Advertisement
E-Paper

দুর্যোগে ক্ষতি ৪৫২ কোটির

জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড়ে জেলায় অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে  ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে ব্লক এবং পঞ্চায়েতগুলিকে।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২০ ০৩:৩৭
সেতুর-দাবি: জল বেড়েছে কংসাবতীতে। এর জেরে ডেবরার ট্যাবাগেড়িয়ায় কংসাবতী পারপারের জন্য তৈরি অস্থায়ী রাস্তা ভেসে গিয়েছে। তাই নতুন করে সেতুর জোরাল দাবি তুলেছেন ডেবরাবাসী। নিজস্ব চিত্র

সেতুর-দাবি: জল বেড়েছে কংসাবতীতে। এর জেরে ডেবরার ট্যাবাগেড়িয়ায় কংসাবতী পারপারের জন্য তৈরি অস্থায়ী রাস্তা ভেসে গিয়েছে। তাই নতুন করে সেতুর জোরাল দাবি তুলেছেন ডেবরাবাসী। নিজস্ব চিত্র

ঘূর্ণিঝড় আমপানের তাণ্ডবে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরেও। জেলার প্রায় সব ক্ষেত্রই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, ব্লকস্তর থেকে আসা রিপোর্ট দেখে ক্ষতির হিসেব করা হচ্ছে। প্রাথমিক হিসেব অনুযায়ী, ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪৫২ কোটি টাকা। শুক্রবার পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আসেনি ব্লকস্তর থেকে। তা এলে ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ আরও বাড়বে বলেই জানাচ্ছে ওই সূত্র।

জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড়ে জেলায় অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে ব্লক এবং পঞ্চায়েতগুলিকে।’’ শুক্রবারও বিভিন্ন দফতর ক্ষয়ক্ষতির হিসেব করতে ব্যস্ত ছিল। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, ঝড়বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে চাষবাসে। ঝড়ের সময়ে জেলার ৯২,৩৮৬ হেক্টর জমিতে নানা ফসল ছিল। ঝড়ের পরে দেখা যাচ্ছে, এরমধ্যে ৬২,১৫২ হেক্টর জমির ফসলই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে কৃষিতে (ধান, আনাজ) ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ ৩৯৯ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা। আর উদ্যানপালনে (ফল, ফুল, পান) ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ ৮ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা। জেলার এক কৃষি আধিকারিক বলেন, ‘‘চাষিদের ধান কেটে নেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। কিন্তু তা-ও কিছু জমিতে কাটা ধান পড়েছিল। কেউ কেউ ধান কেটে উঠতে পারেননি। সেই সব ধান নষ্ট হয়েছে। ’’ জেলার কৃষি আধিকারিক রমাপ্রসাদ গিরি বলেন, ‘‘চাষের খেতের অনেকটাই ক্ষতি হয়েছে। পরিস্থিতির পর্যালোচনা করছি। রাজ্যকে জানানো হচ্ছে।’’ পরিদর্শনে গিয়ে কৃষি আধিকারিকেরা দেখেছেন, বৃষ্টিতে অনেক জমিতে জল জমে গিয়েছে। আনাজের ক্ষেত্রে মাচা ভেঙে সমস্যা হয়েছে। ক্ষতি অনেকটাই বাড়বে বলে মনে করছেন তাঁরা।

অনেক কাঁচাবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে, জেলায় ৩০,০৩৬টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২,৮৯০টি। কিছুটা কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৬,২০১টি। আর খানিক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৯৪৫টি। বিভিন্ন ব্লকের ৭১,১৩৬ জন মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক রাস্তাঘাট। প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে, জেলা পরিষদের অধীনে থাকা ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা সারাতে ৮০ লক্ষ টাকা লাগবে। জাতীয় সড়কের অধীনে রাস্তা সারাতে ৪ কোটি টাকা লাগবে। পূর্তবিভাগের অধীন রাস্তা সারাতে ২০ লক্ষ টাকা লাগবে। বিদ্যুতের অনেক খুঁটি ঝড়ে পড়ে গিয়েছে। এ ক্ষেত্রে ক্ষতি হয়েছে ১ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা। থানার কিছু ছাউনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মেরামতে প্রয়োজন ২০ লক্ষ টাকা। কিছু মুরগি, হাঁস, ছাগল মারা গিয়েছে। প্রাণিসম্পদে ক্ষতি হয়েছে ৫ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত প্রাথমিক স্কুলগুলি মেরামতে প্রয়োজন ৬০ লক্ষ টাকা। স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি মেরামতে প্রয়োজন ১ কোটি ২ লক্ষ টাকা।

প্রশাসন জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলির জন্য ত্রিপলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুর্গতদের অন্য ত্রাণ সামগ্রীও দেওয়া হচ্ছে। মাটির ঘরবাড়ি ভেঙে, টিনের চাল উড়ে মুহূর্তের মধ্যে খোলা আকাশের নীচে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছিলেন অনেকে। পরে তাঁরা নিরাপদ আশ্রয় গিয়েছিলেন। দুর্যোগ কাটায় এ দিন থেকে তাঁরা ফের বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন।

Cyclone Amphan Disaster Cyclone
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy