প্রতীকী ছবি।
দেশজুড়ে মহামারির আকার নিয়েছে করোনা। এই অবস্থায় জাতীয় সেবা প্রকল্প কর্মসূচিতে ‘দত্তক' গ্রামে গিয়ে সাধারণ মানুষকে করোনা সংক্রমণ নিয়ে সচেতন করার কাজে উৎসাহ দেখাচ্ছে না বিভিন্ন কলেজ কর্তৃপক্ষ। লকডাউন উপেক্ষা করে স্বল্পসংখ্যক কলেজপড়ুয়া এগিয়ে এলেও প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে সমস্ত দত্তক গ্রামে পৌঁছতে ব্যর্থ হচ্ছে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনবহু কলেজ।
করোনা পরিস্থিতিতে জাতীয় সেবা প্রকল্প কর্মসূচিতে কী ভাবে কলেজগুলি কাজ করে?
ধরা যাক, কোনও কলেজের একটি এনএসএস ইউনিট রয়েছে। তারা এর জন্য একটি গ্রামকেই দত্তক নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ওই গ্রামে গিয়ে করোনা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে পারেন ওই কলেজের ছাত্ররা। কী ভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকবে এবং এই পরিস্থিতিতে কী করণীয় সবকিছুই হাতে-কলমে গ্রামবাসীদের শেখানো হয়। এর জন্য কেন্দ্র সরকার সাড়ে ২২ হাজার টাকা করে বরাদ্দ করে। কিন্তু পূর্ব মেদিনীপুরের অধিকাংশ কলেজ-সহ বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সিংহভাগ কলেজে বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয় সেবা প্রকল্প কর্মসূচি যথাযথ পালন হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে।
কাঁথির প্রভাত কুমার কলেজে ৪ টি এনএসএস(জাতীয় সেবা প্রকল্প) ইউনিট রয়েছে। তারা কাঁথি-১ ব্লকের পাঁচটি গ্রাম দত্তক নিয়েছিল। সম্প্রতি কয়েকটি গ্রামে গিয়ে কলেজের পড়ুয়ারা সাধারণ মানুষকে মাস্ক দেওয়া এবং করোনা সম্পর্কে সচেতন করার কাজ করেছেন বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দাবি। মুগবেড়িয়া গঙ্গাধর মহাবিদ্যালয়ের তিনটি ইউনিটের তিনটি দত্তক গ্রামে গিয়ে জাতীয় সেবা প্রকল্পে মানুষকে স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন করার কথা। কিন্তু একটি ইউনিট গিয়ে একটি গ্রামে এই কর্মসূচি নিতে পেরেছে। ওই কলেজের অধ্যক্ষ স্বপন কুমার মিশ্রর অভিযোগ, ‘‘দু’বছর ধরে জাতীয় সেবা প্রকল্প কর্মসূচি রূপায়ণের জন্য প্রাপ্য টাকা বিশ্ববিদ্যালয় কাছ থেকে মেলেনি। কলেজের নিজস্ব তহবিল থেকে এই কর্মসূচি নিতে হচ্ছে।’’
এগরা সারদা শশীভূষণ কলেজে ৪ টি ইউনিটের মধ্যে মাত্র দু'টি ইউনিট সক্রিয়। পূর্ব মেদিনীপুরে প্রথম এই এলাকাতেই করোনা আক্রান্তের হদিস মেলে। এক্ষেত্রেও কলেজের অধ্যক্ষ দীপক তামিলী আর্থিক সঙ্কটকেই দায়ী করেছেন। তমলুক রাজ কলেজে ৩ টি ইউনিট রয়েছে। তারাও করোনা পরিস্থিতিতে দত্তক নেওয়া গ্রামে গিয়ে সচেতনতার প্রচার করতে পারছে না। ওই কলেজের অধ্যক্ষ অসীম কুমার বেরা বলেন, ‘‘গত দু’বছর ধরে এই প্রকল্পে টাকা মেলেনি। তাই মহামারীতেও এলাকায় গিয়ে মানুষকে সচেতন করতে পারছেন না পড়ুয়ারা।’’
আর্থিক সঙ্কটেই যে করোনার মতো মহামারীতে দত্তক গ্রামে কলেজ পড়ুয়ারা পৌঁছতে পারছেন না তা কার্যত স্বীকার করেছেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় সেবা প্রকল্প কর্মসূচির কো-অর্ডিনেটর তপন কুমার দে। তাঁর দাবি, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার দু’বছর ধরে এই প্রকল্পে প্রাপ্য টাকা দিচ্ছে না শুনেছি। তবে করোনার আতঙ্ক উড়িয়ে কিছু কিছু কলেজ জাতীয় সেবা প্রকল্প কর্মসূচিতে প্রশংসনীয় কাজ করছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy