জেলার বহু জমিতে এখনও ধান রোয়ার কাজ শুরুই হয়নি। সব থেকে খারাপ পরিস্থিতি খড়্গপুর মহকুমায়। কৃষি দফতরের এক সূত্রে খবর, মহকুমার প্রায় ৫০ শতাংশ জমিতে এখনও আমনের চারা রোয়া হয়নি। অন্য বছর এই সময় খেতে জল প্রায় দাঁড়িয়ে থাকত। বেশির ভাগ জমিতে রোয়ার কাজও শেষ হয়ে যেত। এ বার ছবিটা অন্য। কৃষি দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর তথা জেলার কৃষি আধিকারিক প্রভাত বসুও মানছেন, “এ বার জেলায় বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে। আশা করছি, এ মাসের শেষ সময় পর্যন্ত রোয়ার কাজ বেশ কিছুটা এগিয়ে যাবে।” জেলার কৃষি কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষের বক্তব্য, “আশা করি, নিম্মচাপের বৃষ্টিতে ঘাটতি মিটে যাবে। চাষের কাজ ভাল ভাবেই হবে।”
নিম্নচাপের বৃষ্টিতে ঘাটতি মিটবে কি না তা নিয়েও সংশয়ে রয়েছেন চাষিরা। শালবনির অজয় মাহাতো বলেন, “মরসুমের শুরুতেই বৃষ্টির অভাবে চাষের ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। সব জমিতে সেচের সুবিধে নেই। জমিতে জল না থাকলে রোয়া অসম্ভব।’’ গড়বেতার কার্তিক দাসের কথায়, “এক নিম্নচাপে ঘাটতি মিটবে বলে মনে হয় না। টানা ভারী বৃষ্টি হলেই ঘাটতি মিটতে পারে।”
জেলায় চাষযোগ্য জমির পরিমাণ প্রায় ৫ লক্ষ ৯৫ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে প্রায় ৫ লক্ষ ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে খরিফ চাষ হয়। সব জমি সেচ সেবিতও নয়। সেচের সুবিধে রয়েছে প্রায় ৩ লক্ষ ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে। ফলে, বৃষ্টি কম হলে চাষে সঙ্কট বাড়ে। পরিসংখ্যানও বলছে, এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরে বৃষ্টির পরিমাণ বেশ কম। গত ৩০ বছরের গড় বলছে, জেলায় জুলাই মাসে বৃষ্টির পরিমান ৩১৩.৮ মিলিমিটার। গত ১০ বছরের গড় বলছে, জেলায় জুলাই মাসে বৃষ্টির পরিমাণ ৩৩৭.১ মিলিমিটার। সেখানে এ বার জুলাইয়ে বৃষ্টি হয়েছে ২৭২.৭ মিলিমিটার। এই সময় বৃষ্টি কম হওয়া মানে আমন চাষে সঙ্কট। এ বারও সেটাই হয়েছে।