Advertisement
০৩ মে ২০২৪
প্রশ্ন পুলিশের নজরদারিতে

জলবোমায় ছাত্র-সহ জখম তিন

আহতদের সকলকেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শব্দবাজিতে জখম একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। 

হাসপাতালে ভর্তি আহত অমিত। নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালে ভর্তি আহত অমিত। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৮ ০২:১৩
Share: Save:

বাজি ফাটানো নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ এবং নিষিদ্ধ শব্দবাজি নিয়ে পুলিশি তৎপরতার দাবির পরেও জেলায় নিষিদ্ধ শব্দবাজিতে গুরুতর জখম হলেন তিনজন। আহতদের সকলকেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শব্দবাজিতে জখম একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে ময়না, চণ্ডীপুর ও নন্দকুমার এলাকার কয়েকজন জলবোমা ফাটাতে গিয়ে মারাত্মক জখম হন। ময়না থানার চংরা গ্রামে মঙ্গলবার রাত ৮টা নাগাদ ছেলে-মেয়েদের নিয়ে বাড়ির সামনে জলবোমা ফাটাতে গেলে আচমকাই সেটি অমিত সামন্তর হাতে ফেটে যায়। গিয়েছে। রাতেই তাঁকে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে তাঁকে কলকাতায় হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অমিতের কথায়, ‘‘জলবোমায় আগুন ধরানোর পরেও আগুন জ্বলেনি। আগুন নিভে গিয়েছে ভেবে হাতে নিয়ে নাড়াচ্ছিলাম। হঠাৎই সেটি প্রচণ্ড শব্দে ফেটে যায়। ডান হাতের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।’’

একইভাবে জলবোমা ফাটাতে গিয়ে আহত হয়েছে চণ্ডীপুর থানার নন্দপুর গ্রামের এক স্কুলছাত্র শুভঙ্কর মাইতি। বছর চোদ্দোর ওই কিশোর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পাড়ার সঙ্গীদের নিয়ে বাজি ফাটাচ্ছিল। একটি জলবোমা ফাটতে দেরি করায় সে সেটি তুলে হাতে নেওয়ার সময় ফেটে যায়। এই কিশোরের ডানহাতের তিনটি আঙুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাতেই তাকে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এদিনই রাতে নন্দকুমার থানার কোলসর গ্রামেও জলবোমা ফাটাতে গিয়ে আহত হন সঞ্জয় দাস নামে বছর আঠারোর এক যুবক। তাঁকেও তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনটি ক্ষেত্রেই জলবোমায় জখম হওয়ার ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে নিষিদ্ধ শব্দবাজি তৈরি ও বিক্রি রুখতে পুলিশের অভিযান নিয়ে। কালীপুজোর আগে এ সবের বিরুদ্ধে পুলিশ লাগাতার অভিযানের দাবি করলেও যে ভাবে এই সব নিষিদ্ধ শব্দবাজি স্কুলপড়ুয়া থেকে কিশোর-যুবকদের হাতে চলে আসছে তা নিয়ে পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।

প্রশ্ন উঠেছে গাছবোমা, জলবোমার মতো বাজির ক্ষতিকর দিক নিয়ে মানুষের অসচেতনতা নিয়েও। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গাছবোমা বা জলবোমায় প্রচুর পরিমাণ বারুদের সঙ্গে স্টোনচিপস থাকে। শব্দের মাত্রা বা়ড়াতে ওই স্টোন চিপস ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের নিষিদ্ধ বাজি ফাটালে বাজিতে থাকা স্টোনচিপস ছিটকে গুরুতর জখম হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যেমনটি হয়েছে ময়না, চণ্ডীপুর ও নন্দকুমারে ঘটনায়। পুলিশের একাংশ জানিয়েছেন এই ধরনের বাজিকে বোমার ক্ষুদ্র সংস্করণ বললেও ভুল হবে না। কারণ বোমায় যে ধরনের ক্ষতি এমনকী মারা যাওয়ার সম্ভাব না রয়েছে, সেই ধরনের মালমশলার অনেকটাই ব্যবহার হয় এই সব নিষিদ্ধ শব্দবাজি তৈরিতে।

জেলা পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিকের অবশ্য দাবি, ‘‘দুর্গাপুজোর সময় থেকে বেআইনি শব্দবাজি তৈরি ও বিক্রির বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান শুরু হয়েছিল। ময়না, পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, কাঁথি এলাকা থেকে কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। প্রচুর শব্দবাজি উদ্ধারও করা হয়েছে।’’ তিনি জানান, যে ধরনের বাজি (জলবোমা) ফেটে এঁরা জখম হয়েছেন সেই বাজি তাঁরা কী ভাবে সংগ্রহ করলেন তা খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Violence Fire Crackers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE