Advertisement
E-Paper

হস্তিনীর হত্যা উসকে দিল পাখি ‘খুনে’র স্মৃতি

২০১৭ সালের জুন মাসে হলদিয়ায় বেশ কিছু পাখিকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে হয়েছিল বলে অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২০ ০৩:৫৫
২০১৭ সালে (বাঁদিকে) নীড়হারা পাখির ছানা। ২০১৮ সালে নষ্ট করা হচ্ছে বাসা। ফাইল চিত্র

২০১৭ সালে (বাঁদিকে) নীড়হারা পাখির ছানা। ২০১৮ সালে নষ্ট করা হচ্ছে বাসা। ফাইল চিত্র

কেরলে অন্তঃসত্ত্বা হস্তিনীকে নির্মম ভাবে মেরে ফেলার ঘটনায় দেশ জুড়ে নিন্দায় সরব পশুপ্রেমীরা। ঘটনায় জড়িতদের শাস্তিরও দাবি উঠেছে। পশু-পাখিদের উপরে এমন অত্যাচার হলদিয়াবাসীর স্মৃতিতে ফিরিয়ে এনেছে ২০১৭ সালে এই এলাকায় পক্ষীকুলকে হত্যার ঘটনা। যা এখনও যন্ত্রণা দেয় স্থানীয় পশু-পরিবেশপ্রেমীদের।

২০১৭ সালের জুন মাসে হলদিয়ায় বেশ কিছু পাখিকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে হয়েছিল বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে মিছিল বের করে শহরে ঝড় তুলেছিলেন বাসিন্দারা। কিন্তু তার পরের বছরেই সেপ্টেম্বরে ফের হলদিয়া বন্দরে আনা অত্যধুনিক দমকল ব্যবহার করে রাতের অন্ধকারে নীড় ছাড়া করা হয়েছিল কয়েকশো পরিযায়ী পাখিকে। তাদের কলকাকলিই ছিল তাদের অপরাধ। কয়েকশো বাসা, পাখির ডিমে ভরে গিয়েছিল রাজপথ। সেই ঘটনায় কতিপয় বন্দর আধিকারিক জানিয়েছিলেন, পাখি দূষণ ছড়ায়। তা ছাড়া পাখির কুজন রাতের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায়। তাই পাখিদের কুজন থামাতে হলদিয়ী ক্লাস্টার ৪, ৫-এর বিভিন্ন গাছে ঘরবাঁধা পাখিদের জব্দ করতে বেছে নেওয়া হয়েছিল তাদের ‘ব্রিডিং’ মরসুম। পেশাদার লোক দিয়ে বাসায় কোথাও ডিম, কোথাও ছানা রয়েছে্ এমন গাছের ডাল বেছে বেছে কেটে নেওয়া হয়েছিল। কয়েকশো পাখির ডিম নষ্ট হয়েছিল। ছোট ছোট ছানারা বর্ষায় জলে ভিজে কাক ও শেয়াল ও কুকুরের পেটে গিয়েছিল। যদিও সেদিন জোর গলায় এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে পক্ষী বিশেষজ্ঞ অয়ন ঘোষ জানিয়েছিলেন পাখির বিষ্ঠা দূষণ ছড়ায় না।

হলদিয়া বিজ্ঞান আন্দোলনের মুখ মধুসূদন পড়ুয়া বলেন, ‘‘সেদিন আমরা মিছিল করেছিলাম। পাখি হত্যার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন শহরের মানুষ। কেরালায় হাতি হত্যা খুবই নিন্দনীয়। কিন্তু একই রকম নিন্দা হওয়া উচিত ছিল এই পাখি হত্যার ঘটনায়। দুর্ভাগ্য সেদিন কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।’’ পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানমঞ্চের জেলা কমিটির সদস্য শুচিস্মিতা মিশ্র বলেন, ‘‘পাখি ছোট প্রাণী। তাই কি সেদিন এই বর্বরতার পরেও কোনও বিচার হয়নি ? হাতি বড় বলেই হয়তো শোক বেশি। তবু কেন বার বার এমন ঘটনা ঘটবে।’’

মহিষাদলের বাসিন্দা শঙ্খশুভ্র দে অস্ট্রেলিয়ায় গবেষণা করেন। তিনি বলেন, ‘‘এ দেশে এক সময় বন্ধুর কাছ থেকে উট হত্যার কথা জেনেছি। আবার জঙ্গলে আগুন লাগার সময়ে তোয়ালে দিয়ে কোয়ালাকে বাঁচতেও দেখেছি। কেরালায় হাতি হত্যা বা হলদিয়ায় পাখি হত্যা দুই-ই ঘোরতর অপরাধ। জড়িতদের শাস্তি হওয়া উচিত।’’

তবে পাখি হত্যার ঘটনা যে তাঁকে কষ্ট দিয়েছিল তা জানিয়ে হলদিয়া বন্দরের ডেপুটি ম্যানেজার শশাঙ্ক পণ্ডিত বলেন, ‘‘আমপানের পর এ বার প্রচুর গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দমকল দিয়ে পাখি তাড়ানো, বাসা নষ্ট করা কিংবা পাখির ছানা ভর্তি ডাল কেটে নেওয়া ভুল ছিল।’’

Elephant Bird Environment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy