Advertisement
E-Paper

ছেলেদের টেক্কা দিয়ে ফলাফলে এগিয়ে মেয়েরা

ছেলেদের অনেকটাই পিছনে ফেলে এগিয়ে এল মেয়েরা। উচ্চ মাধ্যমিকে ফলাফলের নিরিখে এটাই দেখা গেল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। শুধু মাত্র সার্বিক ফলাফলে নয়, স্কুলে প্রথম হওয়ার ক্ষেত্রেও এগিয়ে রয়েছে ছাত্রীরা। আর এমন ফলের পর স্কুলের শিক্ষকেরাও বেজায় খুশি। তাঁদের অভিমত, শিক্ষার আঙিনায় মেয়েদের প্রাধান্য বাড়লে আখেরে লাভ সমাজের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৫ ০০:৫৬

ছেলেদের অনেকটাই পিছনে ফেলে এগিয়ে এল মেয়েরা।

উচ্চ মাধ্যমিকে ফলাফলের নিরিখে এটাই দেখা গেল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। শুধু মাত্র সার্বিক ফলাফলে নয়, স্কুলে প্রথম হওয়ার ক্ষেত্রেও এগিয়ে রয়েছে ছাত্রীরা।

আর এমন ফলের পর স্কুলের শিক্ষকেরাও বেজায় খুশি। তাঁদের অভিমত, শিক্ষার আঙিনায় মেয়েদের প্রাধান্য বাড়লে আখেরে লাভ সমাজের। শুধুমাত্র কর্মক্ষেত্রে মেয়েদের প্রাধান্য বাড়বে তা-ই নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুশিক্ষিত করতেও তাঁরাই প্রধান সহায়। স্বাভাবিক নিয়মেই সার্বিক শিক্ষার হারও বাড়বে।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এ বার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল ৪২,১৭৩ জন। তার মধ্যে ছাত্র সংখ্যা ২১,৫২৪ ও ছাত্রী ছিল ২০,৬৪৯ জন। উত্তীর্ণ ছাত্রের সংখ্যা ১৮,১৭১ অর্থাৎ প্রায় ৮৪ শতাংশ। আর উত্তীর্ণ ছাত্রীর সংখ্যা ১৮,৬১৫ জন। অর্থাৎ ৯০ শতাংশের একটু বেশি।

এ তো গেল সার্বিক ফলাফল। স্কুল ভিত্তিক ফলাফলের দিকে নজর রাখলেই দেখা যাচ্ছে বহু স্কুলের প্রথম স্থানে রয়েছে ছাত্রীরা। ধরা যাক, চন্দ্রকোনা রোড সারদাময়ী বিদ্যালয়ের কথা। বিজ্ঞান বিভাগে ৪৭৪ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছে তৃণা চৌধুরী, আবার কলা বিভাগেও ৪৫৫ পেয়ে প্রথম হয়েছে পিউ কুণ্ডু। একই ঘটনা শালবনি এনএম হাইস্কুলেও। সেখানে আবার বিজ্ঞানকে পিছনে ফেলে প্রথম স্থান পেয়েছে কলা বিভাগের ছাত্রী দীপ্তি মহাপাত্র। তার প্রাপ্ত নম্বর ৪১১।

শুধু এই দু’টি স্কুলই নয়। শালবনির নান্দারিয়া হাইস্কুল বা ভাদুতলা, হুমগড় চাঁদাবিলা হাইস্কুল, কেশপুরের তোড়িয়া হাইস্কুল হোক বা মেদিনীপুর সদর ব্লকের নেপুরা হাইস্কুল, ডেবরা ব্লকের ডেবরা উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয় হোক বা খড়্গপুর গ্রামীণের মাদপুর হাইস্কুল— সব স্কুলের প্রথম স্থানে রয়েছে সেতারা খাতুন, সুচরিতা রায়, রুম্পা মাসান্ত বা বাসন্তী মুর্মুরা।

ভাদুলতা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিতেশ চৌধুরীর কথায়, “আমাদের স্কুলে শুধু প্রথম স্থানেই একজন ছাত্রী রয়েছে— এমন নয়, এ বার স্কুলে ১১ জন প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে। তার মধ্যে ৮ জনই ছাত্রী।”

কী ভাবে এই সাফল্য এল? অমিতেশবাবুর কথায়, “ছেলেদের অনেক সময় চাষের কাজে পরিবারকে সাহায্য করতে হয়। মেয়েদের ক্ষেত্রে সেটা কম। ফলে মেয়েরা পড়ার সূযোগ কম পায়।” হুমগড় চাঁদাবিলা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামলকান্তি ষণ্ণিগ্রাহীর কথায়, “ছেলেরা কিছুটা বহির্মুখী। ফলে বাইরের খারাপ প্রভাবও সহজে ছাপ ফেলে।’’

তবে শুধুমাত্র পড়ার পাশাপাশি কাজের কারণেই ছেলেদের ফল খারাপ তা মানতে রাজি নন ডেবরা উচ্চতর বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিশ্বরঞ্জন খামরুই। তাঁদের স্কুলে এ বার যে মেয়েটি প্রথম হয়েছে সেই বাসন্তী মুর্মু যে অতি গরিব পরিবারের মেয়ে। পড়ার পাশাপাশি বাবার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ধান রোওয়ার কাজ করতে হয় তাকে, ধান কাটতে পারে। আবার মাকে সাহায্য করতে রান্নাও করতে হয় হতদরিদ্র পরিবারের এই মেয়েটিকে।

বাসন্তীর কথায়, “টাকার অভাবে দুই দাদাকে পড়া ছাড়তে হয়েছে। আমারও আর পড়া হবে কিনা জানি না। বাবার সঙ্গে চাষের কাজ, মায়ের সঙ্গে বাড়ির কাজ করেই আমি যেটুকু সময় পড়েছি রাতে পড়েছি।” আর তাতেই কলা বিভাগে পড়া এই চাত্রী ৪২৪ পেয়ে স্কুলের শীর্ষে স্থান পেয়েছে বাসন্তী।

বেশিরভাগ শিক্ষকের কথাতেই, বাইরে কুপ্রভাব, অত্যধিক মোবাইল ব্যবহার, আড্ডার ঝোঁক, তার মধ্যে আবার খেলাধুলো— এসব করতে গিয়েই পিছিয়ে যাচ্ছে ছেলেরা।

HS result 2015 midnapore girl boy student HS result news
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy