Advertisement
E-Paper

পুজো মিটতেই হতশ্রী রেলশহর

সাফাইকর্মীর দেখা নেই। যত্রতত্র ছড়িয়ে জঞ্জাল। দুর্গন্ধে নাকে রুমাল চাপা দিয়ে চলতে হচ্ছে পথ। পুজো শেষে এটাই খড়্গপুর শহরের ছবি। মণ্ডপ দেখার লাইনে দাঁড়িয়ে পরিত্রাণ নেই। কারণ সেই জমে থাকা আবর্জনা।

দেবমাল্য বাগচী

শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৬ ০০:৩৯
জঞ্জালের স্তূপের দুর্গন্ধে পথ চলাই দায়। খড়্গপুরের ইন্দায়। — নিজস্ব চিত্র।

জঞ্জালের স্তূপের দুর্গন্ধে পথ চলাই দায়। খড়্গপুরের ইন্দায়। — নিজস্ব চিত্র।

সাফাইকর্মীর দেখা নেই। যত্রতত্র ছড়িয়ে জঞ্জাল। দুর্গন্ধে নাকে রুমাল চাপা দিয়ে চলতে হচ্ছে পথ। পুজো শেষে এটাই খড়্গপুর শহরের ছবি।

মণ্ডপ দেখার লাইনে দাঁড়িয়ে পরিত্রাণ নেই। কারণ সেই জমে থাকা আবর্জনা। থিমে সিনেমার বিবর্তনের ছবি ফুটিয়ে তুলে দর্শকদের নজর কেড়েছে খড়্গপুরের ইন্দার ইঙ্গিত পুজো কমিটি। যদিও মণ্ডপের সামনে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা কার্যত অসম্ভব। কারণ, ইঙ্গিত ক্লাবের সামনেই জমে আবর্জনার স্তুপ। আর তা থেকেই ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ।

দর্শনার্থীদের অসুবিধা হচ্ছে জেনেও আবর্জনা সরাতে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেন? পুজো কমিটির কর্মকর্তা তথা স্থানীয় ব্যবসায়ী রণজিৎ জানার কথায়, “সারা বছরের এই একই সমস্যা। তিনটি ওয়ার্ডের আবর্জনা এখানে জমা হয়। আর দিনে একবার গাড়ি এসে আবর্জনা নিয়ে যায়। পুজোর সময়ে আবর্জনার পরিমাণ বাড়লেও গাড়ি এসেছে একবার করেই। ফলে এই দুর্দশা।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘বছর দু’য়েক আগে পুরসভাকে ব্যক্তিগতভাবে এই ভ্যাট সরিয়ে নিতে বললেও কাজ হয়নি।”

শুধু ইন্দা নয়, পুজোর ক’দিনে শহরের তালবাগিচা, প্রেমবাজার, সুভাষপল্লি, মালঞ্চ, ঝাপেটাপুর রোড এলাকার দশাও কমবেশি একই। পুজোয় বাইরে থেকেও বহু লোক শহরে এসেছেন। যত্রতত্র বসেছে দোকান। ফুডস্টল ছাড়াও অস্থায়ী দোকানও ছিল অনেক। ফলে সাধারণ দিনের থেকে আবর্জনা তৈরি হয়েছে বেশি। যদিও পুরসভার সাফাইকর্মীদের তৎপরতা চোখে পড়েনি বলে অভিযোগ।

তালবাগিচার বাসিন্দা রেলকর্মী সঞ্জীবঘোষ দস্তিদার বলেন, “আমাদের এলাকায় প্রতিটি পুজো মণ্ডপের সামনে দোকানপাট থাকায় চারিদিকে আবর্জনা ছড়িয়ে রয়েছে। পুজোর চারদিন সে ভাবে সাফাইকর্মীদের দেখতে পাইনি। এই আবর্জনা কবে পরিষ্কার হবে জানিনা। পুরসভা দ্রুত পদক্ষেপ না করলে দূষণে টেকা দায় হয়ে উঠবে।”

আগে রেল এলাকার আয়মায় পুরো শহরের আবর্জনা ফেলা হত। যদিও সম্প্রতি নোটিস দিয়ে আবর্জনা ফেলায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন রেল কর্তৃপক্ষ। গোপালীর কাছে রাজ্য সরকারের দেওয়া জমিতে আবর্জনা ফেলতে গিয়েও স্থানীয়দের একাংশের বাধার মুখে পড়ে পুরসভা। ফলে শহরের এত বিপুল আবর্জনা কোথায় ফেলা হবে, তা ঠিক করতে গিয়ে মাথায় হাত পুরসভার। শহরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, শহরকে আবর্জনা মুক্ত রাখতে যতটা তৎপর থাকা উচিত ছিল পুরসভার, তা হয়নি। ফলে পরিস্থিতি ক্রমে খারাপ হয়েছে। যদিও পুরসভার দাবি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কন্ট্রোল রুম থেকে ‘স্যানিটারি ইন্সপেক্টর’ সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেছেন। তারপরেও কেন এমন হল, তার সদুত্তর অবশ্য নেই কারও কাছে।

খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “উৎসবের সময় স্বাভাবিক ভাবেই আবর্জনা বেশি জমেছে। সমস্যা মোকাবিলায় কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছিল। তবে একবার একটি এলাকা পরিষ্কারের পরেই ফের জঞ্জাল জমায় সমস্যা দেখা দিয়েছে।’’ শহরকে আবর্জনা মুক্ত করার আশ্বাস দিচ্ছেন পুরপ্রধান। তিনি বলেন, ‘‘শহরকে আবর্জনামুক্ত করব। এমনকী রেল এলাকার আবর্জনা পরিষ্কার করার কাজও শুরু করেছি। সমস্ত পুকুরের ঘাটও পরিষ্কার করা হবে।” আপাতত সমস্ত আবর্জনা আয়মা এলাকায় ফেলা হবে বলেই জানিয়েছেন পুরপ্রধান।

garbage
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy