শাসক তৃণমূলের হাতে তাঁদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বিপন্ন, এই অভিযোগে আজ, শুক্রবার হুল দিবসে ‘চাক্কা জ্যাম’-এর ডাক দিয়েছে সাঁওতালদের সর্বভারতীয় সংগঠন ‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’। রাজ্য ছাড়াও ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড ও অসমে রেল ও জাতীয় সড়ক অবরোধ করবেন আদিবাসীরা। ঝাড়গ্রামের শিলদায় সরকারি হুল দিবসের অনুষ্ঠান বয়কট করার ডাক দিয়েছে সংগঠনটি।
সংগঠনের মুখপাত্র রবিন টুডু বলেন, “শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হবে। আন্দোলন ভাঙার চেষ্টা হলে দরকারে প্রাণ দেব।” তিনি জানান, সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যে ৬টা পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর গ্রামীণের খেমাশুলিতে ঝাড়গ্রাম-খড়্গপুর রেললাইন ও ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক, বেলদার নেকুড়সিনিতে বেলদা-জলেশ্বর রেলপথ ও ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক, শালবনির ভাদুতলায় মেদিনীপুর-বাঁকুড়া রেলপথ ও ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক, বালিচকে খড়্গপুর-হাওড়া রেললাইন— এই ৪টি জায়গায় অবরোধ করা হবে। সংগঠনগুলির অভিযোগ, এক সময় জঙ্গলমহলে মাওবাদীদের হাতে খুন হন ১২৭ জন আদিবাসী। হুল উৎসবে সেই সব প্রাক্তন মাওবাদীদের দিয়েই শিলদার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করানোর তোড়জোড় হচ্ছে। এই জন্যই তা বয়কট করছেন আদিবাসীরা। তাঁদের দাবি, মহান সাঁওতাল বিদ্রোহের স্মরণে হুল দিবসকে রাজ্য সরকার নাচ-গানের উৎসব করে ফেলেছে। এ সব বরদাস্ত করা যাবে না। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে রবিনবাবু বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার আদিবাসীদের শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। গত ছ’বছরেও রাজ্যে সাঁওতালি ভাষায় অলচিকি লিপিতে সুষ্ঠু শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি।’’
এই আন্দোলনকে সমর্থন করছে সিপিএমের পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী অধিকার মঞ্চ, জঙ্গলমহল আদিবাসী কংগ্রেস, ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন), ঝাড়খণ্ড অনুশীলন পার্টিও।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “রেলের তরফে স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ওই সব এলাকায় রেলের সুরক্ষা বাহিনী মোতায়েন থাকবে।” রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ মন্ত্রী চূড়ামণি মাহাতো বলছেন, “আদিবাসীরা ঝাড়খণ্ডে জমি সংক্রান্ত আইন সংশোধনের বিরোধিতা করে আন্দোলন করছেন। এটা তাঁদের ন্যায্য দাবি। তবে হুল দিবসের সরকারি অনুষ্ঠান সম্পর্কে কিছু মানুষ বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy