ছবি: সংগৃহীত।
দশ বছর আগেও বিজেপির প্রার্থী খুঁজতে হিমশিম খেতে হত। আর এখন আবেদনপত্র ঝাড়াই- বাছাই করতে হিমশিম খাওয়ার পরিস্থিতি।
বিধানসভা ভোটে দলের প্রার্থী হতে ইচ্ছুকদের কাছ থেকে আবেদনপত্র জমা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বিজেপিতে। দলীয় সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে আবেদনের পাহাড় জমেছে। জেলার কোনও কেন্দ্রের জন্য ১৪-১৬টি, কোনও কেন্দ্রের জন্য আরও বেশি আবেদন জমা পড়েছে।
নিয়মমতো কোনও জেলার ইচ্ছুক প্রার্থীরা সেই জেলা নেতৃত্বকেই আবেদন দেবেন। কিন্তু তার বাইরেও যদি কেউ চান সরাসরি কলকাতায় গিয়ে বিজেপির রাজ্য দফতরেও আবেদন দিতে পারেন। সে জন্য ড্রপ বক্স রাখা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, পশ্চিম মেদিনীপুরের অনেক নেতা-কর্মীই সরাসরি নজরে পড়ার আশায় কলকাতায় গিয়ে আবেদনপত্র ফেলে এসেছেন। কলকাতা-যোগে যদি শিকে ছেঁড়ে! এঁদের মধ্যে যেমন একাধিক জেলা সহ-সভাপতি, জেলা সাধারণ সম্পাদক আছেন, তেমন জেলা সম্পাদক, মণ্ডল সভাপতিও রয়েছেন।
বিজেপির মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শমিত দাশ মানছেন, ‘‘এ বার বিধানসভা ভোটে দলের প্রার্থী হতে চেয়ে অনেকে আবেদন করছেন। সমাজের বিভিন্নস্তরের অনেকেই প্রার্থী হতে চান। রাজ্য দফতরে ড্রপ বক্সে আবেদনপত্র জমা দেওয়া যাচ্ছে। ইচ্ছুক সকলকে আবেদনের সুযোগ করে দিতেই দলের এই পদক্ষেপ।’’ অনেকে কলকাতায় গিয়ে আবেদনপত্র জমার পাশাপাশি জেলা সভাপতির কাছেও আবেদনপত্র দিচ্ছেন। শমিতের স্বীকারোক্তি, ‘‘আমার কাছেও বেশ কিছু আবেদনপত্র এসেছে।’’ দলের এক সূত্রে খবর, হাতেগোনা কয়েকটি কেন্দ্রের জন্যই শমিতের কাছে ৬৯টি আবেদনপত্র এসেছে।
গত লোকসভা ভোটে পশ্চিম মেদিনীপুরে বিজেপির ভাল ফল হয়েছে। বিধানসভা ভোটেও ভাল ফলের আশায় গেরুয়া-প্রার্থী হওয়ার হিড়িক পড়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তা ছাড়া, নাম, ঠিকানা, পরিচয়ের বিশদ তথ্য দিয়ে যে কেউই আবেদনপত্র জমা দিতে পারেন। বিজেপির এক সূত্র মানছে, আবেদনকারীকে সক্রিয় রাজনীতি করতে হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। ড্রপ বক্স ভরে গেলে আবেদনপত্রগুলি ঝাড়াই- বাছাই করে পাঠানো হবে দিল্লিতে। সেখানেই আবেদনপত্র খতিয়ে দেখে যোগ্য প্রার্থীদের বাছাই করা হবে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে বিধানসভা ভোটের আগে জনসংযোগ আরও জোরদার হচ্ছে বলেই মত বিজেপির।
কলকাতায় গিয়ে আবেদনপত্র জমার কারণ হিসেবে বিজেপির এক জেলা সম্পাদক বললেন, ‘‘দল এখন অনেক বড় হয়ে গিয়েছে। জেলায় জমা দিলে আবেদনপত্র রাজ্যে পৌঁছবে কি না নিশ্চয়তা নেই। তাই সরাসরি কলকাতায় গিয়ে ড্রপ বক্সেই আবেদনপত্র জমা দিয়ে এসেছি।’’ অনেকে এর মধ্যে গোষ্ঠীকোন্দলের ছায়াও দেখতে পাচ্ছেন। দলের এক জেলা সহ-সভাপতি বলেন, ‘‘শুনছি, প্রচুর আবেদনপত্র জমা পড়ছে। জেলায় জমা দিলে সেই ভিড়ে আমার আবেদনপত্র হারিয়ে যেতে পারে। দিন কয়েক আগে কলকাতায় এক কাজে গিয়েছিলাম। তার ফাঁকেই রাজ্য দফতরে গিয়ে ড্রপ বক্সে আবেদনপত্র জমা দিয়েছি।’’
সব শুনে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির কটাক্ষ, ‘‘এমন দৌড়দৌড়ি বিজেপিতেই সম্ভব।’’ তৃণমূলের প্রার্থী হতেও তো অনেকে ইচ্ছুক? অজিতের জবাব, ‘‘আমাদের দলের প্রার্থীর বিষয়ে রাজ্য নেতৃত্বই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy