Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কবর থেকে দেহ তুলে শুরু তদন্ত

আগুনে পুড়ে দু’দিন আগে মারা গিয়েছিলেন। সোমবার তাঁকে কবরও দেওয়া হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে ওই মৃত মহিলার দেহ ফের কবর থেকে তুলল রামনগর থানার পুলিশ।

তদন্ত: কবর থেকে তোলা হচ্ছে মৃতদেহ। নিজস্ব চিত্র

তদন্ত: কবর থেকে তোলা হচ্ছে মৃতদেহ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রামনগর শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৮ ০১:৪৮
Share: Save:

আগুনে পুড়ে দু’দিন আগে মারা গিয়েছিলেন। সোমবার তাঁকে কবরও দেওয়া হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে ওই মৃত মহিলার দেহ ফের কবর থেকে তুলল রামনগর থানার পুলিশ।

মঙ্গলবার সকালে রামনগরের মান্দারপুর গ্রামে রিনা বিবি নামে ওই মহিলার দেহ তোলা ঘিরে ভিড় জমিয়েছিলেন উৎসুকেরা। রামনগর-২এর বিডিও প্রীতম সাহার উপস্থিতিতে এ দিন কবর খোঁড়া হয় এবং দেহটি বার করে ময়নাতদন্তের জন্য কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়।

পুলিশ সূত্রের খবর, বছর সাতেক মান্দারপুর গ্রামের বাসিন্দা রিনা বিবির বিয়ে হয়েছিল জুনপুট কোস্টাল থানার মুড়াবানিয়া গ্রামের বাসিন্দা শেখ সামসুদ্দিনের। রিনার মা মদিনা বিবির অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই টাকার জন্য তাঁর উপরে শারীরিক এবং মানসিকভাবে অত্যাচার করতেন সামসুদ্দিন। সেই সঙ্গে যোগ দিতেন তাঁর শ্বশুর বাড়ির লোকজন।

পুলিশ সূত্রের খবর, গত ১০ ফেব্রুয়ারি রিনা শ্বশুরবাড়িতে অগ্নিদগ্ধ হন। তাঁকে কাঁথি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। খবর পেয়ে মদিনা বিবি জুনপুট কোস্টাল থানায় অভিযোগ করেন, পণের দাবিতেই তাঁর মেয়েকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছে সামসুদ্দিন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সামসুদ্দিন, ভাসুর, ননদ এবং জা’কে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁরা বর্তমানে জেল হেফাজতে রয়েছেন।

শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ২০ ফেব্রুয়ারি কাঁথি হাসপাতাল থেকে রিনাদেবীকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়। কিন্তু রিনার বাপের বাড়ির লোকেরা তাঁকে মান্দারপুরের বাড়িতে নিয়ে যায়। এর পরে সেখানে রিনাদেবী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। গত ১১ মার্চ তাঁকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা রিনাদেবীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় ময়নাতদন্ত না করিয়েই তাঁর দেহ গ্রামে এনে কবর দেন পরিজনেরা।

বিচারাধীন একটি মামালায় পরিবারের সদস্যদের এভাবে ময়নাতদন্ত না করেই দেহ কবর দেওয়ার বিষয়টি জানতে পারে জুনপুট কোস্টাল থানার পুলিশ। ওই থানাতেই রিনাদেবীর স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল।

এর পরে জুনপুট থানার পুলিশ রামনগর থানাকে এ বিষয়ে জানায় এবং দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর অনুরোধ করে। সেই মতো এ দিন কবর থেকে দেহ তোলা হয়। এ ব্যাপারে কাঁথি মহকুমা পুলিশের এক আধিকারিক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘এই অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ঘটনায় জুনপুট কোস্টাল থানায় মামলা হয়েছিল। কিন্তু ময়নাতদন্ত না করেই ওই মহিলাকে কবর দেওয়া হয়েছিল। ঘটনার তদন্তের জন্য ময়নাতদন্তের প্রয়োজন। তাই ম্যাজিস্ট্রেটের সামনেই কবর থেকে দেহ তোলা হয়।’’

গ্রামের উপপ্রধান তমালতরু দাস মহাপাত্র বলেন, ‘‘ওই মহিলার মৃত্যুর পরে তাঁর বাবার বাড়ির সদস্যেরা পুলিশকে ফোনে তা জানিয়েছিল। কিন্তু ময়নাতদন্ত না করে কবর দেওয়াটা সম্ভবত তাঁদের অজ্ঞাতার জন্যই হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dead Body Grave Burnt Investigation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE