আশা-নিরাশা: বিক্রি হচ্ছে, কিন্তু তা সন্তোষজনক নয়। —নিজস্ব চিত্র।
বানভাসি ঘাটালে জল নেমেছে মাস খানেকও হয়নি। তার মধ্যেই পুজোর বাদ্যি বেজে গিয়েছে। যদিও এখনও পুজোর বাজার জমে না ওঠায় কপালে চিন্তার ভাঁজ বিক্রেতাদের।
শুধু ঘাটাল নয়, সংলগ্ন হাওড়া ও হুগলি জেলার সীমানাবর্তী বিভিন্ন গ্রামের মানুষও পুজোর কেনাকেটা করতে আসেন ঘাটালে। একাধিক বস্ত্র বিপণির পাশাপাশি ঘাটালে রয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত শপিং মলও। অন্য বছর পুজোর মাস কয়েক আগে থেকেই দোকানে পুজোর কেনাকাটার ভিড় জমে। এ বার অবশ্য ছবিটা আলাদা। দিন কয়েক আগেই ঘাটালের বিস্তীর্ণ এলাকা ছিল জলের তলায়। শিলাবতীর বাঁধ ভাঙায় পরিস্থিতি আর জটিল হয়। ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন বহু লোক।
জলে চাষবাসের ক্ষতি তো হয়েইছে, ভেঙে গিয়েছে বহু ঘরবাড়িও। জল নামার পর বাড়ি ফিরে তাই শুরু হয়েছে ভিটে বাঁচানোর লড়াই। খেতের ফসল খেতেই নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মাথায় হাত চাষিদের। তাই পুজোয় নতুন পোশাক কেনার কথা আর মাথায় নেই বানভাসি এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দার।
ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের প্রধান জীবিকা চাষবাস। গত বছর আলুর মরসুমে ভাল ফলন হলেও চাষিরা দাম পাননি। ফলে ক্ষতির বোঝা ছিলই। তার উপরে জলে সব্জি ও ফুল চাষেরও ক্ষতি হওয়ায় এখন মাথায় হাত। মাঠ থেকে জল নামতেই তাই এখন চাষিরা চড়া দামে বীজ কিনে নতুন করে ধানের চারা পোঁতার কাজ শুরু করে দিয়েছেন। সব্জি চাষিদেরও এখন বিশ্রামের ফুরসৎ নেই।
তাই পুজোর আগে পোশাক, প্রসাধনী, জুতোর দোকানে চেনা ভিড় উধাও। বিক্রিবাটা এখনও ভাল না হওয়ায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিক্রেতারা। এক পোশাক বিক্রেতার কথায়, ‘‘চড়া সুদে টাকা ধার করে পুজোর জন্য নতুন পোশাক তুলেছি। এখন সেই সব পোশাক বিক্রি না হলে কী হবে জানি না। লাভ দূরের কথা, ধার শোধ করাই মুশকিল হবে।’’
ঘাটাল শহরের কুঠিবাজারে এক বস্ত্র বিপণির মালিক তুষার দত্ত বলেন, ‘‘অন্য বছর পুজোর মাস দেড়েক আগে থেকেই দোকানে ক্রেতাদের লম্বা লাইন থাকে। ক্রেতাদের ভিড়ে বিক্রিবাটা করতে হিমসিম খেতে হয়। এ বার সত্যিই বাজার ফাঁকা।” ঘাটাল শহরের এক জুতোর শো রুমের কর্মী শেখ আকবরও বলছেন, “এ বার যা অবস্থা দিনে আট-দশ জনের বেশি ক্রেতাই হচ্ছে না। পুজোর মরসুমে এই পরিস্থিতি আগে কখনও হয়নি।”
তবে এক দোকানের মালিকদের আশা, “এখনও তো সময় আছে। আশা করছি, দেরিতে হলেও ঘাটালে পুজোর কেনাকাটা জমে উঠবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy