সৌমেন্দু অধিকারী।— ফাইল ছবি।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে দীর্ঘ ক্ষণ তাঁকে থানায় বসিয়ে রাখার অভিযোগে সরব হলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই তথা কাঁথি পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান সৌমেন্দু অধিকারী। সারদার নথি লোপাট মামলার তদন্তে সৌমেন্দুকে নোটিস পাঠিয়েছিল কাঁথি থানা। সেই মতোই বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা ১০ মিনিট নাগাদ থানায় হাজিরা দেন তিনি। এর পর বেলা ২টো ৪০ নাগাদ থানা থেকে বেরিয়ে সৌমেন্দুর অভিযোগ, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে তাঁকে অতিরিক্ত সময় থানায় বসিয়ে রাখা হয়েছে। বিষয়টি আদালতের নজরে আনবেন বলেও তিনি জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার থানা থেকে বেরিয়ে সৌমেন্দু বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ মতোই আমি তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করছি। কিন্তু পুলিশ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে আমাকে আড়াই ঘণ্টারও বেশি থানায় বসিয়ে রেখেছে। পুলিশ সুপার থেকে থানার আইসি— সকলেই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত। তাঁদের নির্দেশেই আমাকে থানায় বসিয়ে রাখা হল। বিষয়টি আমি আদালতের নজরে আনব।’’ সৌমেন্দুর অভিযোগ, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে তাঁকে মামলায় জড়ানোর চেষ্টা চলেছে। আবার নোটিস দেওয়া হলে আসবেন তিনি।
সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেনের উদ্যোগে কাঁথি পুরসভা এলাকায় একটি জমিতে আবাসন গড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। সেই মর্মে পুরসভা থেকে অর্থের বিনিময়ে হস্তান্তরও হয়েছিল জমি। পরবর্তী কালে সারদাকর্তা জেলে যাওয়ার পর সেই জমি ঘিরে বিতর্ক দানা বাঁধে। কোন শর্তে সারদাকর্তাকে জমি দেওয়া হয়েছিল, তা নিয়ে জলঘোলা হয়। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর সৌমেন্দুর বিরুদ্ধে সারদা জমি হস্তান্তর সংক্রান্ত ফাইল লোপাট করে দেওয়ার অভিযোগ দায়ের হয় কাঁথি থানায়।
সেই সারদা নথি লোপাট সংক্রান্ত মামলার তদন্তে এই নিয়ে তৃতীয় বার কাঁথি থানায় ডেকে পাঠানো হল সৌমেন্দুকে। তার আগে ত্রিপল দুর্নীতি মামলা, গ্রিন সিটি প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগেও তাঁকে কাঁথি থানায় একাধিক বার তলব করা হয়েছে। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদের নামে সৌমেন্দুকে থানায় দিনভর বসিয়ে রাখা হয়— এই অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সৌমেন্দু। আদালত সৌমেন্দুকে তদন্তে সহযোগিতার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি তাঁকে ২ ঘণ্টার বেশি থানায় বসিয়ে রাখা যাবে না বলেও নির্দেশও দিয়েছিল।
সৌমেন্দুর আইনজীবি অনির্বাণ চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘যে সময় সারদার সঙ্গে জমির চুক্তি হয়েছিল, সেই সময় সৌমেন্দু চেয়ারম্যান ছিলেন না। তিনি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পরেও আরও দু’জন পুরসভার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সামলেছেন। অথচ ফাইল লোপাট মামলায় কেবল মাত্র সৌমেন্দুকেই ডাকা হচ্ছে। এই ঘটনায় অন্য দুই চেয়ারম্যানকে কখনওই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়নি। এ ভাবে শুধু সৌমেন্দুকে কেন বার বার ডেকে পাঠানো হচ্ছে, তা স্পষ্ট নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy