Advertisement
০১ মে ২০২৪

দেড় মাসে ফের এলাকায় হাতি, ঘুম নেই চাষিদের

দেড় মাসের মাথায় ফের এলাকায় হাতির পাল চলে আসায় রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়াগ্রাম ব্লকের চাষিদের। গত দু’দিনে খড়্গপুর-১ এবং সাঁকরাইল ব্লকের ১৮টি গ্রামের জমির ধান খেয়ে ও মাড়িয়ে প্রায় একশোটি হাতির পাল এগিয়ে চলেছে নয়াগ্রামের দিকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৬ ০০:০৩
Share: Save:

দেড় মাসের মাথায় ফের এলাকায় হাতির পাল চলে আসায় রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়াগ্রাম ব্লকের চাষিদের। গত দু’দিনে খড়্গপুর-১ এবং সাঁকরাইল ব্লকের ১৮টি গ্রামের জমির ধান খেয়ে ও মাড়িয়ে প্রায় একশোটি হাতির পাল এগিয়ে চলেছে নয়াগ্রামের দিকে। বন দফতর সূত্রের খবর, গত দু’দিনে খড়্গপুর বন বিভাগের অধীন ওই দু’টি ব্লকে প্রায় চারশো হেক্টর জমির ফসল তছনছ করে দিয়েছে হাতিরা। অন্য দিকে, হাতিরা ফের এলাকায় আসছে জেনে আতঙ্কে যতটা পারছেন পাকা ফসল কেটে নিচ্ছেন নয়াগ্রাম ব্লকের চাষিরা। যাদের জমির পরিমাণ বেশি, তাঁরা পড়েছেন অথৈ জলে। কারণ, খুচরো নোটের সমস্যা।

নয়াগ্রামের খড়িকামাথানি গ্রামের চাষি যোগেশ বারিক বলেন, “খুচরো নোটের সমস্যার জন্য খেতমজুরদের নগদে মজুরি মেটাতে পারছি না। মজুররা কাজ করতে চাইছে না। তাই নিজেই যতটা সম্ভব ধান কেটে নিচ্ছি। হাতি এলে আর রক্ষে নেই।” নয়াগ্রামের বড়ধানশোলা গ্রামের সুবোধ পড়্যা বলেন, “কাটা ধান মাঠেই পড়ে রয়েছে। গোলায় তোলার জন্য দিনমজুর মিলছে না।” কুকড়াশোল গ্রামের প্রবীণ পূর্ণচন্দ্র গিরি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলার পরেও বন দফতর হাতির পালকে দলমায় ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছে। ধান কাটার মরশুমে এলাকায় হাতিদের পাঠিয়ে চাষিদের সর্বনাশ করা হচ্ছে।”

পুজোর আগেই গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি খড়্গপুর বন বিভাগের বিস্তীর্ণ এলাকায় হানা দিয়েছিল দলমার হাতির পাল। অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে হাতির পালটি ফিরে গিয়েছিল। গতবার দলমার পালে ছিল ৭০ টি হাতি। এ বার দলে রয়েছে একশোটি হাতি। দেড় মাসের ব্যবধানে কীভাবে ফের হাতিরা একই এলাকায় এল, সেই প্রশ্ন তুলছেন চাষিরা। বন দফতরের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগও উঠেছে। সূত্রের খবর, দলমার পালের শতাধিক হাতি মেদিনীপুর বন বিভাগের বিভিন্ন জঙ্গলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। সিদ্ধান্ত হয়েছিল, হাতিগুলিকে খেদিয়ে বিনপুরের মালাবতীর জঙ্গল দিয়ে ঝাড়খণ্ডের রুটে দলমায় ফেরত পাঠানো হবে। কিন্তু দফায় দফায় চেষ্টা করেও সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে ব্যর্থ হয় বন দফতর।

খড়্গপুরের ডিএফও অঞ্জন গুহ বলেন, “হাতির পালে গোটা ১৪ শাবক রয়েছে। হাতিদের এখন অন্য রুটে পাঠানোর চেষ্টা হলে বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি এড়িয়ে হাতির দলকে জঙ্গলের গভীরে পাঠানোর চেষ্টা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE