Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

৬০ হাজার মিনিকিট চাইল জেলা

অতিবৃষ্টি ও জলাধার থেকে ছাড়া জলে পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ঘাটাল, দাসপুর, চন্দ্রকোনার বহু এলাকা এখনও জলমগ্ন। জমা জলে চাষে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

জলমগ্ন: জমা জলে চাষের ক্ষতি। নিজস্ব চিত্র

জলমগ্ন: জমা জলে চাষের ক্ষতি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৭ ০৮:৪০
Share: Save:

বন্যা পরিস্থিতির জেরে জেলায় প্রায় ৩৯ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। পরিস্থিতি দেখে রাজ্যের কাছে মিনিকিট চাইল জেলা। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে এই মিনিকিট বিলি করা হবে। কৃষি দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর প্রভাত বসু বলেন, “মিনিকিট চাওয়া হয়েছে। পেলে তা বিলি হবে।”

জেলার কৃষি কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মিনিকিট দেওয়া হবে। আমাদের সরকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে থাকবে।”

অতিবৃষ্টি ও জলাধার থেকে ছাড়া জলে পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ঘাটাল, দাসপুর, চন্দ্রকোনার বহু এলাকা এখনও জলমগ্ন। জমা জলে চাষে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলার ১ লক্ষ ৩৪০ হেক্টর জমিতে এখন বিভিন্ন চাষ হয়েছিল। কোথাও আমন চাষ শুরু হয়েছিল। কোথাও আমনের বীজতলা তৈরি করা হচ্ছিল। কোথাও আনাজ চাষ হয়েছিল। কোথাও বা হচ্ছিল ফল-ফুলের চাষ। এরমধ্যে ৩৯ হাজার ১৯ হেক্টর জমি জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এই জমির বেশির ভাগ ফসলই নষ্ট হবে।

জেলা প্রশাসনের এক সূত্রের মতে, এর আগে ২০১৩ সালে এমন পরিস্থিতি হয়েছিল। তবে সেই বার ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ এতটা ছিল না। এ বার ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ বেশি।

বিভিন্ন শস্যের বীজ, সার-সহ চাষের যাবতীয় সরঞ্জামকে একত্রে মিনিকিট বলে। রাজ্যের কাছে আপাতত ৬০ হাজার মিনিকিট চেয়েছে জেলা। মিনিকিটের মধ্যে থাকতে পারে শস্যের বীজ এবং সার। বিকল্প চাষের ব্যাপারেও কৃষকদের উৎসাহিত
করা হবে।

এ বার সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঘাটাল মহকুমা। ঘাটালের ৫টি ব্লকের ৫৯২টি মৌজা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খড়্গপুর মহকুমার ১০টি ব্লকের ৮৪২টি মৌজা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্য দিকে, মেদিনীপুর সদর মহকুমার ৬টি ব্লকের ৬৮৯টি মৌজা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ঘাটালের মধ্যে আবার সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ঘাটাল ব্লকই। এখানে ১৫৩টি মৌজা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খড়্গপুরের মধ্যে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দাঁতন-১ ব্লক। এখানে ১৬৫টি মৌজা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

অন্য দিকে, মেদিনীপুর সদরের মধ্যে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কেশপুর। এখানে ৩২৭টি মৌজা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যে ৩৯ হাজার হেক্টর জমি জলমগ্ন হয়ে পড়ে, তারমধ্যে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে বীজতলা ছিল, ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষ শুরু হয়েছিল, ১ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছিল, ৫ হাজার হেক্টর জমিতে আনাজ চাষ হয়েছিল। বাকি ৩ হাজার হেক্টর জমিতে ফল- ফুলের চাষ হয়েছিল।

জেলার কৃষি কর্মাধ্যক্ষ নির্মলবাবু বলেন, “বৃষ্টির জেরে জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জল নামতে শুরু করেছে। পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE