E-Paper

বাড়ি হচ্ছে তো, পরিদর্শন জেলা স্তরে

জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের নামের তালিকা অনুযায়ী ব্লকের গ্রাম পঞ্চায়েত ভিত্তিক কত বাড়ি পরিদর্শন করতে হবে তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

রঞ্জন পাল

শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:৫৯
ঝাড়গ্রাম ব্লকের মানিকপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় আবাসের

ঝাড়গ্রাম ব্লকের মানিকপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় আবাসের বাড়ি পরিদর্শন করছেন আধিকারিক। নিজস্ব চিত্র

স্বচ্ছতাই আবাসের ভিত।

আবাস প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ তো হয়েছে। কিন্তু উপভোক্তারা বাড়ি করছেন কি? নিয়ম হল, এ বিষয়ে তথ্যতালাশ করতে পরিদর্শনে যাওয়ার কথা সরকারি আধিকারিকদের। প্রথা হল, পঞ্চায়েত অথবা ব্লক স্তরের আধিকারিকেরাই এ কাজ করেন। তবে এ বার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হল, ঝাড়গ্রামে এ কাজ করবেন জেলা স্তরের আধিকারিকেরা। প্রশাসন সূত্রের খবর, আবাস প্রকল্পকে একশো শতাংশ দুর্নীতি মুক্ত করতে চায় সরকার। তাই জেলা স্তরের আধিকারিকদের পরিদর্শনের কাজে লাগানো হচ্ছে। ঝাড়গ্রামে ৬১ জন বিভিন্ন দফতরের আধিকারিক সরেজমিনে গিয়ে খতিয়ে দেখবেন।

পরিদর্শনে গিয়ে ঠিক কী করবেন আধিকারিকেরা? জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল বলেন, ‘‘আবাসে কাজ হচ্ছে কি না, তা আধিকারিকরা গিয়ে পরিদর্শন করবেন। কেউ কাজ শুরু না করলে তাঁদেরকে বোঝাবেন, যাতে ভাল ভাবে কাজ হয়।’’ এমনকি মঙ্গলবার জারি হওয়া ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আধিকারিকদের চলতি সপ্তাহেই পরিদর্শন হবে। তবে প্রশাসন সূত্রের খবর, অপেক্ষা না করে বিজ্ঞপ্তির পরের দিন, বুধবারই পরিদর্শন শুরু হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের নামের তালিকা অনুযায়ী ব্লকের গ্রাম পঞ্চায়েত ভিত্তিক কত বাড়ি পরিদর্শন করতে হবে তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ আধিকারিককে ৭৫টি বাড়ি পরিদর্শন করতে হবে। কোনও আধিকারিককে একটি গ্রাম পঞ্চায়েত, আবার কোনও আধিকারিককে তিন থেকে চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত পরিদর্শন করতে হবে। আধিকারিকেরা উপভোক্তার বাড়িতে গিয়ে নির্দিষ্ট অ্যাপ খুললেই দশ ধরনের পর্যায় আসছে। তার পর লোকেশন-সহ বর্তমান পরিস্থিতির ছবি তুলে তা নির্দিষ্ট জায়গায় আপলোড করতে হচ্ছে। তবে যাঁরা বাড়ি শুরু করেননি সে ক্ষেত্রে নট স্টাটের্ড (not started) করলে ছবি আপলোড করতে হচ্ছে না। প্রসঙ্গত, বাড়ির চূড়ান্ত তালিকা তৈরির আগেও জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকরা গ্রামে গিয়ে গিয়ে ‘সুপার চেকিং’ (সমস্ত তথ্য এবং বাস্তব পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা) করছিলেন।

প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলায় ২০ হাজার ১৮৩ জনের আবাসের বাড়ির জন্য প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা পেয়েছেন। টাকা পেয়েই অনেকেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন। তবে অনেকে তা করতে পারেননি। এ ক্ষেত্রে উঠে আসছে বালির চড়া দামের প্রসঙ্গ। পরিদর্শনে গিয়েও নাকি আধিকারিকদের সে কথা শুনতেও হচ্ছে। ঝাড়গ্রাম ব্লকের খালশিউলীর বাসিন্দা আনন্দ মাজি বলেন, ‘‘গোপীবল্লভপুর থেকে বালি কিনতে ২০ হাজার টাকা পড়ছে। তার পর মেন রোড থেকে টাকা খরচা করে বাড়ি নিয়ে আসতে হচ্ছে। আগে এলাকায় খাদান থাকার জন্য তিন, চার হাজার টাকায় বালি পেয়ে যেতাম। সে জন্য এখনও বাড়ি শুরু করিনি।’’ ঝাড়গ্রাম ব্লকের শিবু রুইদাস নামে আর এক উপভোক্তা বলছেন, ‘‘দিদি টাকা দিয়েছেন বাড়ি করার জন্য। কিন্তু বালির যা দাম সেই ভয়ে বাড়ি বানাচ্ছি না এখন। একটু দাম কমলেই বাড়ি বানাব।’’ চুবকা গ্রাম পঞ্চায়েতের কিছু উপভোক্তা বালি নিয়ে সমস্যার কথা প্রধানকে লিখিত ভাবে জানিয়েছিলেন।

ঝাড়গ্রাম জেলায় বর্তমানে চারটি খাদান রয়েছে। গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকে ১টি, লালগড় ব্লকে ২টি ও নয়াগ্রাম ব্লকে ১টি। খাদান কম থাকায় বাড়ছে বালির দাম। তবে বালির ব্যাপারে জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল বলেন, ‘‘যাঁরা বালি খাদানের টেন্ডার পেয়েছেন, তাঁরা কি দামে বিক্রি করছেন তা জানা নেই।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Jhargram

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy