Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Brigade Rally of CPIM

শুভেন্দুর জেলা থেকে মানুষের ঢল ব্রিগেডে

ময়না এলাকার বিজেপি বিধায়ক অশোক দিন্ডা। ময়না থেকেও পাঁচটি বাস এবং ২ টি ট্রেকারে চেপে ব্রিগেডে সমাবেশে গিয়েছিলন এলাকার বাম কর্মী-সমর্থকেরা।

শুভেন্দু আধিকারী।

শুভেন্দু আধিকারী।

নিজস্ব প্রতিবেদন
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:১০
Share: Save:

২০২১ সালের পর ২০২৪। প্রায় তিন বছর পর বামেদের ব্রিগেড সমাবেশ ছিল রবিবার। দলের যুব সংগঠনের ডাকে এই সমাবেশে শুভেন্দু অধিকারীর জেলা পূর্ব মেদিনীপুর থেকে বহু দলীয় কর্মী-সমর্থক বাস, ট্রেকার ও ট্রেনে চেপে গিয়েছিলেন।

যে শুভেন্দু অধিকারীর জেলায় তৃণমূল ও বিজেপির সাংগঠনিক শক্তির লড়াই চলছে এবং যেখানে বামেরা সাংগঠনিক শক্তির নিরিখে অত্যন্ত নিষ্প্রভ ছিল, সেখান থেকে বামেদের ব্রিগেড সমাবেশে এত মানুষের যোগদান ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে। তৃণমূল দাবি করেছে, ব্রিগেড ভরাতে বামেদের সাহায্য করেছে বিজেপি। রাম-বাম মিলেমিশে গিয়েছে। সেই দাবি নস্যাৎ করেছে বাম ও বিজেপি। বামেদের আবার দাবি, অনেকে সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁরা ফের দলে ফিরছেন। সেই কারণে বিজেপি-প্রধান এলাকা থেকে ব্রিগেডে বেশি মানুষের ভিড় হয়েছে।

দলীয় সূত্রের খবর, শুভেন্দুর নিজের বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রাম থেকেই রবিবার ১৪ টি বাস গিয়েছিল ব্রিগেডে। নন্দীগ্রাম থেকে বহু মানুষ ব্রিগেডমুখী হয়েছেন বলে দাবি সিপিএম নেতৃত্বের। নন্দীগ্রামের পাশের খেজুরি বিধানসভা এলাকাতেও বিজেপির বিধায়ক রয়েছেন। খেজুরি এলাকা থেকে ১৩ টি বাস ও কিছু ছোট গাড়িতে বাম কর্মী-সমর্থকেরা ব্রিগেডে গিয়েছিলেন।

ময়না এলাকার বিজেপি বিধায়ক অশোক দিন্ডা। ময়না থেকেও পাঁচটি বাস এবং ২ টি ট্রেকারে চেপে ব্রিগেডে সমাবেশে গিয়েছিলন এলাকার বাম কর্মী-সমর্থকেরা। চণ্ডীপুর ব্লক থেকে ১৪ টি বাস, ৬ টি ট্রেকারে চেপে গিয়েছিলেন বাম কর্মী-সমর্থক। কাঁথি-৩ নম্বর ব্লক থেকে ১১ টি বাস ও কিছু ছোটগাড়িতে কর্মী-সমর্থকেরা ব্রিগেড যান। কাঁথি শহর, কাঁথি-১, দেশপ্রাণ ব্লক মিলিয়ে ১৬ টি বাস গিয়েছিল বলে সিপিএম যুব নেতৃত্বের দাবি । হলদিয়া বিধানসভা এলাকাতেও বিজেপির বিধায়ক রয়েছেন। সেই হলদিয়া থেকে ছাত্র, যুব ও শিল্পাঞ্চলের শ্রমিক মিলিয়ে প্রায় ৫ হাজার মানুষ সমাবেশে গিয়েছেন বলে সিপিএম নেতৃত্বের দাবি।

ঘটনাচক্রে জেলার যে সব এলাকায় বিজেপির প্রভাব বেশি সে সব এলাকা থেকেই বামেদের ব্রিগেড সমাবেশে বেশি মানুষের যাওয়ার প্রবণতাদেখা গিয়েছে। ডিওয়াইএফআই’এর জেলা সম্পাদক ইব্রাহিম আলির দাবি, ‘‘বিজেপিতে যাওয়া একাংশ কর্মী-সমর্থক বামফ্রন্টে ফিরে এসেছেন। বিজেপি-তৃণমূলে গোপন বোঝাপাড়া রয়েছে, তা তাঁরা বুঝতে পেরেছেন। তাঁদের অনেকে ফিরে এসেছেন।’’ আবার তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অসীত বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ’’বিজেপির দেওয়া বাসে চেপে অনেকে ব্রিগেড সমাবেশে গিয়েছেন। এর মধ্যে বিজেপির লোকজনও ছিল। সমাবেশে যাঁরা গিয়েছেন তাঁদের ১০ শতাংশও বামেদের ভোট দেবে না।’’

অভিযোগ উড়িয়ে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক মেঘনাদ পাল বলেন, ’’সিপিএম যে যুব নেত্রীকে সামনে রেখে ব্রিগেড সমাবেশ করেছে তিনি গত ২০২১ বিধানসভার ভোটে নন্দীগ্রামে প্রার্থী হয়ে খুবই সামান্য ভোট পেয়েছিলেন। নন্দীগ্রামে বিজেপি’র জনসমর্থন অটুট রয়েছে। বিজেপি ছেড়ে কোথাও কেউ সিপিএমে যায়নি। বরং তৃণমূলের লোকজনই সিপিএমে গিয়েছেন।’’

এ দিন নন্দীগ্রাম, খেজুরি, চণ্ডীপুর, তমলুক, ময়না, নন্দকুমার, মহিষাদল, ভগবানপুর, কাঁথি ও এগরা এলাকা থেকে অধিকাংশ কর্মী-সমর্থক বাস, ট্রেকারে চেপে ব্রিগেডে গিয়েছেন। রামনগর, হলদিয়া, পাঁশকুড়া ও কোলাঘাট এলাকার কর্মী-সমর্থকদের বেশিরভাগ ট্রেনে চেপে গিয়েছিলেন।

জেলা থেকে সব মিলিয়ে ২২৩ টি বাস, ৯ টি ট্রেকার ও বহু ছোট গাড়িতে ব্রিগেডে গিয়েছিলেন বাম কর্মী-সমর্থকেরা। ডিওয়াইএফআইএর পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক তথা প্রাক্তন বিধায়ক ইব্রাহিম আলি বলেন,’’আমাদের জেলা থেকে ১৮ -১৯ হাজার কর্মী-সমর্থক ব্রিগেডে যাবেন বলে আশা করেছিলাম। কিন্তু আশাতীত ভাবে প্রায় ২৫ হাজার কর্মী-সমর্থক ব্রিগেডে গিয়েছিলেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Suvendu Adhikari midnapore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE