Advertisement
০২ মে ২০২৪
TMC Party Office

তৃণমূল কার্যালয়ে আগুন, শুরু টানাপড়েন

তমলুক থেকে দমকলের একটি ইঞ্জিন এসে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনে। কার্যালয়ে থাকা ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচির কিট, ভোটার তালিকা-সহ বিভিন্ন নথি ও আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায় বলে দাবি।

পুড়ে গিয়েছে কার্যালয়।

পুড়ে গিয়েছে কার্যালয়। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:৪৩
Share: Save:

গত বছর কার্যালয়টি পাঁশকুড়া ব্লক তৃণমূলের শাখা অফিস হিসাবে নতুনভাবে উদ্বোধন করা হয়েছি। সপ্তাহখানেক আগেই সেই কার্যালয়েই এসে বৈঠক করেছেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। পাঁশকুড়ার গোবিন্দনগর এলাকার মঙ্গলদ্বারির ওই কার্যালয়টিই বুধবার রাতের অন্ধকারে পুড়ে ছাই হয়ে গেল। দলীয় কার্যালয়ে বিরোধীরা আগুন ধরিয়েছে— এই অভিযোগে বৃহস্পতিবার মঙ্গলদ্বারিতে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক তৃণমূল অবরোধ করে। যদিও বিরোধীদের দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে ওই অগ্নিকাণ্ড।

মঙ্গলদ্বারি বাজারে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে ২০০৯ সালে তৃণমূল একটি দলীয় কার্যালয় তৈরি করে। দীর্ঘদিন সেটি বন্ধ অবস্থায় পড়েছিল। গত বছর সেপ্টেম্বরে সেটি পাঁশকুড়া ব্লক তৃণমূলের শাখা অফিস হিসাবে চালু করা হয়। গত ১২ জানুয়ারি কার্যালয়ে ব্লকের কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেন কুণাল। বুধবার রাত ৯টাতেও ওই অফিসে ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচি নিয়ে তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক সভাপতি সুজিত রায় বৈঠক করেছিলেন। রাত ১০টার পর অফিস বন্ধ করে সবাই বাড়ি চলে যান। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই রাত সওয়া ১২ টা নাগাদ কার্যালয়ে আগুন ধরে যায়। খবর পেয়ে রাতেই যান তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। স্থানীয়দের সঙ্গে তাঁরা সাব মার্সিবল পাম্প চালিয়ে আগুন নেভাতে শুরু করেন। খবর দেওয়া হয় দমকলে। তমলুক থেকে দমকলের একটি ইঞ্জিন এসে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ততক্ষণে কার্যালয়ে থাকা ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচির কিট, ভোটার তালিকা-সহ বিভিন্ন নথি ও আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায় বলে দাবি।

কী ভাবে আগুন লাগল, তা নিয়ে চর্চা চলছে। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণল ঘোষ বলেন, ‘‘যাঁরা তৃণমূলকে সহ্য করতে পারেন না, তাঁরাই এই অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। দলীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের পিছনে বাম ও বিজেপির হাত রয়েছে।’’ আর তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সুজিত বলেন, ‘‘এটি কোনও দুর্ঘটনা নয়। পাঁশকুড়ার তিনটি সমবায়ে আমরা জয়ী হয়েছি। আগামী রবিবার এই এলাকার ধনঞ্জয়পুর-গোবিন্দনগর সমবায়ে নির্বাচন রয়েছে। গণতান্ত্রিক ভাবে আমাদের সঙ্গে না পেরে ওঠে বিরোধীরা এই কাজ করেছে। পাঁশকুড়া থানায় এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।’’ ঘটনার প্রতিবাদে এদিন বিকেলে মঙ্গলদ্বারিতে পদযাত্রা ও পথসভা করে তৃণমূল। ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধও করে তারা।

বিজেপির অবশ্য অভিযোগ, তৃণমূলের কোন্দলেই ওই ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, সুজিত রায় তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক সভাপতি হওয়ার পর গোবিন্দনগর এলাকার পুরনো কর্মীদের একাংশ কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। দলে পুরোনোরা গুরুত্ব পাচ্ছে না অভিযোগ করে গত ১১ জানুয়ারি ওই এলাকায় কুণালের সামনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক ওমর আলির ছেলে মুসলেম আলি। এর পরে ১২ জানুয়ারি মঙ্গলদ্বারির অফিসে বৈঠক চলাকালীনও কুণালের সামনে দলবল নিয়ে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের প্রাক্তন নেতা শেখ মুজিবর রহমান ও তাঁর অনুগামীরা। এর পরেই ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক দেবব্রত পট্টনায়েকের কথায়, ‘‘বিজেপি নোংরা রাজনীতি করে না। কয়েকদিন আগে ওই পার্টি অফিসের মধ্যে কুণাল ঘোষের সামনে শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর গোলমাল হয়েছিল। তৃণমূল নেতা সুজিত রায় ও সুধাংশু আদকের নামে দুর্নীতির লিফলেট পড়েছিল। শাসক দলের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরেই এই ঘটনা।’’ আর বামেদের অভিযুক্ত করা প্রসঙ্গে সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক ইব্রাহিম আলি বলেন, ‘‘যিনি এ কথা বলছেন তাঁর মাথা ঠিক নেই। আমরা মনে করি তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বের ফলে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Party Office Fire
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE