প্রান্তিক চাষিদের কৃষি ঋণ দেওয়ার অছিলায় কয়েক কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে সুতাহাটার চৈতন্যপুরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের রামপুর ভিএমএস শাখার বিরুদ্ধে।
চাষিদের অভিযোগ, পাঁচ বছর আগে তাঁদের নামে ৫০ হাজার টাকা করে কৃষি ঋণ মঞ্জুর হলেও আজ পর্যন্ত অর্ধেক টাকাও তাঁরা হাতে পাননি। তার উপর যে টাকা মিলেছিল তার মধ্যে কয়েক হাজার টাকা বিমার নাম করে কেটে নেওয়া হয়েছিল। এখন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ অনাদায়ী ঋণ পরিশোধের জন্য নোটিস পাঠানোয় বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। ব্যাঙ্কের তৎকালীন ম্যানেজার-সহ দু’জন জড়িত বলে অভিযোগ।
প্রতারণার অভিযোগ জানিয়ে ইতিমধ্যেই সুতাহাটা এবং মহিষাদল ব্লকের কয়েকশো ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষি জেলাশাসককে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। ঘটনাটি খতিয়ে পুলিশ সুপারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন জেলাশাসক রশ্মি কমল। মহিষাদল থানাকেও দ্রুত রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের রামপুর ভিএমএস শাখা সূত্রে খবর, ২০১১ সালে এই শাখা থেকে সুতাহাটা এবং মহিষাদল এলাকার দেড় হাজারের বেশি চাষিকে কিসান ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে মাথা পিছু ৫০ হাজার টাকা করে কৃষি ঋণ দেওয়া হয়েছিল। জিরো ব্যালান্সে চাষিদের নামে ওই ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হয়। চাষিদের প্রাপ্য ৫০ শতাংশ অর্থাৎ ২৫ হাজার টাকা চাষিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ফিক্সড ডিপোজিট করে দেওয়া হয়। আর বাকি টাকা চাষিদের হাতে দেওয়া হয়।
চাষি সিদ্ধার্থ দাস, প্রণব দাসদের অভিযোগ, “ঋণ পাওয়ার জন্য ব্যাঙ্কের বিজনেস ফেসিলেটর মুরারিমোহন দাসের মাধ্যমে দরখাস্ত করি। জিরো ব্যালেন্সে অ্যাকাউন্ট খোলার কথা বলা হলেও মুরারিবাবু তার জন্য ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা করে নিয়েছেন। কিন্তু ওই অ্যাকাউন্টে কোনও টাকা নেই।’’
ওই ব্যাঙ্কের রামপুর ভিএমএস শাখার বর্তমান ব্রাঞ্চ ম্যানেজার তাপস বিশ্বাস জানান, “কৃষি ঋণকে সামনে রেখে একটি বড় অঙ্কের টাকার গড়মিল ধরা পড়েছে। কয়েক কোটির হিসাব ব্যাঙ্কে নেই। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।” যদিও ঋণের টাকা নয়ছয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মুরারিমোহন দাস।
তাঁর দাবি, “ব্যাঙ্কের কৃষি ঋণের বিষয়টি ম্যানেজারের এক্তিয়ারভুক্ত বিষয়। কারা কীভাবে ঋণ পেয়েছে বা কোথায় বিমা করেছে তার সমস্ত দায়িত্ব ম্যানেজারের। তার সঙ্গে আমি জড়িত নই।’’