কথা ছিল কাজ শেষ হবে ২০১৩ সালের ৩ নভেম্বর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ঝাড়গ্রামে গিয়ে নির্দেশ দিয়েছিলেন দ্রুত স্পোর্টস কমপ্লেক্সের কাজ শেষ করতে। কাজ শেষ বলে জানিয়েও দিয়েছিল পূর্ত দফতর। কিন্তু যৌথ সম্প্রতি ক্রীড়া ও পূর্ত দফতরের সমীক্ষার পরে সমীক্ষকরা মনে করছেন কাজ অনেকটাই বাকি। এ দিকে, ক’দিন বাদে ওখানেই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় যোগদানকারী তিরন্দাজদের প্রশিক্ষণ হওয়ার কথা। এই অবস্থায় চিন্তায় রয়েছেন রাজ্যের ক্রীড়া কর্তারা।
ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামের ঠিক পাশে এই স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরির জন্য রাজ্য সরকার ৫ কোটি ৪৩ লক্ষ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দ করে। ৬.২৭ একর জমির উপর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৩ সালের ১৯ জুন। তৈরি হয় তিরন্দাজি প্রশিক্ষণের মাঠ ও পরিকাঠামো। জঙ্গলমহলের আরও কিছু প্রকল্পের সঙ্গে গত বছর ১৪ জুলাই এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। কথা ছিল ২০১৩ সালের ৩ নভেম্বর কাজ পুরো শেষ হয়ে যাবে।
কিছু দিন আগে স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়া, ক্রীড়া দফতর, পূর্ত দফতরের আধিকারিকরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সের কাজ খতিয়ে দেখতে ঝাড়গ্রামে আসেন। রাহুল বন্দোপাধ্যায়-সহ তিরন্দাজির অভিজ্ঞ কিছু প্রশিক্ষক ছিলেন ওই দলে। সূত্রের খবর, পূর্ত দফতরের কাজে তাঁরা সন্তুষ্ট হতে পারেননি। কোথায়, আর কী কী করা দরকার, তাঁরা পূর্ত-ইঞ্জিনিয়ারদের জানান। গত জানুয়ারিতে এক বৈঠকে পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের দ্রুত বাকি কাজ শেষ করতে বলে ক্রীড়া দফতর। কিন্তু এখনও সেই সব কাজ হয়নি।
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্মীয়মাণ ওই স্পোর্টস কমপ্লেক্সে ইতিমধ্যে সেখানে পুরুষ ও মহিলা প্রতিযোগীদের থাকার জন্য দু’টি দ্বিতল ভবন তৈরি হয়েছে। প্রতিটিতে ৮টি করে, প্রতি ঘরে দু’জন করে থাকতে পারবেন। তিরন্দাজদের জন্য ছাউনি, কিছু শৌচাগার, ৩৪ হাজার গ্যালন জল আঁটে এ রকম ভূগর্ভস্থ দুটি জলাধার, ভিতরের রাস্তা, আলো, প্রায় ১৩০০ মিটার দীর্ঘ প্রাচীর এ সবও হয়েছে। এ সবে খরচ হয়েছে প্রায় ৪ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা।
কী কী কাজ এখনও বাকি?
পূর্ত দফতরের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক বলেন, “পর্যবেক্ষণের পরে ঠিক হয় ওখানে জাতীয় স্তরের প্রশিক্ষণকেন্দ্র তৈরি হবে। পর্যবেক্ষকরা কিছু কাজের মানোন্নয়ন এবং নির্দিষ্ট কিছু বাড়তি জিনিস যুক্ত করতে বলেছেন। আমাদের কাজ বাড়ি এবং পরিকাঠামো তৈরি করে দেওয়া। কিন্তু ওঁরা বলছেন, ভাল মানের টিভি, আধুনিক রান্নাঘর, আরামদায়ক খাট ও চেয়ার প্রভৃতির ব্যবস্থা করতে। নিকাশির কাজটাও করতে হবে আমাদের। এ সবের জন্য টাকা চাওয়া হয়েছে। তা এখনও পাওয়া যায়নি।”
ক্রীড়া দফতর সূত্রের খবর, বাড়তি কাজ ও মানোন্নয়নের জন্য ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার প্রস্তাব পূর্ত দফতর জেলাশাসকের মাধ্যমে পাঠিয়েছে। স্পোর্টস কমপ্লেক্সে দু’টি ভলিবল কোর্ট, জিমন্যাস্টিক কোর্ট প্রভৃতি ছাড়াও ‘সওনা বাথ’, স্টিম বাথের সুযোগ থাকবে। রাজ্যের ক্রীড়াসচিব রাজেশ পাণ্ডে বলেন, “জেলাস্তরে সম্ভাবনাময় প্রতিযোগী বাছাইয়ের পর ঝাড়গ্রামে রাহুল ও দোলা বন্দোপাধ্যায় প্রশিক্ষণ দেবেন। ওঁরা এখন কলকাতার বাইরে। ফিরে এলে সব খতিয়ে দেখা হবে।”