Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Bird Smuggling

ক্রেতা সেজে উদ্ধার টিয়া

ধৃত সৌমেন দাস মহন্ত ও অনন্ত বিশুইকে শনিবার গড়বেতা আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ হয়। ধৃতদের বিরুদ্ধে বণ্যপ্রাণী আইনের ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।

উদ্ধার হওয়া টিয়াপাখির ছানা। ছবি বন দফতরের সৌজন্যে

উদ্ধার হওয়া টিয়াপাখির ছানা। ছবি বন দফতরের সৌজন্যে

নিজস্ব সংবাদদাতা
 বিষ্ণুপুর, গড়বেতা শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:০৯
Share: Save:

টিয়ার ছানা বিক্রির জন্য সমাজমাধ্যমে ভিডিয়ো ‘পোস্ট’ করা হয়েছিল। বিষ্ণুপুর থেকে সেগুলি পাচার করা হয়েছে জানতে পেরে টনক নড়ে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের পাঞ্চেত বন বিভাগের। নির্দিষ্ট তালিকাভুক্ত ওই টিয়ার ছানা কে বা কারা বিক্রির চেষ্টা করছে, শুরু হয় খোঁজ-খবর। পরে, বিষ্ণুপুরের এক যুবকের সূত্রে জানা যায়, বিষ্ণুপুর থেকে পাচার হয়ে ওই পাখিগুলি গিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। সেখানকার হুমগড় রেঞ্জের আমলাশুলি গ্রামের কয়েক জন পাখি কেনা-বেচায় যুক্ত। ক্রেতা সেজে ওই গ্রামে গিয়ে টিয়ার ছ’টি ছানা উদ্ধার করেন বনকর্মীরা। ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত সৌমেন দাস মহন্ত ও অনন্ত বিশুইকে শনিবার গড়বেতা আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ হয়। ধৃতদের বিরুদ্ধে বণ্যপ্রাণী আইনের ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।

বন দফতরের হুমগড় রেঞ্জের রেঞ্জার বাবলু মান্ডি ফোনে স্থান, সময় সব ঠিক করে নেন। তার পরে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার মধ্যে হুমগড় রেঞ্জের আমলাশুলির শীতলপুর ফুটবল মাঠে ওই বনকর্তা সাধারণ পোশাকে সঙ্গী কয়েক জনকে নিয়ে পৌঁছে যান। ক্রেতা আসবেন খবর পেয়ে আগে থেকে মাঠে ঘোরাঘুরি করছিল সৌমেন ও অনন্ত। ‘ক্রেতা’ সেজে যাওয়া বনকর্মীরা ৬টি টিয়াপাখির ছানা কেনার জন্য দরদাম শুরু করেন। ওই দু’জন ৮ হাজার টাকা দাম বললে বনকর্মীরা ৭ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলেন। শেষে ৮ হাজারেই রফা হয়। তাঁরা টিয়াপাখি আনতে বলেন। এক জন বনকর্মীদের সঙ্গেই থেকে যান। অন্য জন মাঠের বাইরে ঝোপঝাড় থেকে ৬টি টিয়ার ছানা নিয়ে আসে।

রেঞ্জার বাবলু বলেন, ‘‘তার পরেই সৌমেন ও অনন্ত নামে ওই দু’জনকে টিয়াপাখি-সহ হাতেনাতে আটক করি আমরা। সন্ধ্যায় ওদেরকে নিয়ে বাড়িতেও তল্লাশি করি।’’

ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বন দফতর জানিয়েছে, টিয়াপাখি পাচারের এই চক্র বেশ কিছু দিন ধরেই চলছিল। মনে করা হচ্ছে ঝাড়খণ্ড থেকে টিয়াপাখি এনে এখানে চড়া দামে বিক্রি করা হত।

বিষ্ণুপুরের পাঞ্চেত বনবিভাগের ডিএফও অঞ্জন গুহ বলেন, “সমাজমাধ্যমে পাখি বিক্রির খবর পেয়ে ক্রেতা সেজে আমাদের কর্মীরা যোগাযোগ করতে শুরু করেন বিক্রেতাদের সঙ্গে। সূত্র ধরে তাঁরা পৌঁছে যান পশ্চিম মেদিনীপুরের আমলাশুলি গ্রামে। শুক্রবার সন্ধ্যায় স্থানীয় হুমগড় রেঞ্জের কর্মীদের সঙ্গে যৌথ অপারেশন চালিয়ে পাখির বাচ্চাগুলি উদ্ধার করা হয়। দুই অভিযুক্তকে তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে।”

তিনি আরও জানান, বিভিন্ন সময়ে নানা মেলায় অভিযান চালিয়ে তালিকাভুক্ত পাখি বিক্রি অনেকটা বন্ধ করা গিয়েছে। ধরপাকড় সত্ত্বেও তবে অনেক সময়ে চুপিসাড়ে পাখি পাচারের ঘটনা ঘটে। সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন, এই ধরনের ঘটনা চোখে পড়লে বনকর্মীদের জানান। তাঁদের পরিচয় গোপন রাখা হবে।

বন দফতরের পদক্ষেপে খুশি বিষ্ণুপুরের পক্ষীপ্রেমীরা। তাঁদেরই এক জন দেবার্ণব সেন জানান, এ ভাবে পাখি উদ্ধারে অভিযান হলে অপরাধীরা ভয় পাবে। পাখি পাচারের প্রবণতাও কমবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bishnupur Garbeta
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE