Advertisement
০১ মে ২০২৪

গলা কেটে খুন, গ্রেফতার স্বামী

বাড়ির ভিতরে চেয়ারের সঙ্গে হাত বাঁধার পরে স্ত্রীর গলা কেটে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে ময়না থানার পরমানন্দপুর গ্রামের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম রীতা রায় (৩৬)।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৫ ০১:১৬
Share: Save:

বাড়ির ভিতরে চেয়ারের সঙ্গে হাত বাঁধার পরে স্ত্রীর গলা কেটে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে ময়না থানার পরমানন্দপুর গ্রামের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম রীতা রায় (৩৬)। স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে তাঁর স্বামী সুব্রত রায়কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘পারিবারিক অশান্তির জেরে স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্ত্রীকে খুনের কথা স্বীকার করেছেন ওই ব্যক্তি। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়নার পরমানন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা সুব্রত রায় পেশায় গাড়ি চালক। নিজস্ব দোতলা পাকাবাড়ি রয়েছে। বছর কুড়ি আগে স্থানীয় মগরা গ্রামের মেয়ে রীতার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল সুব্রতর। তাঁদের এক বিবাহিত মেয়ে ও স্কুল পড়ুয়া এক ছেলে রয়েছে। সুব্রতর বাবা রণজিৎ রায়ের জেনারেটর ও পাম্পমেশিন মেরামতির দোকান রয়েছে বলাইপন্ডা বাজারে। সেখানেই দাদু-ঠাকুমার সঙ্গে থাকে সুব্রতর ছেলে। সুব্রত ও তাঁর স্ত্রী রীতাদেবী সপ্তাহ তিনেক আগে কাজের সূত্রে মুম্বইয়ে থাকা তাঁদের জামাই ও মেয়ের কাছে গিয়েছিলেন। রবিবার দুপুরে ময়নায় নিজের বাড়িতে ফিরেছিলেন ওই দম্পতি। সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বড়িশায় রথের মেলায় গিয়েছিলেন সুব্রত ও স্ত্রী রীতা। এরপর রাত সাড়ে ৮ টা নাগাদ স্ত্রী রীতাদেবীকে আগে বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে কিছুক্ষণ পর বাড়িতে ফিরেছিলেন সুব্রত। রাতে খাওয়া দাওয়ার পরে স্ত্রীর সঙ্গে অন্যের সম্পর্কের সন্দেহ নিয়ে সুব্রত ও রীতাদেবীর মধ্যে তীব্র বচসা বাধে। রাত সাড়ে ১১ টা সুব্রত ঘরের মধ্যে রীতাদেবীকে মারধর করে একটি চেয়ারের সাথে তাঁর শাড়ি দিয়ে হাত বেঁধে দেয়। এমনকী স্ত্রীর গায়ে মদ ঢেলে আগুন ধরানোর চেষ্টাও করে। এরপর সুব্রত একটি বটি নিয়ে এসে রীতাদেবীর গলার নলি কেটে খুন করে বলে অভিযোগ।

স্ত্রীকে খুনের পরে সুব্রত নিজেই ফোন করে তাঁর বাবা ও স্থানীয় এক ভিলেজ পুলিশকে স্ত্রীকে খুনের কথা জানায় ওই পুলিশ সুব্রতর বাড়িতে গিয়ে দেখেবাড়ির মধ্যে সুব্রত তখন উত্তেজিত অবস্থায় বাড়ির জিনিসপত্র ভাঙচুর করছে। স্থানীয় বাসিন্দারা মিলে বাড়ির ভিতর থেকে সুব্রতকে আটক করে। ভিলেজ পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে রাতেই ময়না থানার পুলিশ গিয়ে বাড়ির ভিতর থেকে ওই গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে, রীতাদেবীর দাদার অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের অভিযোগে সুব্রতকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। কিন্তু নিজের স্ত্রীকে এমন নৃশংসভাবে খুন করল কেন সুব্রত? পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুব্রত জানিয়েছে স্ত্রীর সঙ্গে অন্য কারও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে বলে সন্দেহ করত। রবিবার রাতে সুব্রত বাড়ি ফের সময় তাঁদের বাড়ির ভিতর থেকে এক ব্যক্তিকে বেরিয়ে যেতে দেখেন। ঘটনার জেরে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সুব্রত। রীতাদেবীর দাদা পিন্টু বেরা বলেন, ‘‘পারিবারিক বিষয় নিয়ে বোনের উপর অত্যাচার করত সুব্রত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tamluk House wife police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE