Advertisement
E-Paper

রোগীদের সামলাব না, ওদের!

নার্স ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের দাবি, রোগীদের স্বার্থে হাসপাতালে কুকুর, বিড়ালের অবাধ বিচরণ অবিলম্বে নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:০৫
সহাবস্থান: রোগীর শয্যার নীচে ঘুরে বেড়াচ্ছে বিড়াল। কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে। —নিজস্ব চিত্র।

সহাবস্থান: রোগীর শয্যার নীচে ঘুরে বেড়াচ্ছে বিড়াল। কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে। —নিজস্ব চিত্র।

কলকাতা এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কুকুরের ছানাকে পিটিয়ে মারার অভিযোগে দুই নার্সিং পড়ুয়াকে গ্রেফতারের ঘটনায় বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে কুকুর ও বিড়ালের উপদ্রব নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। নির্দয়ভাবে ওই ছানাগুলিকে পিটিয়ে মারার বিরুদ্ধে সরব পশুপ্রেমী সংগঠনগুলি থেকে সাধারণ মানুষও। তবে একই সঙ্গে বিভিন্ন হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক, নার্স ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের দাবি, রোগীদের স্বার্থে হাসপাতালে কুকুর, বিড়ালের অবাধ বিচরণ অবিলম্বে নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।

তবে কলকাতার হাসপাতালের ঘটনায় জেলা হাসপাতালগুলিতেও কুকুর-বিড়ালের উপদ্রব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিভিন্ন সময় হাসপাতালগুলিতে এদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রোগী থেকে রোগীর বাড়ির লোকজন, হাসপাতালের কর্মীরা সরব হলেও তা যে আদৌ স্বাস্থ্য দফতর বা পুরসভার টনক নড়াতে পারেনি পূর্ব মেদিনীপুরের কয়েকটি হাসপাতালে ঘুরে টের পাওয়া গেল।

যাতায়াতের রাস্তার উপর ঘুমিয়ে রয়েছে মা-কুকুর। অদূরেই খেলে বেড়াচ্ছে কয়েকটি ছানা। আশপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে বিড়াল থেকে ছাগল সবই। তমলুক জেলা হাসপাতাল চত্বরে শুক্রবার সকালে দেখা গেল এমনই ছবি। সুপারের অফিসের সামনে বাঁধানোর রাস্তায় শুয়ে রয়েছে একাধিক কুকুর। ওই রাস্তা দিয়েই কুকুরকে পাশ কাটিয়ে হাসপাতালের অন্তর্বিভাগে যাতায়াত করতে হচ্ছে রোগী থেকে রোগীর বাড়ির লোকজনদের। মাঝেমধ্য়ে কুকুরের গায়ে পা লেগে গেলে তার চিৎকারে ভয়ে লাফিয়ে সরে যাচ্ছেন অনেকে।

এ দিন হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন নন্দকুমারের শীতলপুরের গ্রামের বাসিন্দা অতনু মাইতি। তাঁর কথায়, ‘‘রাস্তার উপর কুকুর শুয়ে রয়েছে। যাতায়াতের পথে একটু অন্যমনস্ক হয়ে ওদের গায়ে বা লেজে পা পড়লেই চিৎকার করে তেড়ে আসছে। কামড়ে দেওয়ার ভয় তো রয়েইছে। হাসপাতালে এসে যদি কুকুরের কামড় খেতে হয় তা হলেই হল! এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া উচিত।’’

হাসপাতালের এক কর্মীর অভিযোগ, এমনিতেই হাসপাতালে জলাতঙ্কের প্রতিষেধকের সরবরাহ না থাকায় অনেক সময় রোগীদের ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে। এই অবস্থায় হাসপাতালে এসে কেউ কুকুর, বিড়ালের কামড় খেলে বিড়ম্বনার শেষ থাকবে না।

সমস্যার কথা মানছেন হাসপাতাল সুপার গোপাল দাস। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কুকুর ধরার মতো পরিকাঠামো আমাদের নেই। এ বিষয়ে পুর কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। তবে ওদের বের করে দেওয়ার জন্য প্রায়ই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’’

একই ছবি হলদিয়া ও কাঁথি মহকুমা হাসপাতালেও। হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের শিশুবিভাগে ভর্তি এক রোগীর আত্মীয় অঙ্কুর দেবনাথ বলেন, ‘‘ওষুধপত্র গুছিয়ে রাখা দূরে থাক, বিছানায় রোগী শুয়ে থাকলে তার উপর দিয়ে ছুটে যাচ্ছে বিড়াল।’’ হাসপাতালের এক প্রবীণ নার্সের কথায়, ‘‘রুটিন ডিউটির সময় ওয়ার্ডে গেলে ওদের উৎপাত সহ্য করতে হয়। রোগীদের ইঞ্জেকশন কিংবা স্যালাইন দেওয়ার সময় ছুটোছুটি করতে গিয়ে পায়ের ফাঁকে ঢুকে পড়ে।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নার্স বলেন, ‘‘কাজের সময় যে ভাবে উপদ্রব করে, মনে হয় রোগীকে সামলাবো না ওদের।’’

এ ব্যাপারে হাসপাতালের সুপার সুমনা দাসগুপ্তর প্রতিক্রিয়া জানার চেষ্টা করা হলে তাঁর মোবাইল ফোন পরিষেবা সীমার বাইরে থাকায় সম্ভব হয়নি। তবে হলদিয়া পুরসভার কাউন্সিলর প্রদীপ কুমার দাস বলেন, ‘‘বেড়াল ও কুকুর নিয়ন্ত্রণের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েছি।’’

কাঁথি হাসপাতালের সুপার সব্যসাচী চক্রবর্তী বলেন, “আমরা বিড়াল নিয়ে সজাগ রয়েছি। বিড়াল ধরার জন্য অভিযানের কথা ভাবা হচ্ছে।’’

Dogs Animals Hospital
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy