ঘাটাল শহরে তখন হাতেগোনা পরিবারের বাস। বাড়ি বাড়ি পুজো করে সংসার চালাতেন গোবিন্দ চক্রবর্তী। সম্পত্তি অনেক থাকলেও দেখাশোনার লোক ছিল না। পরিবারের মঙ্গল কামনা ও বংশবৃদ্ধির লক্ষ্যেই কুল পুরোহিতের পরামর্শে বংশের তৃতীয় পুরুষ প্রেমচাঁদ চক্রবর্তী ১৭০৬ সালে শুরু করেন জগদ্ধাত্রী পুজো। সেই থেকেই চলে আসছে ঘাটাল শহরের কোন্নগরের চক্রবর্তী বাড়ির পুজো। ৩১০ বছরের পুরনো পুজোয় জৌলুস কমলেও ঐতিহ্য আজও অটুট।
পরিবারের সদস্যরা জানান, অষ্টধাতুর মূর্তিতে পুজো শুরু হয়। প্রথমে মাটির একটি ছোট আটচালা তৈরি করে পুজো হত। আজ সেই চালা আর নেই। বাড়ির সদস্যরা সকলে মিলে টাকা তুলে তৈরি করেছেন পাকা মণ্ডপ। বর্তমান সদস্য তাপস চক্রবর্তী, সঞ্জীব চক্রবর্তীরা বলছিলেন, “আশির দশকে দাদু সুরেন্দ্র চক্রবর্তী মারা যান। তখন কুল পুরোহিত ছিলেন চন্দ্রকোনার খলকপুরের বাসিন্দা হরিসাধন চক্রবর্তী। উনিই অষ্টধাতুর মূর্তিটি বাড়ি নিয়ে যান। সেই থেকে স্থায়ী মণ্ডপে ঘটেই মায়ের পুজো হয়।”
পুজোর সাতদিন আগে নিয়ম করে চন্দ্রকোনার খলকপুরে গিয়ে ওই অষ্টধাতুর মূর্তিতে পুজো দিয়ে আসার পর ঘাটালে ঘট পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়। চক্রবর্তী বাড়িতে তন্ত্রমতে পুজোয় কোনও বলি হয় না।
আগে পুজোর ক’দিন সন্ধেয় প্রসাদ খেতে অনেককে আমন্ত্রণ করা হত। ঢোল পিটিয়ে জানানো হত আমন্ত্রণ। আশির দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত চালু ছিল এই প্রথা। এখন আর সে সবের চল নেই। খাওয়া-দাওয়া ছাড়াও পুজোর দিন সন্ধেয় বসত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আসর। পরিবারের সদস্যরা নিজেরাই গান, বাজনা, নাটক করতেন। বাড়ির মহিলা সদস্যা মৌপ্রিয়া, চন্দনা, স্বপ্না চক্রবর্তীরা বলেন, “কর্মসূত্রে এখন পরিবারের অনেক সদস্য বাইরে থাকেন। পুজোর সময় সকলে বাড়ি আসেন। সকলে মিলে আনন্দ করা হয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy