বুধবার গড়বেতার ব্যানার্জিডাঙা হাই স্কুলে পরীক্ষা দিচ্ছে শিবভক্তারা। নিজস্ব চিত্র
চৈত্রের শেষেই দিনের তাপমাত্রা ছুঁয়েছে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গরমে নাজেহাল কম-বেশি সকলেই। এরই মধ্যে গাজন ও মেলায় জমজমাট পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতার তিনটি ব্লকের শিব মন্দিরগুলি। করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে এ বার উৎসবমুখী জেলার মানুষজনও। চড়া গরমের জেরে ভক্তদের অসুস্থ হয়ে পড়া আটকাতে উৎসব কমিটির পাশাপাশি প্রশাসনিক নানা ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে অনেক মন্দিরে। অন্য দিকে শিবভক্তা পড়ুয়াদের পরীক্ষার সময় বিশেষ ব্যবস্থা করেছে স্কুলগুলিও।
চৈত্র মাসের শেষ তিনদিন শিব মন্দিরগুলিতে বিশেষ পুজোর মাধ্যমে গাজন উৎসবের আয়োজন করা হয়। বুধবার থেকে শুরু হয়েছে সেই উৎসব। তারই মধ্যে প্রথম পার্বিক পরীক্ষা চলছে অনেক হাই স্কুলে। গড়বেতার ঝাড়বনির ব্যানার্জিডাঙা হাই স্কুলে এ দিন ছিল নবম ও দশম শ্রেণির পরীক্ষা। শিবভক্তা পরীক্ষার্থীদের জন্য দু’টি অর্ধেই আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করেছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
পরীক্ষার ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক শান্তিগোপাল গোস্বামী বলেন, ‘‘স্কুলের মোট ৩৪ জন ছাত্র এ বার গাজনে ভক্তা হয়েছে। তাদের পরীক্ষার জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করা হয়। ছিল পানীয় জল এবং পাখার ব্যবস্থা।’’
দুই অর্ধের পরীক্ষাতেই ভক্তাদের পরীক্ষা হলের দায়িত্বে থাকা তুলসিদাস মাইতি বলছেন, ‘‘অনেক পরীক্ষাতেই গার্ড দিয়েছি। তবে শিবভক্তাদের পরীক্ষার হলে গার্ড দেওয়া এই প্রথম। মহাদেবকে স্মরণ করে লেখা শুরু করেছিল পরীক্ষার্থীরা।’’
দহন জ্বালার মধ্যেই এ বার রেকর্ড সংখ্যক শিবভোক্তা হয়েছে গোয়ালতোড়ের কান্তোড়নাথ শিবমন্দিরে। উদ্যোক্তারা বলছেন, এ বার প্রায় ১৪ হাজার ভোক্তা হয়েছেন। এর মধ্যে মহিলা প্রায় হাজার তিনেক। ভোক্তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে স্থানীয় হাইস্কুল ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। গরমে অসুস্থ হয়ে যাতে কেউ না পড়েন সে জন্য পানীয় জল, পর্যাপ্ত পাখার ব্যবস্থা করেছেন উদ্যোক্তারা। বসেছে মেলাও।
মন্দির কমিটির সেবাইত প্রদ্যোত চক্রবর্তী, মেলা কমিটির সম্পাদক তারাপদ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গাজন উৎসবে হাজার হাজার মানুষ ভক্তা হয়েছেন, মেলাতেও দোকানপাট বসেছে। দর্শনার্থীর সংখ্যাও বাড়ছে।’’
চন্দ্রকোনা রোডের রসকুণ্ডুতে বসন্তরায় শিব মন্দিরের গাজনে ভক্তার সংখ্যা ১৫ হাজারেরও বেশি। এখানে গাজনের মেলাও বসেছে। উদ্যোক্তারা বলছেন, শিবভক্তাদের জন্য থাকার বিশেষ ব্যবস্থা করা হচ্ছে, মেলায় আগত দর্শনার্থীদের সামলাতে স্বেচ্ছাসেবক রাখা হয়েছে। এখানে পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
চন্দ্রকোনা রোডের স্টেশনপাড়ার শিবমন্দির, গড়বেতার ফতেসিংহপুরে শান্তিনাথের শিবমন্দির, গোয়ালতোড়ের বগড়িডিহি শিবমন্দিরে গাজন উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। তীব্র দাবদাহের জন্য সর্বত্রই রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy