Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Illegal Sand Mining

Illegal sand mininhg:করোনা আবহে বাড়ছে বালি চুরি

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রাম জেলায় বর্তমানে ৭৩টি সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত খাদান রয়েছে।

সাঁকরাইলে বালি বোঝাই লরিতে আগুন। সোমবার রাতে। 

সাঁকরাইলে বালি বোঝাই লরিতে আগুন। সোমবার রাতে।  নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২২ ১০:১৭
Share: Save:

করোনা ক্রমশ বাড়ছে ঝাড়গ্রামে। সংক্রমিত হয়েছেন জেলা প্রশাসনের একাধিক আধিকারিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে একদিন অন্তর সরকারি অফিস খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এই সুযোগেই অবৈধ খাদান থেকে রাতের অন্ধকারে ‘চুরি’ হচ্ছে বালি। শুধু রাতে নয়, দিনে-দুপুরেও রমরমিয়ে চলছে ‘ওভারলোড’ বালিবোঝাই লরি। প্রায় পুরো ঝাড়গ্রাম জেলা জুড়েই দেখা যাচ্ছে এই ছবি।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রাম জেলায় বর্তমানে ৭৩টি সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত খাদান রয়েছে। এরমধ্যে লালগড় ব্লকে ১৯টি, বেলিয়াবেড়া ব্লকে ৩০টি খাদান রয়েছে। ঝাড়গ্রাম জেলা অনুমোদন হওয়ার আগে ৬৮টি খাদানের অনুমোদন ছিল। জেলা হওয়ার পর আরও পাঁচটি নতুন খাদানের অনুমোদন দেওয়া হয়। তারপরেও ১২৮টি বালি খাদানকে অনুমোদন দেওয়ার জন্য চিহ্নিত করে জেলা প্রশাসন। এরমধ্যে ৪৭টি খাদানের ‘অ্যাকশন’ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ‘এনভায়রমেন্ট ক্লিয়ারেন্স’ (ইসি) না মেলায় সেই প্রক্রিয়াটি আটকে রয়েছে। অভিযোগ, বালি মাফিয়াদের অবশ্য তাতে কোনও অসুবিধা হচ্ছে না। রাতের অন্ধকারে অবৈধ খাদান থেকে নিয়মিত বালি তোলা হচ্ছে। সম্প্রতি করোনা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় তাঁদের আরও সুবিধা হয়েছে। সরকারি অফিসে এখন কর্মী কম। কমছে তল্লাশিও। এই সুযোগকে পুরোদমে কাজে লাগাচ্ছে বালি মাফিয়ারা।

‘ওভারলোড’ বালিবোঝাই লরি চলাচল বেড়ে যাওয়ায় নতুন রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করেছে পূর্ত দফতর। ওই দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘নতুন রাস্তা তৈরি হওয়ার সেই রাস্তায় ওভারলোড গাড়ি যাতায়াত করছে। পাশাপাশি বালিবোঝাই করে লরিগুলি দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকছে। বালির জল ঝরে রাস্তা নষ্ট হচ্ছে।’’

বালি ‘চুরি’ আটকাতে প্রশাসনের একাংশের অনীহার অভিযোগ নতুন নয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঝাড়গ্রাম জেলা এক আধিকারিকই বলছেন, ‘‘একটি মহলের কাছে ‘কমিশন’ সুকৌশলে পৌঁছে যাচ্ছে। রক্ষকই যদি ভক্ষক হয় তাহলে কি করে হবে?’’ তিনি জুড়ছেন, ‘‘জেলা প্রশাসন ও ভূমি দফতরের এত কর্মী নেই যে সারা রাত জেগে লরি তল্লাশি করবে। তাছাড়া সবাই একসঙ্গে কাজ না করলে বালি চুরি ও ওভারলোড লরি আটকানো সম্ভবও নয়।’’ জেলা প্রশাসনের আরেক সূত্র মনে করিয়ে দিয়েছে, বেআইনি এবং ওভারলোড বালি গাড়ি চলাচল বন্ধের জন্য ঝাড়গ্রাম জেলার বিভিন্ন জায়গায় সি সি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কারগিল মোড়, লালগড়ের বুড়াবাবার থান, নয়াগ্রামের জঙ্গলকন্যা সেতু, রোহিনী মোড়, গোপীবল্লভপুরের নয়াবসান মোড় ও বেলিয়াবেড়া ফেকো মোড় এই ছ’টি জায়গায় দু’টি করে মোট ১২টি সিসি ক্যামেরা লাগানোর জন্য প্রাথমিক ভাবে আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে তা এখনও হয়নি।

অভিযান যে একেবারে হচ্ছে না তা অবশ্য নয়। মঙ্গলবার লোধাশুলি এলাকায় দু’টি বালি বোঝাই ‘ওভারলোড’ লরি আটক করেছে প্রশাসন। ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক জয়সি দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘ওভারলোড ও অবৈধ ভাবে বালি নিয়ে যাওয়ার সময় গাড়ি অল্পস্বল্প ধরা পড়েছে। জরিমানাও করা হয়েছে। রাতে নিয়মিত অভিযানও চলছে।’’

2 Attachments

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Illegal Sand Mining
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE