দাসপুরের দুধকোমড়ার পর এ বার গড়বেতার চন্দ্রকোনা রোডের মালিডাঙা। বেআইনি মদের ব্যবসা রুখতে এগিয়ে এলেন মহিলারাই। রবিবার গড়বেতার মালিডাঙা-সহ একাধিক এলাকায় দশটির বেশি চোলাইয়ের ঠেক ভেঙে দিলেন তাঁরা। আর এই অভিযানে নষ্ট হয়েছে কয়েক হাজার লিটার মদ।
এরপরই গোয়ালতোড়-চন্দ্রকোনা রোড সড়ক অবরোধ করেন ওই মহিলারা। সে অবরোধ তুলতে গিয়ে পুলিশকে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। ঘণ্টা খানেক অবরোধে সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রীরা। পরে পুলিশ প্রণব দাস নামে এক মদ বিক্রেতাকে গ্রেফতার করে ধারাবাহিক অভিযান চালানোর প্রতিশ্রুতি দেওয় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
চলতি বছরের গোড়াতেই দাসপুরের কাশিয়াড়া গ্রামে মদ্যপ স্বামীকে গাছে বেঁধে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল এক মহিলার বিরুদ্ধে। খুনের ঘটনাকে ছাপিয়ে গিয়েছিল ওই মহিলার দীর্ঘদিনের অসহায়তা। ঘটনার পর পরই কাশিয়াড়া গ্রাম সংলগ্ন দুধকোমড়া গ্রামের মহিলারা এলাকায় সমস্ত মদের ঠেক ভেঙে দিয়েছিলেন। মহিলাদের কড়া নজরদারিতে এখনও ওই এলাকায় প্রকাশ্যে মদ বিক্রির সাহস দেখাননি কেউ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, চন্দ্রকোনা রোডের মালিডাঙা, ঘাগরা, নয়াবসত-সহ সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকাতেও একের পর এক গজিয়ে উঠেছে চোলাইয়ের ঠেক। অভিযোগ, এই কারবার বন্ধের জন্য বার বার আর্জি জানিয়েও লাভ হয়নি। ক্রমশ বাড়ছে অবৈধ ব্যবসা। স্থানীয়রা বলছেন, পুলিশের প্রতি আস্থা হারিয়েই রবিবার সকাল থেকে মালিডাঙা, ঘাগরা, নয়াবসত প্রভৃতি এলাকার শতাধিক মহিলা ঠেক ভাঙার অভিযানে নামেন।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়েই বাড়ছে চোলাইয়ের রমরমা। চোখের উপরেই চলছে কারবার। আবগারি দফতর ও পুলিশের যৌথভাবে অভিযানেও ফল মেলে না। প্রতিদিন ধনে-প্রাণে সর্বহারা হচ্ছেন মানুষ।
মদ্যপ স্বামী বা ছেলেদের অত্যাচার সহ্য করতে না-পেরেই বছর চারেক আগে ঘাটালে তৈরি হয়েছিল প্রমিলা বাহিনী। একাধিক এলাকায় একের পর এক মদের দোকান, ঠেক ভেঙেছেন তাঁরা। জরিমানাও করেছেন, মদ বিক্রি করলেই একঘরে রাখার ফতোয়াও দিয়েছিলেন। তবু বন্ধ হয়নি কারবার। তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসন ও শাসক দলের স্থানীয় নেতাদের ইন্ধনেই এই রমরমা। কিছুদিন যেতে না যেতেই ফের শুরু হয়ে যায় ব্যবসা। যদিও মেদিনীপুর সদরের সিআই বিভাস মণ্ডল বলেন, “এলাকায় সমস্ত বেআইনি মদের দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি অবৈধ মদ বিক্রেতাদের ধরার জন্য তল্লাশি শুরু হয়েছে।”