Advertisement
E-Paper

মহিলা কামরায় যুবক! পাশে বসার আবদারও

তোর্ষা জানিয়েছেন, খড়্গপুর জিআরপি বিষয়টি জেনে আশ্বাস দেয়, সাঁতরাগাছিতে তাঁর কাছে পৌঁছবে রেল পুলিশের দল। কিন্তু অভিযোগ, আসেনি কেউ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:২৭
প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

এটা তো মহিলা কামরা। এখানে উঠেছেন কেন?

ভদ্রকগামী বাঘাযতীন প্যাসেঞ্জারের মহিলা কামরায় কয়েকজন যুবককে দেখে এমনই প্রশ্ন করেছিলেন তোর্ষা বারিক। তোর্ষার বাড়ি খড়্গপুরের কৌশল্যায়। পড়েন সল্টলেকের একটি প্রতিষ্ঠানে। নিত্যযাত্রী তোর্ষার প্রশ্ন শুনে জবাব এসেছিল, ‘‘পাশে এসে বসে যাও।” ট্রেনের মহিলা কামরায় পুরুষের সফর। মহিলা যাত্রীদের হেনস্থা। ট্রেন সফরে এমন অভিযোগ নতুন নয়। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছিল, টুইটারে এ বিষয়ে অভিযোগ হলে বা সামাজিক মাধ্যমে কিছু ভাইরাল হলে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছিলেন রেল কর্তৃপক্ষ। তোর্ষার ক্ষেত্রে অবশ্য তেমনটা হয়নি। তাঁর দাবি, বৃহস্পতিবার দুপুরে মহিলা কামরায় জনা কয়েক যুবককে দেখেই হাওড়া জিআরপিকে ফোনে জানিয়েছিলেন।। তিনি জানিয়েছেন, হাওড়া জিআরপি থেকে জানানো হয়েছিল, ট্রেন ছাড়ার সময় হয়ে গিয়েছে। তাই খড়্গপুর জিআরপিতেই যেন অভিযোগ জানানো হয়। তোর্ষা জানিয়েছেন, খড়্গপুর জিআরপি বিষয়টি জেনে আশ্বাস দেয়, সাঁতরাগাছিতে তাঁর কাছে পৌঁছবে রেল পুলিশের দল। কিন্তু অভিযোগ, আসেনি কেউ।

তোর্ষার আরও দাবি, পুরো বিষয়টি তিনি ভিডিয়ো করে পোস্ট করেছিলেন ফেসবুকে। মুহূর্তে ভাইরাল হয়েছে তা। সেখানে দেখা যাচ্ছে, মহিলা কামরায় বসে থাকা কয়েকজন পুরুষকে ওই মহিলা যাত্রী নেমে যাওয়ার আবেদন জানালেও সাড়া পাচ্ছেন না। উল্টে কুরুচিকর মন্তব্য আসছে। ভিডিয়ো পোস্ট করেও কাজ হয়নি কিছুই। তোর্ষার কথায়, “লোকাল ট্রেন অরক্ষিত। জলেশ্বর প্যাসেঞ্জারেও নিয়মিত একইভাবে মহিলা কামরায় পুরুষ যাত্রী যাতায়াত করেন। মহিলাদের কথা ভেবে রেলের পদক্ষেপ করা উচিত।’’ খড়্গপুর রেল পুলিশের ডেপুটি পুলিশ সুপার শেখর রায় বলেন, “আমরা ট্রেনগুলি নজরে রাখি। কিন্তু সব ট্রেনে পাহারা দেওয়ার মতো কর্মী আমাদের নেই। আমরা বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছি।” দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “ফেসবুকে পোস্ট হওয়া ভিডিয়োটি সংশ্লিষ্ট রেল আধিকারিকের নজরে আনা হয়েছে। তাঁরা পদক্ষেপ করছেন।”

বাঘাযতীনে প্যাসেঞ্জারে মাস পাঁচেক আগে মহিলা যাত্রীদের দাবি মেনে চালু হয়েছে মহিলা কামরা। অভিযোগ, হাওড়া-খড়্গপুর শাখার অধিকাংশ প্যাসেঞ্জার ও লোকাল ট্রেনের মহিলা কামরায় আগে আরপিএফ দেখা গেলও এখন সেগুলি অরক্ষিত থাকে। ফলে সেখানে উঠে পড়েন অনেক পুরুষ যাত্রী। তাঁদের অনেকে দাবি করেন, অজান্তে উঠে পড়েছেন মহিলা কামরায়। ফলে নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা কাটছে না মহিলা নিত্যযাত্রীদের একাংশের। মহিলা যাত্রীদের অনেকে যাত্রার মাঝপথে সাধারণ কামরায় চলে যেতে বাধ্য হন। খড়্গপুরের মালঞ্চর বাসিন্দা কলকাতার একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী মনীষা সিংহ বলেন, “আমি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কাজ করি। অনেকদিন রাতের লোকাল ট্রেনে বাড়ি ফিরি। আগে দেখতাম মহিলা আরপিএফ থাকত। কিন্তু এখন মহিলা কামরা মেচেদার পরেই ফাঁকা হয়ে যায়। কোনও আরপিএফ ও জিআরপি থাকে না। সেই সময়ে একাংশ যুবকের উৎপাতে কামরা বদলাতে হয়।” রেলের সিনিয়ার ডিভিশনাল সিকিয়োরিটি কমিশনার বিবেকানন্দ নারায়ণন বলেন, “আসলে মহিলা কামরায় মহিলা আরপিএফ দিতে হয়। সেটা সবসময়ে সম্ভব হয় না। তবে স্টেশনে নজরদারি চলে। তবে আমরা এ বার বিষয়টি ভেবে দেখব।”

South Eastern Railways Baghajatin Passenger GRP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy