Advertisement
E-Paper

বড়দিনের চোট, বিপদে জেলার সবুজ

দেখেও দেখে না প্রশাসন। অথচ, সর্বত্রই রয়েছে নিরাপত্তারক্ষী। সচেতনতা নেই পর্যটকদের মধ্যেও।

অভিজিৎ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:০৮
জঞ্জাল: ঘাটালের হরিসিংহপুর পার্কে পড়ে রয়েছে থার্মোকলের থালা-বাটি এবং আবর্জনা। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

জঞ্জাল: ঘাটালের হরিসিংহপুর পার্কে পড়ে রয়েছে থার্মোকলের থালা-বাটি এবং আবর্জনা। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

সবে কেটেছে বড়দিন, এখন বাকি গোটা জানুয়ারি মাস! এরই মধ্যে পিকনিক-দূষণে নাভিশ্বাস প্রকৃতির। নদী, বিল, পার্ক, বাগান— ছাড় নেই কারও।

ঘাটালের হরিসিংহপুর পার্ক, দাসপুরের প্রদ্যোত শিশু উদ্যান, চন্দ্রকোনা রোডের পরিমল কানন বা গড়বেতার গনগনি থার্মোকলের থালা-বাটির নীচে চাপা পড়েছে পরিবেশ। নদীর পাড়ে বা ঝিলের ধারে জমে উঠেছে আনাজের খোসা, তেল-মসলা, আলু ভাজার প্যাকেট। দেখেও দেখে না প্রশাসন। অথচ, সর্বত্রই রয়েছে নিরাপত্তারক্ষী। সচেতনতা নেই পর্যটকদের মধ্যেও।

বড়দিন আর ইংরাজি নববর্ষের আগে পরে প্রতিবছরই পিকনিক করতে পশ্চিম মেদিনীপুরের আসেন নানা প্রান্তের মানুষ। বিভিন্ন বনাঞ্চল, পিকনিক স্পটগুলিতে উপচে পড়ে ভিড়। এ দিক সে দিক ঘুরে ফিরে যান তাঁরা। কিন্তু তারপর আর পিছন ফিরে তাকান না প্রকৃতির দিকে।

অভিযোগ, প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বেশিরভাগ মানুষই পিকনিক করতে এসে ব্যবহার করছেন থার্মোকলের থালা, বাটি। আবর্জনা ফেলার ভ্যাট থাকলেও তা ব্যবহার করেন না পর্যটকরা। এমনকী পার্কের মধ্যে, ঝিলের ধারে, গনগনিতে শিলাবতীর পাড়ে স্তূপাকারে জমা হয়েছে মাংসের হাড়, মাছের কাটা, উচ্ছিষ্ট ভাত। সে সবের উপর দিয়েই ঘুরে বেড়ান অনেকে। উত্তরে হাওয়ায় সারা মাঠে ছড়িয়ে পড়ে প্লাস্টিক, থার্মোকল।

সঙ্গে রয়েছে দেদার মদ্যপান। যত্রতত্র পড়ে থাকে ভাঙা মদের বোতল। প্রকাশ্যে মদ্যপানে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও, তা মানে ক’জন! জোরদার গানা-বাজানার সঙ্গে মদ্যপায়ীদের নাচ উপরি পাওনা হিসাবে জোটে বলে অভিযোগ করেন একাংশ পর্যটক। আশপাশে পুলিশ ঘুরে বেড়ালেও কোনও পদক্ষেপ করা হয় না। উত্তর ২৪ পরগনার ব্যরাকপুর থেকে চন্দ্রকোনা রোডের পরিমল কাননে সপরিবারে পিকনিক করতে এসেছিলেন সুবিনয় দত্তের। তাঁর কথায়, “পরিমল কাননের বেশ নামডাক রয়েছে। কিন্তু এখানে এসে দেখি পরিবেশ মোটেই ভাল না। প্রকাশ্যেই মদ খাওয়া চলছে। আমরা পরিবার নিয়ে এসেছি, ছোটদের সঙ্গে এ ভাবে ঘোরা যায় না। এমনকী কখন কী অঘটন ঘটে যায় সেই ভয়েই কাঁটা হয়ে রইলাম। আনন্দটাই মাটি হল।’’ তাঁর অভিযোগ, নিরাপত্তা রক্ষীদের সামনেই মদ্যপান করেছেন একদল পর্যটক।

যদিও পুলিশের দাবি, গনগনি-সহ একাধিক পিকনিক স্পটে মদ্যপানে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া রয়েছে। কাউকে আইন ভাঙতে দেখলে পদক্ষেপও করা হয়। মঙ্গলবার ঘাটালের হরিসিংহপুর পার্কে গিয়ে দেখা গেল, পাশের ঝিলের ধারে ডাঁই হয়ে জমে রয়েছে থালা-বাটি। একই ছবি ঘাটালের সাধুর বাঁধেও। দাসপুরের প্রদ্যোত শিশু উদ্যানটিকেও যথেচ্ছ ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। অথচ, সবক’টি এলাকাই দেখভালের জন্য রক্ষী নিয়োগ করা হয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত সমিতির উদাসীনতাই এমন পরিস্থিতির কারণ।

তবে মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা অবশ্য বলছেন, “পযর্টকদেরও বিষয়টি বুঝতে হবে। আমরা সচেতনতা করছি। মাইকে প্রচারও করা হচ্ছে। এ বার নিময় ভাঙলে ব্যবস্থা নেব।” ঘাটালের হরিসিংহপুর পার্ক প্রসঙ্গে ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি দিলীপ মাঝির সাফ বক্তব্য, “ওই সব দেখার জন্য পার্কে ঠিকা কর্মী নিযুক্ত করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও কেন এমন পরিস্থিতি, খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করব।’’

Garbage Picnic
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy