E-Paper

জিও হেরিটেজ স্বীকৃতি পেল গনগনি

জিএসআইয়ের এই ঘোষণায় গনগনির আর্থিক সংস্থান না হলেও, এতে ভূ - গবেষকদের কাছে নতুন এক দিগন্ত খুলে যাবে বলে মনে করছেন অনেকেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২৫ ০৯:১৯

‘জিও-হেরিটেজ’ স্বীকৃতি পেল গনগনি। এই তথ্য জানিয়ে গনগনিতে বোর্ড বসিয়েছে ভারতীয় ভূবৈজ্ঞানিক সর্বেক্ষণ বা জিওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (জিএসআই)।

ভারত সরকারের খনি মন্ত্রণালয়ের অধীন এই বিভাগের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমবঙ্গ শাখার প্রতিনিধিরা গত ২১ জুন গনগনিতে এসে গড়বেতা ১ ব্লক প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে এই বোর্ড বসিয়ে গিয়েছেন। এই স্বীকৃতি মেলায় ভবিষ্যতে গনগনিকে কেন্দ্র করে ভূ-গবেষণার নতুন দিগন্ত খুলে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গনগনির এই স্বীকৃতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে রাজ্যের পর্যটন দফতরও।

জিএসআই-এর পশ্চিমবঙ্গ শাখার উপ-মহানির্দেশক শান্তনু ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘জিওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া গনগনিকে ‘জিও হেরিটেজ সাইট’ ঘোষণা করেছে। এর গুরুত্ব বোঝাতে বোর্ড বসিয়েছি। রাজ্যের আরও দু’টি স্থানকে জিও হেরিটেজের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে— সুন্দরবন ও বোলপুরের কাছে আমখই। আমখইতে জীবাশ্ম পার্ক আছে। এই দুই স্থানেও আমরা বোর্ড বসাব।’’ গনগনিতে লোহার খুঁটির উপরে বসানো বোর্ডে বাংলা, হিন্দি, ইংরেজিতে গনগনির ছবি দিয়ে ভূ-বৈচিত্রের গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য বোঝানো হয়েছে। সেই বোর্ডে জিএসআই গনগনিকে ‘বাংলার গ্র‍্যান্ড ক্যানিয়ন’ বলে উল্লেখ করে লিখেছে— ‘এটিকে (গনগনি) মধ্যম-স্তরীয় ভূ-আকৃতি বিজ্ঞান হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে, যা বহু স্তরের ল্যাটেরাইটের উপর বিকশিত।’

জিএসআইয়ের এই ঘোষণায় গনগনির আর্থিক সংস্থান না হলেও, এতে ভূ - গবেষকদের কাছে নতুন এক দিগন্ত খুলে যাবে বলে মনে করছেন অনেকেই। যেমন, গনগনি নিয়ে গবেষণা করা ভূগোলের শিক্ষক শুভেন্দু ঘোষ বলছেন, "এটা খুব ভালো খবর। ভবিষ্যতে ছাত্র, শিক্ষক, গবেষকদের কাছে এক নতুন দিগন্ত খুলে যাবে। এই স্বীকৃতিতে আর্থিক সংস্থান হয়তো হবে না, কিন্তু এখান থেকে পর্যবেক্ষকদের পর্যবেক্ষণে আরও নতুন নতুন ভূতাত্ত্বিক তথ্য বেরিয়ে আসবে। দেশের ভূ - পর্যটন মানচিত্রে অচিরেই জায়গা করে নেবে গনগনি।"

গনগনির এই স্বীকৃতিতে খুশি রাজ্যের পর্যটন দফতর। দফতরের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট মৃদুল শ্রীমানি বলেন, ‘‘এটা হওয়ারই কথা ছিল। আশাকরি বাংলার সাধারণ মানুষ এই গ্র‍্যান্ড ক্যানিয়ন দেখতে আসবেন। এর যে ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য, তা যাতে রক্ষিত হয় সেটা দেখতে হবে।’’ গড়বেতা ১-এর বিডিও রামজীবন হাঁসদার কথায়, ‘‘গনগনিতে বোর্ড বসানোর জন্য জিওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া আমার কাছে অনুমতি নিতে এসেছিল। ওরা বোর্ড বসিয়েছে।’’

শুধু জিও-হেরিটেজ স্বীকৃতি দেওয়া নয়, গনগনির বৈশিষ্ট্য সর্বত্র ছড়িয়ে দিতেও উদ্যোগী হয়েছে ভারতীয় ভূবৈজ্ঞানিক সর্বেক্ষণ। গনগনিকে নিয়ে একটি বিশেষ ভিডিয়ো তৈরি করেছে জিএসআইয়ের রাজ্য শাখা। রাজ্যের উপ-মহানির্দেশক বলছেন, ‘‘এই ভিডিয়ো পর্যটক, ছাত্রছাত্রী ও ভূ-গবেষকদের গনগনির গুরুত্ব বোঝাতে সাহায্য করবে। তা জাতীয় স্তরে সম্প্রচারের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Garbeta

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy