—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পাড়ার মধ্যে সাতটি বাড়িতে রমরমিয়ে চলা চোলাই ঠেক বন্ধের দাবি দীর্ঘদিনের। বারবার মৌখিক অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা না হওয়ায় এককাট্টা হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন পাড়ার একাংশ মহিলা। চাপের মুখে এলাকার কয়েকজন মদ্যপকে পুলিশ আটক করতেই অভিযোগকারীদের বাড়ি ঘেরাও করল অবৈধ মদ কারবারিরা। হুমকি, দরজায় লাথির সঙ্গে চলল অভিযোগ প্রত্যাহারের দাবি। শঙ্কিত মহিলারা এ বার পরিস্থিতির বদলে দ্বারস্থ হলেন মহিলা পুরপ্রধানের!
রবিবার সন্ধ্যা থেকে খড়্গপুর শহরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাজোয়ালের পটনা পাড়ায় এই নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এই পাড়ার ভিতরেই সাতটি বাড়িতে রমরমিয়ে চোলাই ঠেক চলছে বলে অভিযোগ। এর জেরে পথে চলতেও নিরাপত্তার অভাবে ভুগছেন মহিলারা। কিশোর বয়সেই নেশায় বুঁদ হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। পরিস্থিতির বদলে বছর দু’য়েক ধরে স্থানীয় মহিলারা বারবার স্থানীয় কাউন্সিলর থেকে পুলিশে মৌখিক অভিযোগ জানালেও মদের ঠেক বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ। দিন দু’য়েক আগে এককাট্টা হয়ে খড়্গপুর টাউন পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন পাড়ার মহিলারা। এরপরই বদলায় পরিস্থিতি। চাপের মুখে শনিবার রাতে এলাকায় হানা দিয়ে কয়েকজন মদ্যপকে আটক করে নিয়ে যায় টাউন পুলিশ। তবে প্রকৃত মদ কারবারিদের গ্রেফতার করা হয়নি বলে অভিযোগ। যদিও পুলিশের দাবি, পুলিশ হানা দিতেই মদ কারবারিরা সতর্ক হয়ে যাওয়ায় হাতেহাতে তাদের ধরা যায়নি। তার পরেই রবিবার সন্ধ্যায় অভিযোগযোগকারী মহিলাদের বাড়িতে চড়াও হয় চোলাই কারবারিরা। চলে গালিগালাজ, হুমকিও। অভিযোগ প্রত্যাহারে চাপ দিয়ে বাড়ির দরজায় ধাক্কা মারা হয় বলেও অভিযোগ।
নিরাপত্তার অভাব বুঝে থানায় ফোন করলেও পুলিশ আসতে দেরি করে বলে দাবি মহিলাদের। ঘণ্টাখানেক পরে হামলাকারীরা ফিরে যায়। তারপর অবশ্য ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে হামলাকারীদের থানায় দেখা করার নির্দেশ দিয়ে যায়। খড়্গপুর টাউন পুলিশের দাবি, ঘটনাটি জানার পরেই পুলিশ পাঠানো হয়। এই ঘটনায় শঙ্কিত অভিযোগকারী মহিলারা। তবে এলাকার চোলাই বন্ধে তাঁরা পিছিয়ে আসবেন না বলেই জানিয়েছেন। অভিযোগকারী বন্দনা পাত্র বলেন, ‘‘আমার বাবা মারা গিয়েছেন। মা ও আমি বাড়িতে থাকি। রবিবার সন্ধ্যায় মা বাড়িতে ছিল না। সেই সময়ে আমার বাড়িতে এসে হামলা করে ওই মদ কারবারিরা। এমনকি কিশোরদেরও সঙ্গে নিয়ে এসেছিল ওরা। আমাকে বলছিল ওদের কাজের ব্যবস্থা করে দিতে। কাজ নেই বলে কী কেউ পাড়ায় চোলাই ঠেক চালাতে পারে?’’ এ দিন ফের মহিলারা কয়েকজন গিয়ে চোলাই ঠেকের বিরুদ্ধে পুরপ্রধান কল্যাণী ঘোষের কাছে লিখিত জমা দেন। অভিযোগকারী বাসন্তী দাস বলেন, ‘‘রবিবার সন্ধ্যা থেকে যে ভাবে এই চোলাই কারবারিরা বাড়িতে হামলা করেছে, তাতে আমরা শঙ্কিত। কারণ ঘটনার সময় আইসি থেকে থানার পুলিশকে বারবার ফোন করেছি। প্রায় এক ঘণ্টা পরে যখন পুলিশ এসেছে, তখন হামলাকারীরা অভিযোগ প্রত্যাহারের হুমকি দিয়ে চলে গিয়েছে। ওরা বলেছে এই কারবার বন্ধ করবে না।’’ পুরপ্রধান কল্যাণী ঘোষ বলেন, ‘‘আমার কাছে ওই মহিলারা এসেছিলেন। একটা লিখিত দিয়েছে। এ ভাবে চলতে পারেনা। পাড়ার মধ্যে যারা এসব কারবার চালাচ্ছে তারা অভিযোগকারীদের বাড়িতে হামলা করবে, সেটা কাম্য নয়। পুলিশেরদেখা উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy