Advertisement
১৬ জুন ২০২৪

জেলেও উৎসবের আলো

বিউলিডাল থেকে মাছের ঝোল, নবরত্ন তরকারি থেকে মাংস— পুজোর চারদিন পাত পেড়ে ভুরিভোজের আয়োজন মেদিনীপুর সংশোধনাগারে। অন্য বছরের মতো এ বারও পুজো হবে মেদিনীপুর জেলে। শুক্রবারই দেবীর বোধন।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৬ ০০:২৫
Share: Save:

বিউলিডাল থেকে মাছের ঝোল, নবরত্ন তরকারি থেকে মাংস— পুজোর চারদিন পাত পেড়ে ভুরিভোজের আয়োজন মেদিনীপুর সংশোধনাগারে।

অন্য বছরের মতো এ বারও পুজো হবে মেদিনীপুর জেলে। শুক্রবারই দেবীর বোধন। তাই এখন দম ফেলার ফুরসৎ জেলের আবাসিক গৌর পাইন, সিরাজ মণ্ডল, পূর্ণচন্দ্র সরেনদের! সকলেই ব্যস্ত পুজো প্রস্তুতিতে।

সপ্তাহ খানেক আগে থেকেই পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল! গঠন করা হয় কয়েকটি কমিটি। দায়িত্ব ভাগ করে নেন আবাসিকেরা। মেদিনীপুর জেলের এক আবাসিকের কথায়, “পুজোর ক’টা দিন একটু অন্যরকম ভাবেই থাকি। সপ্তাহ খানেক আগে থেকে পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। এ বার পুজোর চারদিনই পাতপেড়ে খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলেও এখন খোলা হাওয়া!”

অন্য দিনের খরচ বাঁচিয়ে পুজোর দিনগুলোতে ভুরিভোজের আয়োজন করেন আবাসিকেরা। ইতিমধ্যে মেনুও তৈরি হয়েছে। মেনুতে রয়েছে ভাত, রুটি, শাকভাজা, নবরত্ন, বিউলিডাল, আলুপোস্ত, গোবিন্দভোগ চালের পায়েস, ছোলার ডাল, মাছের ঝোল, মাংস, চাটনি, পাঁপড়। এক-একদিন এক-এক রকম মেনু।

পুজোর ক’টা দিন থাকছে নানা স্বাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও। যেমন পুরুলিয়ার ছৌ নৃত্য, ঝুমুর গান, আদিবাসী নৃত্য প্রভৃতি। এ সব পরিবেশন করবেন আবাসিকেরাই। জেলের রিক্রিয়েশন ক্লাবের উদ্যোগে পুজোর আয়োজন। পদাধিকার বলে পুজো কমিটির স ভাপতি জেল সুপার দেবাশিস চক্রবর্তী, সম্পাদক গৌর পাইন। গৌর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আবাসিক।

আবাসিকদের এই পুজোয় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন কর্মী-আধিকারিকেরা। জেলের মধ্যে থাকা রিক্রিয়েশন ক্লাব চত্বরেই মণ্ডপ তৈরি হয়েছে। এক সময় জেলের মধ্যে প্রতিমা তৈরি হত। এখন অবশ্য বাইরে থেকে প্রতিমা আনা হয়। পুজোর এত খরচ ওঠে কী করে? জেল সূত্রে খবর, পুজোর জন্য আবাসিকেরা তাঁদের একদিনের পারিশ্রমিক দেন। খাবারের খরচ অন্য দিনের থেকে বাঁচিয়ে রাখেন। যেমন, কোনও সপ্তাহের মাছ পুজোর দিনের জন্য তুলে রাখা হয়। অর্থাৎ, ওই সপ্তাহে আবাসিকেরা মাছ খেলেন না। ওই মাছ আসে পুজোর দিনে। সঙ্গে জেলের কর্মী-অফিসারেরা যে যাঁর সাধ্য মতো চাঁদা দেন।

মেদিনীপুর সংশোধনাগারে সবমিলিয়ে প্রায় সাড়ে বারোশো জন আবাসিক থাকেন। এরমধ্যে প্রায় সাতশো জন সাজাপ্রাপ্ত। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে প্রায় পাঁচশো জন আবার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত। পুজোর ক’টা দিন সকলেই উৎসবে সামিল হন। জেলের এক আবাসিকের কথায়, “জেলের মধ্যেই আমাদের একটা পরিবার রয়েছে। উৎসবের দিনগুলো এই পরিবারের সঙ্গেই কাটাই!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

recreational home Durga puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE