প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বড় কাট আউট। সঙ্গে ‘পিএম কিসান সম্মাননিধি’র ছবি। যার নীচে লেখা 'ইয়ে হ্যায় নয়া ভারত’। গড়বেতা রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে রাখা হয়েছে এই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ঢাউস মডেল। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
দক্ষিণ পূর্ব রেলের আদ্রা-খড়্গপুর শাখার অন্যতম বড় স্টেশন গড়বেতা। নিত্যযাত্রী, ব্যবসায়ী, কৃষক, ছাত্রছাত্রী-সহ বিভিন্ন পেশার প্রচুর মানুষ এই স্টেশন থেকে যাতায়াত করেন। লম্বা সেই স্টেশনের প্রায় মধ্যবর্তী স্থানে ১ ও ২ নম্বর প্লাটফর্মের মাঝে কয়েকদিন আগেই বসানো হয়েছে কেন্দ্রীয় প্রকল্প ‘পিএম কিসান সম্মাননিধি’র একটি মডেল। প্লাইউডের সেই মডেলে স্থান পেয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পূর্ণাবয়ব কাট আউট ও ট্রাক্টর নিয়ে ফসলের খেতে কৃষকের ছবি। মাঝে স্ট্যান্ডের উপরে জাতীয় পতাকা। মডেলের মাঝেই ইংরেজিতে ‘পিএম কিসান সম্মাননিধি’র সাথে লেখা বছরে কৃষকদের ৬ হাজার টাকা দেওয়ার কথা। নীচে হিন্দিতে বড় বড় করে লেখা, ‘ইয়ে হ্যায় নয়া ভারত’। যা দেখে দু'দণ্ড দাঁড়িয়ে পড়ছেন ট্রেনযাত্রীরা। অনেকে মোবাইলে ছবি তুলে রাখছেন। উৎসাহীরা প্রধানমন্ত্রীর কাট আউট সামনে রেখে নিজস্বীও তুলছেন। জানা গিয়েছে, রেলের পক্ষ থেকে এই ঢাউস কাট আউটটি স্টেশনের মধ্যে রাখা হয়েছে। যদিও আদ্রা ডিভিশনের সিনিয়র ডিসিএম রাজকুমার প্রসাদ বলছেন, ‘‘গড়বেতা স্টেশনে কাট আউট-সহ এরকম মডেল রাখা হয়েছে কি না, খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
লোকসভা নির্বাচনের আগে রেলস্টেশনের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের এই মডেল ঘিরে তরজা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকারকে একযোগে বিঁধছে তৃণমূল, কংগ্রেস, বামেরা। তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, "বিজেপি বুঝতে পেরেছে দশ বছরে ভারতবর্ষকে বেহাল করায় মানুষের কাছে তাদের আস্থা কমেছে। ২০২৪ সালে এ দেশের মানুষ তাদের আর আনবেন না। যতগুলি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা আছে তার তো ৮০ শতাংশ বিক্রিই করে দিয়েছে কেন্দ্রের সরকার। বাকি ২০ শতাংশ যে আছে, সেগুলিও বিজেপি প্রচারের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করছে।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘এখন মোদীর ছবি দিয়ে রেলওয়েকেও ব্যবহার করছে বিজেপি। নিজেদের বাঁচার এই প্রয়াসও তাদের এ বার কাজে লাগবে না।" কংগ্রেসের গড়বেতা ১ ব্লক সভাপতি ভৈরব রায় খোঁচা দিয়ে বলছেন, "সারের মূল্যবৃদ্ধি ঢাকা দিতেই কি পিএম কিসানের মডেল দিয়ে প্রচার করা হচ্ছে? রেলস্টেশনে এই প্রচার বিজেপির দেউলিয়াপনা রাজনীতির একটা উদাহরণ।" সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য দিবাকর ভুঁইয়ার কটাক্ষ, "রেলের বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে আমরা বরাবর সরব হচ্ছি। এখন রেলকে ব্যবহার করে বিজেপির কেন্দ্রীয় সরকার নিজেদের প্রচার সারছে নির্লজ্জ ভাবে।"
বিরোধীদের খোঁচাকে আমল না দিয়ে বিজেপির রাজ্য কমিটির নেতা প্রদীপ লোধা বলছেন, "বিরোধীরা কেন্দ্রের উন্নয়নে পেরে উঠতে না পেরে শুধুই রাজনীতি করে। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পের কথা প্রতি রেলস্টেশনে মডেল করে দেখাচ্ছে রেল। এতে সাধারণ মানুষ জানতে পারছেন, পিএম কিসান নিধির মডেল প্রচার কৃষকদের কাছেও পৌঁঁছাচ্ছে, এটা ভাল দিক।"
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)