কেশবচন্দ্র পাঁজা। নিজস্ব চিত্র।
সকাল সকাল এটিএমে লাইন দেওয়া গত দেড় মাসে অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গিয়েছে, টাকা না-পেয়ে ফিরে আসাও। লাইনে দাঁড়িয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে এ দেশে। কিন্তু এ বার এক অন্য রকম অভিজ্ঞতা কাঁথিতে।
সোমবার সকালে খেজুরির বারাতলায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএমে লাইন দিয়েছিলেন স্থানীয়রা। ১১টা নাগাদ হঠাৎই বিপত্তি। ধোঁয়া বেরোতে শুরু করে এটিএম কাউন্টারের ভিতর থেকে। পিছনেই ওই ব্যাঙ্কের শাখা। হইচই শুনে বেরিয়ে আসেন এক ব্যাঙ্ককর্মী। আগুন লেগেছে বুঝতে পেরে এটিএমের ভিতরে থাকা নির্বাপক যন্ত্রটি খুলে আগুন নেভানোর চেষ্টা শুরু করেন তিনি। কিন্তু লাভ হয়নি। কী করে কী করতে হয় তিনি জানতেনই না! বিপদ বুঝে এগিয়ে যান লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তি। অন্য একটি যন্ত্র খুলে তড়িঘড়ি আগুন নিভিয়ে ফেলেন। একেবারে দক্ষ হাতে।
দমকল আসার আগে তাঁর তৎপরতাতেই বেঁচে গিয়েছে ওই এটিএম। পরে অবশ্য জানা গিয়েছে ওই ব্যক্তি নিজে অবসরপ্রাপ্ত দমকল কর্মী। বছর দেড়েক আগে কাঁথি দমকল কেন্দ্র থেকে ফায়ার ম্যান পদে অবসর নিয়েছেন। সকালে সংসার খরচের টাকা তোলার জন্যই লাইন দিয়েছিলেন খেজুরির শেরখান চকের বাসিন্দা কেশবচন্দ্র পাঁজা। তাঁর আগেপিছে আরও জনা পনেরো মানুষ। দমকল জানিয়েছে, এ দিন ওই এটিএমের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রে শর্ট সার্কিট হয়। তা থেকেই আগুন লাগে। তবে বিপত্তি বাড়েনি শুধুমাত্র কেশববাবুর তৎপরতায়।
কেশববাবু নিজে অবশ্য আক্ষেপ করছেন এত দিনেও পরিস্থিতিটা বদলানো গেল না ভেবে। এ দিন সন্ধ্যায় তিনি বলেন, ‘‘নাম কা-ওয়াস্তে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র রাখা থাকে অফিসগুলিতে। সেগুলির ব্যবহার জানেন না কর্মীরা কেউই। এ দিনও তাই দেখি। ওই ব্যাঙ্ক কর্মীকে দেখেই বুঝতে পেরেছিলাম উনি পারবেন না। তাই দৌড়ে গিয়েছিলাম।’’
কাঁথি দমকল কেন্দ্রের ওসি শ্রীকান্ত ধাড়া বলেন, ‘‘এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় না কোনও অফিস কর্মীকেই। কর্তৃপক্ষ যদি উদ্যোগী না-হন, তা হলে আমাদের কিছু করার থাকে না। অনেক ক্ষেত্রেই আমরা পৌঁছনোর আগে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আমাদের বিপদও বা়ড়ে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy