হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগীদের ভিড়। ছবি: কৌশিক সাঁতরা।
দিন দিন রোগীর চাপ বাড়ছে। বাড়ছে শয্যার সংখ্যাও। চিকিৎসকের অভাব তো ছিলই। সম্প্রতি একাধিক নার্সকে অন্যত্র বদলি করা হয়। নেই পর্যাপ্ত সংখ্যক কর্মী। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরিষেবা সচল রাখতেই হিমসিম খাচ্ছেন।
সম্প্রতি ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে রোগী কল্যাণ কমিটির বৈঠক হয়। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে নার্স এবং কর্মী সঙ্কটের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে উপস্থিত জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একাংশ আশঙ্কিত। তাঁদের বক্তব্য, দ্রুত কিছু না হলে হাসপাতালের পরিষেবা ভেঙে পড়তে কতক্ষণ! যদিও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘হাসপাতালের চাপ তো বাড়বেই। এটাই স্বাভাবিক। কর্মী নিয়োগের বিষয়টি স্বাস্থ্য ভবনের নজরে রয়েছে।”
কয়েকমাস আগে এক লপ্তে ৪০ জন নার্সকে তুলে অন্যত্র বদলি করে দেয় স্বাস্থ্য ভবন। একই ভাবে এক্স রে ও প্যাথোলজি বিভাগ থেকেও তুলে নেওয়া হয়েছিল চার জন কর্মীকে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য সচিব অনিল বর্মা ঘাটাল হাসপাতালে এসে চব্বিশ ঘন্টার জন্যই এক্স রে ও প্যাথোলজি বিভাগ চালু রাখার আদেশ দেন। নির্দেশ তামিল করতে গিয়ে হিমসিম অবস্থা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। হাসপাতালের সুপার কুণাল মুখোপাধ্যায় জানান, “কর্মী সঙ্কটের বিষয়টি নিয়ে রোগী কল্যাণ কমিটির বৈঠকে দীঘর্ক্ষণ আলোচনা হয়েছে।”
সূত্রের খবর, ঘাটাল হাসপাতালে এই মুহুর্তে ১৩২ জন নার্সের বদলে রয়েছেন ৮৭জন। এই সংখ্যক নার্স দিয়েই চলছে শিশু, মহিলা, সার্জারি, আউটডোর-সহ সমস্ত বিভাগ। একই পরিস্থিতি শিশু বিভাগেরও। কয়েকদিন আগেই এক শিশু চিকিৎসককে বদলি করে দেওয়া হয়। মাত্র দু’জন চিকিৎসক দিয়েই চলছে শিশু বিভাগ। সমস্যা হওয়ায় এসএনসিইউ বিভাগের শিশু চিকিৎসকদের দিয়ে কোনও ভাবে চলছে ওই বিভাগটি।
এখন ঘাটাল মহকুমা ও সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল নিয়ে মোট ৪৫০ টি শয্যা চালু আছে। আগে ছিল ৩৫০টি। সব মিলিয়ে ক্রমশ রোগীর চাপ বাড়ছে, কিন্তু নতুন করে কর্মী-নার্স নিয়োগ করা হচ্ছে না। কর্মী সঙ্কট থাকলেও পরিষেবার যাতে কোনও তার প্রভাব না পড়ে সে ব্যাপারে তৎপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফলে ক্ষোভ বাড়ছে হাসপাতালের অন্দরে। এক চিকিৎসকদের বক্তব্য, পরিষেবা উন্নত করতে গেলে কর্মী-চিকিৎসক এবং নার্স নিয়োগ জরুরি। তা না করে কর্মী অন্যত্র বদলি করে একের পর এক নির্দেশ দিচ্ছে স্বাস্থ্যভবন। এ ভাবে ক’দিন চলবে? এক নার্স জানান, আগে একটি বিভাগে সাতজন নার্স একসঙ্গে ডিউটি করতেন। সেখানে চারজন নার্স দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy