জেলায় বি‌ভিন্ন পঞ্চায়েত একাধিক শিবির করেছিল। তারপরেও যে ভাবে দেহ সৎকারে বাধা দেওয়া হল তা অমানবিক বলেই মনে করছেন অনেকে। পাশাপাশি সৎকার করার জন্য বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও কেন আটকানো হল এবং সেক্ষেত্রে স্থানীয় পঞ্চায়েত ও কাঁথি পুরসভা উপযুক্ত পদক্ষেপ কেন নিতে পারল না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

যদিও স্থানীয় মহিষাগোট পঞ্চায়েতের প্রধান নির্মল মিশ্রের দাবি, ‘‘প্রাথমিকভাবে ওই যুবকের দেহ সৎকার করতে অসুবিধা হচ্ছিল বলে আমাদের কাছে কোনও খবর ছিল না। যেহেতু মহারাষ্ট্রে ওই যুবক মারা গিয়েছে তাই এলাকার লোকেরা করোনা হয়েছে বলেই সন্দেহ করেছিল। পরে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখার পর বাসিন্দাদের আসল ঘটনা বোঝাতে সমর্থ হই। তারপর আর গ্রামের মানুষ বাধা দেয়নি।’’

মৃতদেহ সৎকার পরপর দু’বার আটকানো প্রসঙ্গে কাঁথির এসডিপিও অভিষেক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওই যুবক মহারাষ্ট্রে মারা যাওয়ার জন্যই এলাকার লোকেরা প্রথমে ভয় পেয়ে গিয়েছিল। তবে এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয় তখনই তাদের পুলিশকে জানানো দরকার ছিল। সৎকার করতে না পারার ঘটনা জানতে পারার পর পুলিশ ওই পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Novel Coronavirus Coronavirus Contai
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE